ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গাজীপুর সিটি নির্বাচনে একযোগে কাজ করুন ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৬:০২, ২২ মে ২০১৮

গাজীপুর সিটি নির্বাচনে একযোগে কাজ করুন ॥ প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আসন্ন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, কোন অজুহাত নয়, খুলনার মতো গাজীপুরেও নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ঐক্যবদ্ধ থাকলে জয় সুনিশ্চিত। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অন্যান্য মন্ত্রীদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনাকালে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। বৈঠক শেষে একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে এসব তথ্য জানা গেছে। এছাড়া সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সচিবরা এখন থেকে ১৫ হাজারের স্থলে ৭৫ হাজার টাকা দামের মোবাইল ফোন পাবেন। এ সংক্রান্ত ‘সরকারী টেলিফোন, সেলুলার, ফ্যাক্স ও ইন্টারনেট নীতিমালা, ২০১৮’ খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁও কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন প্রসঙ্গে উঠলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেখানে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ ছিল বলেই জয় এসেছে। তিনটি জায়গায় ঝামেলা হয়েছিল। নির্বাচন কমিশন সে কেন্দ্রগুলো স্থগিত রেখেছে। কিন্তু বিএনপি তাদের সভাবসুলভ অভিযোগ। খুলনায় দুই-একটি কেন্দ্র ছাড়া শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। বিএনপিরা যে অভিযোগ করেছে তা সঠিক নয়। তা না হলে বিএনপি প্রার্থী এত ভোট পেল কিভাবে। খুলনায় খালেকের ইমেজ ভাল ছিল। নেতাকর্মীরাও ঐক্যবদ্ধ ছিল। এ কারণে খুলনার ফল আওয়ামী লীগের পক্ষে এসেছে। আগামী ২৬ জুন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এখানেও ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তিনি মন্ত্রীদের উদ্দেশে বলেন, সেখানে যেন কোন ঝামেলা না হয়। কোন অজুহাত শুনতে চাই না। সবাইকে মনে করতে হবে আমাদের প্রতীক নৌকা। এ ছাড়া জাতীয় পার্টিকে বিএনপির অত্যাচার নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরার আহ্বান জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৯১ সালে ক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপি জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের ওপর যে অত্যাচার নির্যাতন করেছে, তাদের নেতাকর্মীদের ধরে জেলে পুরেছে সেসব কথা তুলে ধরার জন্য জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সচিবরা এখন থেকে ১৫ হাজারের স্থলে ৭৫ হাজার টাকা দামের মোবাইল ফোন পাবেন। এ সংক্রান্ত ‘সরকারী টেলিফোন, সেলুলার, ফ্যাক্স ও ইন্টারনেট নীতিমালা, ২০১৮’ খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, এই নীতিমালা আগেও ছিল, ২০০৪ সালে এটা সমন্বিতভাবে করা হয়। সেটাই চলে আসছে। ২০১৭ সালে খসড়াটা আমাদের কাছে এসেছিল, আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মোটামুটি চূড়ান্ত করি। মন্ত্রিসভা এটাকে অনুমোদন দেয়। বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের বিচারপতিদের আগে (টেলিফোন নীতিমালার আওতায়) আনা হয়নি। এখন (বিচারপতিদের) সংযুক্ত করে পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা করার জন্য অনুশাসন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সুপ্রীমকোর্টের বিচারপতিদের টেলিফোনের কোন নীতিমালা নেই। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আরেকটা অনুশাসন এসেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যিনি চীফ অব প্রটোকল বা রাষ্ট্রাচার প্রধান থাকেন উনাকেও রোমিং সুবিধার মধ্যে যুক্ত করার জন্য। অনেকেই প্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে, এর মধ্যে উনাকেও যুক্ত করা। এছাড়া মোবাইল ফোন সেট ক্রয়ের প্রাধিকারপ্রাপ্তদের (পাওয়ার যোগ্য) জন্য টাকার বরাদ্দ বাড়িয়ে ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। ১৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। এটা অনেক আগের, তা বাড়ানো হয়নি। বর্তমান বাজার দরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এটাকে ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী সব ধরনের সচিব অর্থাৎ ভারপ্রাপ্ত সচিবরা মোবাইল ফোন সেট ক্রয়ের প্রাধিকারপ্রাপ্ত বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। নীতিমালায় আরেকটি পরিবর্তন আনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যুগ্ম-সচিব ও অতিরিক্ত সচিবদের মোবাইল ফোন বিল ৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৫০০ টাকা করা হয়েছে। যারা মোবাইল ফোন সেট ক্রয়ের প্রাধিকারপ্রাপ্ত তাদের বিলের কোন সীমাবদ্ধতা নেই জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, তাদের (মোবাইলের সিম) ব্যাসিক্যালি পোস্ট পেইড, যা বিল আসে তাই দেয়া হয়। হাউজিং এ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট আইন অনুমোদন ॥ ‘হাউজিং এ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট আইন, ২০১৮’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘হাউজিং এ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট একটি পুরনো প্রতিষ্ঠান। ১৯৭৭ সালে একটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি করা হয়। সামরিক সময়ের আইন হওয়ায় এটাকে প্রতিস্থাপনের জন্য নতুন আইন আনা হয়েছে। এখানে তেমন কোন বড় পরিবর্তন নেই। শুধু কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে একটু পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগের ইংরেজী আইনটিকে মূলত বাংলায় করা হয়েছে। ইমারতের নক্সা প্রণয়ন, নির্মাণ, মানববসতি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সমস্যার ওপর বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি অনুসন্ধান এবং গবেষণা কার্যক্রমই মূলত এই প্রতিষ্ঠানের কাজ। খসড়া আইনে ইনস্টিটিউট পরিচালনা পরিষদের কথা বলা হয়েছে জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী হবেন এর চেয়ারম্যান। ওই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী থাকলে তারা ভাইস চেয়ারম্যান হবেন। পূর্ত সচিব হবেন সদস্য। প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী না থাকলে সচিব ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এই কমিটিতে ২০ ক্যাটাগরির সদস্য থাকবেন। কমিটি বছরে কমপক্ষে দু’বার সভা করবেন। অর্ধেকের বেশি সদস্য উপস্থিত থাকলে কোরাম হবে। সিদ্ধান্ত হবে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে। খসড়া আইনানুযায়ী ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক হবেন নির্বাহী কমিটির সভাপতি জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এই কমিটি আগেও ছিল। তারা দৈনন্দিন কার্যক্রম দেখবে।
×