ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের কাছে মিয়ানমার সেনাদের মাইকিং, আতঙ্কে রোহিঙ্গারা

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ২০ মে ২০১৮

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের কাছে মিয়ানমার সেনাদের মাইকিং,  আতঙ্কে রোহিঙ্গারা

নিজস্ব সংবাদদাতা, বান্দরবান, ১৯ মে ॥ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের সেখান থেকে সরে যেতে আবারও মাইকিং শুরু করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তুমব্রু খালের পাহাড়ী ঢল থেকে বাঁচতে রোহিঙ্গারা নোম্যান্স ল্যান্ডে নতুন করে মাচান ঘর তৈরির শুরু করার পর কাটাতারের বেড়ার কাছে এসে এই মাইকিং করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। আর এর ফলে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে রোহিঙ্গাদের মধ্যে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল থেকে সীমান্তের কাটা তারের বেড়া ঘেঁষে সেনা সদস্যদের পাহারার মধ্যে কয়েক দফা মাইকিং করা হয়। মাইকিং এ অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সেখান থেকে সরে গিয়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিতে বলছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। অন্যদিকে সীমান্তে সেনা টহলও বাড়ানো হয়েছে। এদিকে হঠাৎ করে সেনা টহল ও মাইকিং নিয়ে জিরো লাইনে অবস্থারত রোহিঙ্গারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। প্রায় দু মাস বন্ধ থাকার পর মায়ানমার আবারও নোম্যান্স ল্যান্ডে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য মাইকিং শুরু করেছে। বর্তমানে প্রায় ৫ হাজার রোহিঙ্গা নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে অবস্থান করছে। তুমব্রু সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে থাকা রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ জানান, নোম্যান্স ল্যান্ড বার্মা (বর্তমান মিয়ানমার) সীমান্তের একটি অংশ। এখানে যারা বসবাস করছেন তারা অবৈধ বলে আজ সকাল থেকে বেশ কয়েকবার মাইকিং করেছে মিয়ানমার। এলাকাটি বর্ষার সময়ে তুমব্রু খালের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সেখানে গত এক সপ্তাহ থেকে নতুন করে মাচান ঘর তৈরির কাজ শুরু“ করেছে রোহিঙ্গারা। এসব ঘর তৈরিতে সহায়তা করছে ঢাকার কিছু সংগঠন ও বিজিবি। তবে নতুন করে ঘর তৈরির পরই মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের সরে যেতে মাইকিং করা শুরু“ করল। এদিকে বিজিবির পক্ষ থেকে টহল ব্যবস্থা ও জোরদার করা হয়। গত আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংঘটিত ব্যাপক সহিংসতায় ৭ লক্ষেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এর মধ্যে প্রায় ১৫ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুনধুম তুমব্রু সীমান্তে। অন্যান্য এলাকার রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে সরিয়ে নেয়া হলেও তুমব্রু সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে বসবাসকারী ৫ হাজারেও বেশি রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেয়া সম্ভব হয়নি। নোম্যান্স ল্যান্ড স্পর্শকাতর এলাকা হওয়ায় বর্তমানে এসব রোহিঙ্গা মানবেতর জীবন যাপন করছে। কক্সবাজার বিজিবির ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান জানান, মিয়ানমার সীমান্ত হতে মাইকিং করা হলেও বিজিবি সীমান্তে সতর্কাবস্থায় রয়েছে।
×