ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কোটা বাতিল হলেও জামায়াত-রাজাকার সন্তানরা যেন চাকরি না পায় ॥ শাজাহান খান

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ২০ মে ২০১৮

কোটা বাতিল হলেও জামায়াত-রাজাকার সন্তানরা যেন চাকরি না পায় ॥ শাজাহান খান

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ১৯ মে ॥ নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান এমপি বলেছেন, সরকারী চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল হলেও জামায়াত-রাজাকারদের সন্তানরা যেন সরকারী চাকরি না পায়। কেননা, স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকারদের সন্তান শুধু রাজাকারই হয়। তারা সরকারী চাকরি পেয়ে এদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখতে পারবে না। দেশ বিরোধীদের সন্তানরা সরকারী চাকরি পেলে আমাদের বহু কষ্ট আর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। এ কারণে মেধাবী হলেও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী জামায়াত-রাজাকার আর আল-শামসদের সন্তানরা যেন সরকারী চাকরিতে ঢুকতে না পারে এ জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। শনিবার বিকেলে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট শহীদ সরদার সাজাহান গার্লস স্কুল এ্যান্ড কলেজের নবনির্মিত চারতলা ভবন উদ্বোধনকালে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলন জামায়াতীদের এক গভীর ষড়যন্ত্র। যদি তা না হবে তা হলে কোটাবিরোধী মিছিলে কিভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে সেøাগান হয়, কিভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের কটূক্তি করা হয়? মূলত কোটাবিরোধী আন্দোলন জামায়াত-রাজাকার আর স্বাধীনতাবিরোধীদের এদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করার নীলনক্সা। যদি তাই না হবে তাহলে কিভাবে যে সমস্ত ভাষায় মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপারে ফেসবুকে দেয়া হয়েছে তার উদ্দেশ্য হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধূলিসাৎ করে দেয়া। তিনি বলেন, একটি সহজ সরল সেøাগানকে সামনে নিয়ে এসেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান আর যাই হোক তারা কোনদিন স্বাধীনতার বিরুদ্ধে চিন্তা করবে না। আর রাজাকারের সন্তান রাজাকারই হবে এবং রাজাকারের সন্তানের মাথায় স্বাধীনতা বিরোধী চিন্তা থাকবে। ভিয়েতনামের উদাহরণ টেনে শাজাহান খান বলেন, ভিয়েতনামে বিপ্লবের পরে সে দেশে একটি আইন হয়েছিল, যারা বিপ্লবের বিরোধিতা করেছে, যারা সেদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ছিল তাদের পরিবার তিন পুরুষ কোন সরকারি চাকরির সুযোগ-সুবিধা পাবে না। ভিয়েতনাম যদি করতে পারে আমরা কেন পারব না। আমরাও সে দাবি উত্থাপন করেছি। এ বিষয়ে আমরা ৬ দফার দাবি জানিয়েছি। শাজাহান খান বলেন, বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা ৬ দফা দিয়ে এদেশ স্বাধীন করেছেন। আমরা জাতির পিতার অর্জিত স্বাধীনতা সমুন্নত রাখা এবং স্বাধীনতাবিরোধীদের নির্মূল করার জন্য ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা বাতিল করে দিয়েছেন। আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধা তারা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত বিনাবাক্যে মেনে নিয়েছি। এখন আমাদের একটি দাবি তুলতে হবে, কোন জামায়াত-শিবির-রাজাকার, যারা স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী তাদের পরিবারের কেউ মেধাবী হলেও চাকরি পাবে না। ওরা যদি চাকরি পায় তাহলে আমাদের দেশের স্বাধীনতা নস্যাৎ করে দেবে। নৌমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যারা ধারণ করে, যারা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে বুকের মধ্যে লালন করে, যারা এদেশের জন্য যুদ্ধ করেছে, তাদের সন্তানদের জন্য কোটা নির্ধারণ করা হয়েছিল; কোন জামায়াত-রাজাকারের সন্তানদের জন্য নয়। বঙ্গবন্ধুর অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষায় ও এদেশে চিরতরে স্বাধীনতা বিরোধীদের নির্মূল করার জন্য আগামী নির্বাচনে আবারও নৌকায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় আনার জন্য সকলের কাছে আহ্বান জানান্। টেকেরহাট শহীদ সরদার সাজাহান গার্লস স্কুল এ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সৈয়দা রোকেয়া সাজাহানের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, রাজৈর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন ভুইয়া, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহানা নাসরিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ মোতালেব মিয়া, পৌর মেয়র শামীম নেওয়াজ ও রাজৈর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার সেকান্দার আলী শেখ।
×