ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কলাপাড়ায় কামলার হাট

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ১৯ মে ২০১৮

কলাপাড়ায় কামলার হাট

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ১৮ মে ॥ টিয়াখালীর আব্দুল বারেক। শ্রমজীবীর কাজ করেন। এখন বাড়ির এলাকায় কোন কাজ নেই। কয়েকদিন বেকার। পৌরশহরের এতিমখানা মাদ্রাসার সামনে অন্যান্যের সঙ্গে কামলা কিংবা বদলা শ্রমিকের ডাকের অপেক্ষায় বসে আছেন। একই দশা বৃদ্ধ রজব আলীর। নীলগঞ্জ থেকে এসেছেন। তিনিও কাজের অপেক্ষায়। এদেরকে আবার কেউ ছুডা শ্রমিকও বলে থাকেন। ১০/১২ জনের প্রতিদিনের অপেক্ষা। সকাল থেকে সর্বোচ্চ ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষা এদের। শ্রম বেচাকেনার এই ছোট্ট হাটে গড়ে ৭/৮ জন বিক্রি হয়। দৈনিক চার শ’ থেকে সর্বোচ্চ ছয় শ’ টাকা। তবে তরুণ-যুবদের বেশি কদর বলে জানালেন রজব আলী। বর্তমানে গ্রামে তেমন একটা কাম-কাজ নেই। তাই এসব শ্রমজীবী মানুষের হাট বসে। ছোট্ট একটি বাজারের ব্যাগের মধ্যে পোটলায় থাকে গামছাসহ কিছু কাপড়-চোপড়। শহরের মানুষ বাড়িঘরের কাজকর্ম। গাছপালা লাগানোসহ ছোট-খাটো গৃহস্থালি কাজের জন্য দরদাম করে নিয়ে যায়। অধিকাংশরা একদিনের চুক্তির কাজ পান বলে জানায় আগত শ্রমিকরা। তবে কেউ কেউ আবার ১০-১২ দিন পর্যন্ত কাজ পেয়ে যান। কোন কোন মালিক আবার দয়াবশত খেতেও দেন। স্থানীয়রা এদেরকে কামলা কিংবা বদলা শ্রমিক বলেন। এসব মানুষ জানান, আগামি বর্ষা মৌসুম পর্যন্ত তাদের কাজ-কাম নেই। নির্মাণসহ কাঠমিস্ত্রির কাজের শ্রমিকের সঙ্কট থাকলেও এসব শ্রমিকদের কাজ এখন নেই। এরা বেকার। সংসারের অন্যসব সদস্যদের পেটের যোগানের জন্য সকালেই কাজের জন্য এতিমখানা মহল্লায় হাফেজিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন সড়কে এসব শ্রমজীবী মানুষের বেচা-কেনার ছোট্ট হাট বসছে। পৌরশহরের এক বাসিন্দা জানান, বাড়ির বাউন্ডারির টিনের বেড়া ঠিক করার জন্য দুইজন শ্রমিক দরকার তাই এসেছেন এই হাটে। কেউ আবার অন্য কাজের জন্য লোক খুজছিলেন। ডেকোরেটরের লেবার হিসেবেও কাজ মেলে এখানে। কেউ আবার বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার করতে লেবার খুঁজতে আসেন শ্রম বিক্রির এই হাটে।
×