ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাননের লক্ষ্য বিভাজন উস্কে দিয়ে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১৯ মে ২০১৮

ব্যাননের লক্ষ্য বিভাজন উস্কে দিয়ে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাবেক সহযোগী স্টিভ ব্যানন মার্কিন সমাজের সাংস্কৃতিক বিভাজনকে উস্কে দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য ফেসবুক থেকে সংগ্রহ করা ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ব্যানন বন্ধ হয়ে যাওয়া লন্ডনভিত্তিক রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ এ্যানালিটিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। বুধবার মার্কিন সিনেটরদের কাছে দেয়া সাক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক কর্মী ক্রিস্টোফার উইলি এ অভিযোগ করেন। খবর ওয়েবসাইটের। জবানবন্দীতে উইলি বলেন, ‘সাংস্কৃতিক বিভাজনকে মার্কিন রাজনীতিতে স্থায়ী পরিবর্তন সৃষ্টির উপায় হিসেবে দেখতেন’ কেমব্রিজ এ্যানালিটিকার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ব্যানন। কেমব্রিজ এ্যানালিটিকা তাদের রাজনৈতিক গ্রাহকদের জন্য ভাড়া করা হ্যাকারদের দিয়ে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য তথ্য সংগ্রহ করত বলে বুধবার মার্কিন সিনেটের বিচার বিভাগীয় কমিটিকে জানান উইলি, যিনি কেমব্রিজ এ্যানালিটিকার অভিভাবক প্রতিষ্ঠান এসসিএলের হয়ে কাজ করতেন । কী করে নির্বাচনের কথা গোপন রেখে জাতিগত বিভাজন উস্কে দেয়ার কাজ করেছিল কেমব্রিজ এ্যানালিটিকা এবং ২০১৪ সালেই দুই বছর পরের নির্বাচনের সেøাগান পরীক্ষা করে দেখেছিল সে সম্বন্ধেও বিস্তারিত বলেন উইলি। উইলি বলেন, ‘ভোটারদের বিচ্ছিন্ন করে দেয়া নিয়ে শুরু করা আলোচনাই আমাকে (প্রতিষ্ঠানটি) ছেড়ে আসতে প্ররোচিত করেছিল, আমি এ বিষয়ক নথিগুলো দেখেছিলাম, আফ্রিকান-আমেরিকান ভোটারদের লক্ষ্য বানানোর বিষয়ে কথোপকথনও আমি মনে করতে পারি। ‘কোম্পানি জানত জনগণের মধ্যে কিছু অংশ ‘নর্দমার কীটগুলোকে সরিয়ে ফেল’ ধরনের বার্তা কিংবা সীমান্তের দেয়ালে ছবি অথবা ‘রাষ্ট্রের ভেতরে রাষ্ট্র’ সম্পর্কিত বিভ্রান্তিতে সাড়া দেবে। মূলধারার নির্বাচন কিংবা রাজনৈতিক নিবন্ধে এসব বিষয়ের উপস্থিতি জরুরী না হলেও ব্যানন এগুলো দিয়েই কার্যসিদ্ধি করতে উৎসাহী ছিলেন। তার এসব অভিযোগের বিষয়ে ব্যাননের আইনজীবী উইলিয়াম বারাকের কাছে ই-মেইলে মন্তব্য চাইলেও তাৎক্ষণিকভাবে এর কোন জবাব পাওয়া যায়নি। ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে কোটিপতি রিপাবলিকান দাতা রবার্ট মেরসের ও স্টিভ ব্যাননের দেড় কোটি ডলারের পৃষ্ঠপোষকতায় তিন বছর আগে যাত্রা শুরু করেছিল কেমব্রিজ এ্যানালিটিকা। পৌনে নয় কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য হাতানোর অভিযোগে তদন্তের মুখে গ্রাহক হারানো এবং পর্বতসমান আইনী খরচ সামলাতে হিমশিম খেতে থাকা প্রতিষ্ঠানটি চলতি মাসের শুরুতে কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে কাজ করে তথ্য বিশ্লেষণকারী এ পরামর্শক প্রতিষ্ঠানটি সফলতার স্বাক্ষর রাখে। কিন্তু একটি এ্যাপের মাধ্যমে তারা ফেসবুক গ্রাহকদের তথ্য হাতিয়ে তা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের কৌশল নির্ধারণে কাজে লাগিয়েছিল বলে সম্প্রতি ফাঁস হওয়া তথ্যে জানা গেছে। ফেসবুকের ভাষ্য অনুযায়ী, তাদের আট কোটি ৭০ লাখ গ্রাহকের তথ্য হাতিয়ে নিয়েছিল কেমব্রিজ এ্যানালিটিকা। তথ্য কেলেঙ্কারির এ ঘটনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইউরোপে বেশ কয়েকটি তদন্ত চলছে।
×