ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রমজান ও গ্রীষ্মে চট্টগ্রাম নগরীতে পানির সঙ্কট হবে না

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১৯ মে ২০১৮

রমজান ও গ্রীষ্মে চট্টগ্রাম  নগরীতে পানির  সঙ্কট হবে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রমজানে বন্দরনগরীর মানুষের জন্য সুখবর অপেক্ষা করছে। রমজানে এবার চট্টগ্রাম শহরের মানুষ পানির সঙ্কটে পড়বে না। রমজানের আগ থেকেই চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষ চাহিদা অনুযায়ী পানির সরবরাহ শতভাগ নিশ্চিত করতে সবরকম প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। পাশাপাশি জরুরী প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ ট্যাঙ্ক লরির মাধ্যমে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা রেখেছে। রমজানে পানির হালনাগাদ চাহিদা, উৎপাদন, সরবরাহ ব্যবস্থা মনিটর ও সার্বক্ষণিক মোবাইল টিম গঠন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সম্প্রতি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রেরিত চট্টগ্রাম নগরীতে পানির চাহিদা, সরবরাহ, উৎপাদনসহ চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি সর্ম্পকে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ এক প্রতিবেদনে এই আশাজনক তথ্য তুলে ধরেছেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, নগরীর ৪০ লাখ মানুষের জন্য সুপেয় পানির চাহিদা পূরণে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। নগরীতে স্বাভাবিক সময়ে পানির দৈনন্দিন চাহিদা থাকে সর্বোচ্চ ৩০ কোটি লিটার। তৎমধ্যে এখন পর্যন্ত দৈনিক পানি সরবরাহ দেয়া হচ্ছে প্রায় সমপরিমাণ। অবশ্য রমজান ও গ্রীষ্মে পানির চাহিদা সর্বোচ্চ ৩২ কোটি লিটারে পৌঁছায়। বর্তমান সময় পর্যন্ত ভূ-উপরিস্থ পানি দিয়ে নগরবাসীর চাহিদার ৮৫ ভাগ পানি সরবরাহ দেয়া হচ্ছে। বাদবাকি ১৫ ভাগ পানি গভীর নকল কূপের সাহার্য্যে ভূ-গর্ভ থেকে উত্তোলন করে চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম ওয়াসার কৌশলগত পরিকল্পনা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে ভূ-উপরিস্থ: পানি ব্যবহার বৃদ্ধি করে ভূ-গর্ভস্থ: পানির উৎপাদন, ব্যবহার, সরবরাহ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেয়া হবে। দেশী-বিদেশী সংস্থার বিশেষজ্ঞ কর্তৃক সমীক্ষায় প্রদত্ত সুপারিশ বাস্তবায়নে চট্টগ্রাম ওয়াসা ২০২১ সাল নাগাদ কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। তৎমধ্যে নগরে বসবাসকারী অধিবাসীকে সুপেয় ও নিরাপদ পানি সরবরাহ করার লক্ষ্যে পানি উৎপাদন ২১০ এমএলডি থেকে ৫৪০ এমএলডিতে উন্নীত করা। পুরাতন ট্রান্সমিশন ও বিতরণ পাইপলাইন পুনর্বাসন এবং নতুন পাইপলাইন প্রতিস্থাপন করা। রাজস্ব আয় বহির্ভূত পানির পরিমাণ কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখা। পানির বিল আদায়ের সময়সীমা ১৮০ দিন থেকে কমিয়ে ৯০ দিনে সীমাবদ্ধ রাখা। বিদ্যমান পানির দর পদ্ধতি পরিবর্তন করে ব্যবহারানুক্রমিক হারে পানির দর পদ্ধতি প্রবর্তন করা। পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা চালু করা। চট্টগ্রাম ওয়াসাকে পরিবেশ ও গ্রাহকবান্ধব সংস্থায় পরিণত করা। ওয়াসার ভিশন এবং মিশন হচ্ছে দক্ষতম পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষে উন্নীত করা। গুণগতমানসম্পন্ন পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন সেবা ন্যূনতম খরচে পরিবেশবান্ধব উপযুক্ত প্রযুক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করা। মূলত অতিমাত্রায় ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহার, উত্তোলনের কারণে ভূমি ধ্বস, ভূমিকম্প, আর্সেনিকসহ নানা রকম স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে নগরবাসীকে পরিত্রাণ দেয়া এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশিত ‘ভূ-গর্ভস্থ নয়, ভূ-উপরিস্থ পানি, বৃষ্টির পানি, পুকুর, জলাধারের পানির যথাযথ সংরক্ষণের উপর গুরুত্ব দিয়ে নেয়া হয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসার সব কটি উন্নয়ন প্রকল্প। ওয়াসার চলমান উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের কাজ সম্পন্ন হলে ২০২১ সাল নাগাদ নগরীর মানুষের শতভাগ পানির চাহিদা পূরণ হবে।
×