ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনায় আগ্রহী অস্ট্রিয়া

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ১৯ মে ২০১৮

বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনায় আগ্রহী অস্ট্রিয়া

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনায় আগ্রহী অস্ট্রিয়া। এ লক্ষ্যে দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে এয়ার সার্ভিস এগ্রিমেন্ট (এএসএ)। চুক্তিতে আকাশপথে যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি গুরুত্ব পাবে বাংলাদেশী ফ্রেইটার এয়ারলাইন্সের সরাসরি কার্গো ফ্লাইট পরিচালনা। বর্তমানে বাংলাদেশের সঙ্গে ৫২টি দেশের এএসএ চুক্তি রয়েছে। সে হিসেবে অস্ট্রিয়া হবে এএসএ সই হওয়া ৫৩তম দেশ। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) পরিচালক (ফ্লাইট সেফটি এ্যান্ড রেগুলেশন্স) উইং কমান্ডার চৌধুরী এম জিয়াউল কবির জানান-২০১৭ সালে সেফটি স্ট্যান্ডার্ড কপ্লায়েন্সে (ইফেকটিভ ইমপ্লিমেন্টেশন) এশিয়ার দেশগুলোর মধ্য বাংলাদেশের অবস্থান পৌঁছে গেছে নেতৃত্ব পর্যায়ে। এতে অনেক দেশই বাংলাদেশের সঙ্গে এএসএ হালনাগাদ করছে। অস্ট্রিয়ার সঙ্গে এর আগে আকাশপথে বাংলাদেশের কোন ধরনের চুক্তি ছিল না। এ কারণে দেশটির সঙ্গে এএসএ চুক্তিটি হবে একইবারে নতুন। দুই দেশের কয়েকটি এয়ারলাইন্সই সরাসরি কার্গো ফ্লাইট পরিচালনায় আগ্রহ দেখিয়েছে। প্রাথমিকভাবে চুক্তিতে সর্বনিম্ন ফ্রিকোয়েন্সি বরাদ্দ হতে পারে, যা পরবর্তীতে চাহিদার ভিত্তিতে বাড়ানো যেতে পারে। এ লক্ষ্যেই অস্ট্রিয়ার সঙ্গে এএসএ সই করতে ১৬ মে দেশটি সফরে গিয়েছে বাংলাদেশের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব রয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী একেএম শাহজাহান কামাল। অন্যদের মধ্যে রয়েছেন বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম নাইম হাসান, পরিচালক উইং কমান্ডার চৌধুরী এম জিয়াউল কবির, দেশীয় কার্গো এয়ারলাইন্সের প্রতিনিধি হিসেবে ট্রুু এভিয়েশন লিমিটেডের পরামর্শক আরেফিন ইসলাম। জানা গেছে, অস্ট্রিয়া ছাড়াও ঢাকার সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট চালাতে আগ্রহী ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনাই, মালদ্বীপ ও কানাডা। শিগগিরই এসব দেশের সঙ্গে সই হচ্ছে এএসএ। অন্যদিকে ফ্লাইট কার্যক্রম চলমান থাকলেও চাহিদা বাড়ায় নতুন করে আরও ফ্রিকোয়েন্সি বাড়াতে চায় সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ড, ভারত, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও চীন। যার ধারাবাহিকতায় সংশিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে এএসএ হালনাগাদ করতে বর্তমানে প্রস্তুতি নিচ্ছে বেবিচক। উল্লেখ্য, ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইকাও) সেফটি স্টান্ডার্ড কমপ্লায়েন্সের (ইফেকটিভ ইমপ্লিমেন্টেশন) দিক থেকে ২০১৭ সালে শতকরা ৭৫ দশমিক ৩৪ স্কোর অর্জন করে বাংলাদেশ। গত বছর বাংলাদেশে আইকাও ভেলিগেশন মিশন (আইসিভিএম) নামক একটি অডিট কার্যক্রমের ওপর ভিত্তি করে এ স্কোর অর্জন করে বেবিচক। এর আগে ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত আইসিভিএমের মাধ্যমে বাংলাদেশ আইকাও এর কালো তালিকা থেকে মুক্ত হয়েছিল। সে সময়ে বাংলাদেশে ৫০ দশমিক ৮ শতাংশ ইআই অর্জন করে। যার ধারাবাহিকতায় এভিয়েশন খাতের নিরাপত্তায় দ্রুত উন্নতির বিবেচনায় সম্প্রতি বেবিচককে ‘আইকাও কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট সার্টিফিকেট প্রদান করে। এ বিষয়ে শুক্রবার অস্ট্রিয়া থেকে দেশে ফিরে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল নাইম হাসান জনকণ্ঠকে বলেছেন, আমাদের দেশে এখন ইউরোপের কোন এয়ারলাইন্স ফ্লাইট অপারেট করে না। এ চুক্তির ফলে অন্তত একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে অষ্ট্রিয়া- তাদের সুযোগ সুবিধা মতো বাংলাদেশে ফ্লাইট অপারেট করতে পারে। সে দেশের মন্ত্রী পর্যায়েও এ নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। তারা যথেষ্ট আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এয়ার সার্ভিস এগ্রিমেন্টের পর এখন তারা মার্কেট স্ট্যাডি করবে। সপ্তাহে কয়টা ফ্লাইট কোন রুট দিয়ে অপারেট করা বাণিজ্যিকভাবে সফল হবে তার সম্ভাব্যতা যাচাই করার পরই এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানা যাবে। মোট কথা এই চুক্তির ফলে দু দেশের মধ্যে নতুন দিগন্তের দ্বার খুলল।
×