ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

উয়েফা ইউরোপা লীগ, পাত্তাই পেল না ফরাসী ক্লাব মার্শেই, এক বছরে দুটি ইউরোপিয়ান ট্রফি জয়ের হাতছানি মাদ্রিদের, অলিম্পিক মার্শেই ০-৩ এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ

গ্রিজম্যান জাদুতে চ্যাম্পিয়ন এ্যাটলেটিকো

প্রকাশিত: ০৭:২০, ১৮ মে ২০১৮

 গ্রিজম্যান জাদুতে চ্যাম্পিয়ন এ্যাটলেটিকো

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আর্জেন্টাইন কোচ দিয়াগো সিমিওনের নেতৃত্বে আরও একটি স্বর্ণালী সাফল্য পেয়েছে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। স্প্যানিশ ক্লাবটি আরেকবার জিতে নিয়েছে উয়েফা ইউরোপা লীগের ট্রফি। বুধবার রাতে ফ্রান্সের লিওঁতে অনুষ্ঠিত ফাইনাল মহারণে স্বাগতিক ফরাসী ক্লাব অলিম্পিক মার্শেইকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে এ্যাটলেটিকো। দলটির জয়ের নায়ক আবার ফরাসী ফরোয়ার্ড এ্যান্টোনিও গ্রিজম্যান। তারকা এই ফুটবলার করেন জোড়া গোল। এ্যাটলেটিকোর অপর গোলদাতা স্পেনের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার গাবি। এর মধ্য দিয়ে ইউরোপিয়ান আসরে স্পেনের ক্লাবের আধিপত্য বজায় থাকল। ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় সর্বশেষ নয় চ্যাম্পিয়নের আটটিই স্পেনের। আগামী সপ্তাহে রিয়াল মাদ্রিদ চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জিতলে এটা দশে নয় হয়ে যাবে। নয় মৌসুমে ইউরোপা লীগের তিনটি শিরোপা ঘরে তুলেছে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। এর মধ্যে দুটিই সিমিওনের হাত ধরে। ২০০৯-১০ ও ২০১১-১২ মৌসুমে আগের শিরোপা দুটি জিতেছিল মাদ্রিদের ক্লাবটি। ম্যাচের শুরুতে এ্যাটলেটিকোকে বেশ চেপে ধরেছিল মার্শেই। চতুর্থ মিনিটে এগিয়েও যেতে পারতো তারা। কিন্তু দিমিত্রি পায়েটের কাছ থেকে বল পেয়ে সেটা উড়িয়ে মেরে দেন ফরাসী ফরোয়ার্ড ভালেহে। চার মিনিট পর আদিল রামির হাফভলি অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে আরেক দফা বেঁচে যায় স্প্যানিশ ক্লাবটি। ম্যাচের ২১ মিনিটে সবচেয়ে বড় ভুলটা করে বসে মার্শেই। তাদের রক্ষণের ভুলে বল পেয়ে যান এ্যাটলেটিকোর অধিনায়ক গ্যাবি। তিনি পাস দেন ফরোয়ার্ড গ্রিজম্যানকে। ফরাসী ফরোয়ার্ড প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে একা পেয়ে বল জালে জড়াতে ভুল করেননি। বিরতির পর শুরুতেই ধাক্কা খায় মার্শেই। এবারও এ্যাটলেটিকোকে আনন্দের উপলক্ষ এনে দেন গ্রিজম্যান। কোকের পাস থেকে দুর্দান্তভাবে বল জালে জড়িয়ে দেন তিনি যা এই মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তার ২৯তম গোল। হ্যাটট্রিকের সুযোগও এসেছিল গ্রিজম্যানের। ম্যাচের ৫৩ মিনিটে তার শট গোলপোস্টে না লাগলে সেটা হয়েও যেত। এরপর দুই দলই আক্রমণ পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে গেছে। মার্শেই তো গোল শোধের জন্য মরিয়া হয়েই লড়েছে। দুই একটি সুযোগও পেয়েছে, কিন্তু ম্যাচে ফিরতে পারেনি। উল্টো ৮৯ মিনিটে এসে স্বাগতিকদের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন গাবি। ডি বক্সের মধ্যে কোকের পাস থেকে কোনাকুনি শটে বল জালে জড়িয়ে দেন এ্যাটলেটিকো অধিনায়ক। ম্যাচ শেষে এ্যাটলেটিকো কোচ দিয়াগো সিমিওনে জানিয়েছেন, মাদ্রিদেই সুখে আছেন গ্রিজম্যান। দীর্ঘদিন ধরেই গুঞ্জন, এ্যাটলেটিকো ছেড়ে দিতে পারেন গ্রিজম্যান। বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যমের দাবি, আক্রমণভাগের এই খেলোয়াড়কে খুব করেই চাচ্ছে লা লিগা চ্যাম্পিয়ন বার্সিলোনা। এ প্রসঙ্গে সিমিওনে বলেন, বছরের পর বছর ধরে গ্রিজম্যান কি করে যাচ্ছে সেটা আরেকবার সে বুঝিয়ে দিয়েছে। ম্যাচটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সে ছিল ফল নির্ধারক। আমরা আশা করছি, সে সুখী এবং আমাদের সঙ্গে থাকবে। আর্জেন্টাইন কোচ আরও বলেন, আমি খুশি। বছরের পর বছর আমরা খুবই পরিশ্রম করে যাচ্ছি। দুইবার চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে হারাসহ অনেকগুলো শিরোপার খুবই কাছে গিয়েছি আমরা। অবশ্য নিষেধাজ্ঞার কারণে ম্যাচটিতে ডাগআউটে ছিলেন না সিমিওনে। তবে তা শিষ্যদের ওপর কোন প্রভাব পড়েনি বলে জানিয়েছেন ৪৮ বছর বয়সী এই কোচ। বলেন, গ্যালারিতে বসে খেলা দেখাটা ছিল বাজে এক অভিজ্ঞতা, একা একা লাগছিল। আমরা ছয় বছর ধরে এক সঙ্গে কাজ করছি। খেলোয়াড়দের প্রতি আমার অগাধ বিশ্বাস। আমি বাড়িতে বা হোটেলে থাকলেও তারা একই রকম পারফর্ম করবে। এদিকে এক বছরে দুটি ইউরোপিয়ান ট্রফি জয়ের হাতছানি এখন মাদ্রিদের দুই ক্লাব এ্যাটলেটিকো ও রিয়ালের। কাজটা এখন করতে হবে রিয়ালকেই। ১৯৯৪ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা জিতেছিল ফ্যাবিও কাপেলোর এসি মিলান। একই বছর উয়েফা কাপ (বর্তমানে ইউরোপা লীগ) জিতে নেয় তাদেরই নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ইন্টার মিলান। ইউরোপিয়ান ক্লাব প্রতিযোগিতায় একমাত্র শহর হিসেবে একই বছরে দুটি শিরোপার মুখ দেখেছিল মিলান। মাদ্রিদের সামনে এবার মিলানের সেই কীর্তি ছুঁয়ে ফেলার সুযোগ। মিলানের সেই কীর্তির অর্ধেক পথ পাড়ি দিয়েছে মাদ্রিদ। ২৬ মে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে রিয়াল যদি লিভারপুলকে হারাতে পারে, তাহলেই ২৪ বছর আগে মিলানের সেই কীর্তি ছুঁয়ে ফেলবে মাদ্রিদ।
×