ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মাতৃত্বকালীন ভাতা ঘরে বসেই

প্রকাশিত: ০৭:০৫, ১৮ মে ২০১৮

মাতৃত্বকালীন ভাতা ঘরে বসেই

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গবর্নমেন্ট টু পার্সন (জিটুপি) পেমেন্ট পদ্ধতির মাধ্যমে ঘরে বসে মাতৃত্বকালীন ভাতা পাবেন একজন সেবাভোগী মা। পাইলট প্রকল্প হিসেবে নিয়ে দেশের সাতটি উপজেলায় এ কর্মসূচী চালু করেছে সরকার। এই পদ্ধতির আওতায় ভাতাভোগীরা অনলাইনের সহায়তায় তাদের ইচ্ছামতো ব্যাংকের এ্যাকাউন্টে ভাতার অর্থ নিতে পারবেন। এমনকি মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ ও রকেটের মাধ্যমে সেবাভোগীদের ভাতার এই টাকা দেয়া হবে। এতদিন এই টাকা পেতে দীর্ঘ সময়ের পাশাপাশি মায়েদের ভোগান্তির কোন শেষ ছিল না। অনেক সময় ন্যায্য টাকাও পাওয়া যেত না। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচীর আওতায় ভাতাভোগীর কাছে সরকারী কোষাগার থেকে সরাসরি ইলেক্ট্রনিক্স পদ্ধতিতে ভাতার অর্থ পাঠাতে জিটুপি পেমেন্ট পদ্ধতির উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ওই সময় তিনি বলেন, এক সময় ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠালে কয়েকদিন লাগত উপকারভোগীর কাছে পৌঁছাতে। তখন টাকা খোয়া যাওয়ারও সম্ভাবনা থাকত। আজ এখানে বসে এক টিপে মিনিটের মধ্যে টাকা চলে গেল সেবাভোগীর কাছে। তথ্যপ্রযুক্তিতে এটা একটি বিপ্লব। মাতৃত্বকালীন ভাতাভোগীর নিকট সরকারী কোষাগার হতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সরাসরি ভাতার অর্থ পরিশোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম প্রমুখ। এই কর্মসূচীর অধীনে প্রথামিকভাবে ৭টি উপজেলায় শুধু মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান করা হবে। উপজেলাগুলো হচ্ছে-সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ), শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ), সাভার (ঢাকা), টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা), কালিয়াকৈর (গাজীপুর) এবং ভৈরব (কিশোরগঞ্জ)। অর্থমন্ত্রী অনলাইনের মাধ্যমে এই সাতটি উপজেলার ৮ হাজার ৮১১ জন ভাতাভোগীকে জানুয়ারি থেকে মার্চ এই তিন মাসের ১৫০০ টাকা করে প্রদান করেন। তাৎক্ষণিকভাবে ভাতাভোগীরা তাদের ইচ্ছামতো ব্যাংক কিংবা বিকাশ ও রকেটে এ্যাকাউন্টে টাকা পেয়ে যান। এ সময় নিজ নিজ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেবাভোগীদের হাতে ভাতার টাকা তুলে দেন। মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতির মাধ্যমে সরকারী কোষাগার থেকে সুবিধাভোগীদের ভাতা তাদের ব্যাংক অথবা মোবাইল এ্যাকাউন্টে সরাসরি পাঠানো হবে। এতে ভাতাভোগীদের সময় যেমন বাঁচবে, তেমনি দুর্ভোগও কমবে। নতুন এ পদ্ধতিতে সুবিধাভোগীদের সম্পর্কে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত অর্থ বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের এমআইএস-এ সংরক্ষিত থাকবে। যার ভিত্তিতে তাদের ভাতা পাওয়ার যোগ্যতা যাচাই করে ভাতা পরিশোধ করা হবে। অর্থসচিব বলেন, বাংলাদেশ যে ডিজিটাল হয়েছে সেটার একটি সুফল মাতৃত্বকালীন ভাতাভোগীরা পাচ্ছেন। আমাদের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রার আরেকটি ধাপ এই সেবা। এখন ৭টি উপজেলায় এই সেবা চালু করলেও পর্যায়ক্রমে দেশের সব উপজেলার মায়েদের সেবার আওতায় আনা হবে।
×