ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন দাবি বিএনপির

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ১৮ মে ২০১৮

 নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন দাবি বিএনপির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবিলম্বে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের যৌথসভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি জানান। বর্তমান নির্বাচন কমিশন খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ব্যর্থ হয়েছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, যারা একটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পারে না, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পারে না, তারা সুষ্ঠুভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন কীভাবে পরিচালনা করবে? এই কমিশনের অধীনে দেশে আর কোন নির্বাচনই সুষ্ঠু হবে না। কারণ, এই নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনা করার জন্য যোগ্য নয়। তাই এই নির্বাচন কমিশন ভেঙ্গে দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। দেশে নতুন কায়দায়, নতুন রূপে ভোট ডাকাতি শুরু হয়েছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ভোটকেন্দ্র দখলের রাজনীতি শুরু হয়েছে। খুলনার নির্বাচন আপনারা দেখেছেন। সেই নির্বাচনে সরকার সেখানকার মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন যে সুষ্ঠু হতে পারে না খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে তা প্রমাণ হয়ে গেছে। কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে সুচিকিৎসা না দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানান। যৌথসভা ও সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, বিলকিস জাহান শিরিন, দলের কেন্দ্রীয় নেতা মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, আবদুস সালাম আজাদ, আসাদুল করীম, শামসুজ্জামান, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ প্রমুখ। জিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির ১০ দিনের কর্মসূচী ॥ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ১০ দিনের কর্মসূচী ঘোষণা করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের যৌথসভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচী ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ঘোষিত কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে ২৯ মে বেলা ১১টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভা, ৩০ মে ভোরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং নেতাকর্মীদের বুকে কালো ব্যাজ ধারণ। সকাল ১০টায় জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন ও মিলাদ মাহফিল, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, বইমেলা ও ঢাকা মহানগরের প্রতিটি থানায় দুস্থদের মধ্যে কাপড় ও ইফতার সামগ্রী বিতরণ। এ ছাড়া রয়েছে ছাত্রদলের উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবে জিয়াউর রহমানের কর্মময় জীবনের ওপর আলোকচিত্র প্রদর্শনী। এ ছাড়াও বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো ৩১ মে থেকে ৭ জুন পর্যন্ত আলোচনা সভার আয়োজন করবে। জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে সরকার সরে যেতে বাধ্য হবে- মঈন খান ॥ দেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে সরকার ক্ষমতা থেকে সরে যেতে বাধ্য হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ‘জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম-৭১ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিক মামলায় কারাগারে অন্যায়ভাবে আটক রাখা হয়েছে মন্তব্য করে ড. মঈন খান বলেন, সামনে গণতান্ত্রিক আন্দোলন হবে। সরকারকে বলব সমঝোতায় আসুন। জনগণের ভোটাধিকার পালনে আপনারা ব্যর্থ হয়েছেন। এজন্য আপনাদেরকে চরম মূল্য দিতে হবে। যা আপনারা চিন্তাও করতে পারছেন না। তাই সময় থাকতে দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিন। তিনি বলেন, খুলনায় নির্বাচন নয় প্রহসন হয়েছে। তবে নির্বাচনের নামে ধোঁকাবাজি বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছে মিডিয়া। মঈন খান বলেন, বর্তমান সরকার আফ্রিকার জঙ্গলের সরকার। এরা কোন সভ্য সরকার নয়।’ আমরা অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নয়, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এই সরকারকে উৎখাত করব। আমরা তাদেরকে দেখিয়ে দিব জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমেও ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাজিত করা যায়। তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতন্ত্র ছাড়া কোন জাতি সভ্য হতে পারে না। দেশের সকল বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ড. মঈন খান বলেন, গণতন্ত্রের জন্য উন্নয়ন ও উন্নয়নের জন্য গণতন্ত্র দরকার। তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আসুন সরকারকে আলাদা করে দিয়ে সব গণতান্ত্রিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন করি। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হলে এই সরকার নির্বাসনে যেতে বাধ্য হবে। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, বিএনপি নেতা আব্দুল মালেক রতন, আব্দুস সালাম আজাদ, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।
×