ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বহুমুখী ব্যবহারে পাটকে লাভজনক করতে হবে ॥ কৃষিমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ১৭ মে ২০১৮

বহুমুখী ব্যবহারে পাটকে লাভজনক করতে হবে ॥ কৃষিমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পাটপণ্য হতে হবে সস্তা আকর্ষণীয় ও সহজে ব্যবহারযোগ্য। কৃষি যন্ত্রপাতির মতো পাটের ব্যাগও স্লিম এ্যান্ড স্মার্ট হতে হবে। একই সঙ্গে নানা ধরনের ব্যবহারের মাধ্যমে পাট লাভজনক করতে হবে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। বুধবার সকালে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিজেআরআই) সম্মেলন কক্ষে বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, মাটি থেকে পাট গাছের জন্ম। মাটির সঙ্গেই আবার পাট মিশে যায়। এটি একটি পরিবেশবান্ধব একটি তন্তু বা আঁশ। পাট পণ্যকে হ্যান্ডি, স্মার্ট, চিপ ও পাটের নানা ধরনের ব্যবহারের মাধ্যমে লাভজনক করতে হবে। লাভজনক না হলে পাটকে বাণিজ্যিক ব্যবহার নিশ্চিত হবে না। পাট সম্পর্কে বলতে গিয়ে মন্ত্রী উল্লেখ করেন, আমাদের পাটের যে ভবিষ্যত, হয়তো সেটা অনেক উজ্জ্বল। কিন্তু এতদিনে যেটা হওয়া উচিত ছিল, সেটা কিন্তু হয়নি। সেটা মাথা রেখেই আমাদের কাজ করতে হবে। আগামী দিনে কী করব, পাট নিয়ে আমরা কতদূর যেতে পারব সবকিছু হিসেব করে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের শৈশব, কৈশোরে পাট নিয়ে বহু কথা বলেছি, আন্দোলন করেছি। ছাত্রাবস্থায় ও ছাত্রজীবনের পরেও এ পাট নিয়ে বহু কথা বলতে হয়েছে, সংগ্রাম করতে হয়েছে। কৃষিমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান নামের একটি দেশের ঐশ্বর্যটা গড়ে উঠেছিল বাংলাদেশের পাট দিয়েই। বিশেষ করে বর্তমানে পাকিস্থানের রাজধানী ইসলামাবাদের টাকার যোগান দিয়েছিল বাংলাদেশের পাট। কিন্তু পাটের সে উন্নয়নের ছোঁয়া আমরা পাইনি। তিনি আরও বলেন, পাটের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় রয়েছে কৃত্রিম তন্তু। বলা হয় সার শুধুমাত্র পাটের বস্তায় আনতে হবে। পাটের বস্তায় বিশেষ করে ইউরিয়া বা অন্যান্য সার শ্রমিকরা মাথা থেকে নামানোর সময় অনেক ক্ষেত্রে ফেটে যায়। পাটের বস্তা আর্দ্রতা শোষণ করে তাড়াতাড়ি। সে অবস্থায় সারের ওজন কমে যায়। এ সমস্যার সমাধান না করে, জোর করে পাটের বস্তা ব্যবহার করতে হবে এ সার্কুলার দিতে পারি। কিন্তু সেটা বাস্তবসম্মত হবে না। সে অবস্থায় পাটের ব্যাগ কৃত্রিম তন্তুর মতো না হলেও কাছাকাছি টিকতে পারে সে ধরনের অবস্থা সৃষ্টি করতে হবে। তা না হলে জোর করে সরকারী ক্রয়ে পাটের ব্যাগ ব্যবহার থেকে যাবে, কিন্তু বেসরকারী খাতে এর ব্যবহার হবে না। মতিয়া চৌধুরী আরও বলেন, পাটের ভবিষ্যত কিন্তু টেক্সটাইল। বিজেআরআই পাটের লিগনিনের পরিমাণ কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। এতে করে আমাদের টেক্সটাইল শিল্পের সুতা তৈরিতে পাট ব্যবহার করা যাবে। আমাদের কাগজ শিল্পের ক্ষেত্রে পাল্প আমদানি করতে হয়। আমরা যদি পাট থেকে এ পাল্প সরবরাহ করতে পারি। তাহলে আমাদের আমদানি নির্ভরতা কমে আসবে। অনুষ্ঠানে আগামী এক বছরের পরিকল্পনা তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক ড. মোঃ মনজুরুল আলম। তিনি জানান, চলতি বছরে পাটের জীবনকাল ১০০ দিনে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিজেআরআই)। অর্থাৎ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট চলতি বছরে আগাম কর্তনযোগ্য পাট উদ্ভাবনকে প্রধান্য দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে আমরা বেশ কয়েকটি লবণাক্ততা সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবন করেছি। চলতি বছরে অধিকতর লবণাক্ততা সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবনের লক্ষ্য রয়েছে। আমরা শুধু পরিকল্পনা করছি না, কাজগুলোও করছি। এই বছরেই আমরা রবি-১ নামের পাটের একটি জাত অবমুক্ত করব, যার উৎপাদন হবে প্রচলতি জাতের চেয়ে ২০ থেকে ২৫ ভাগ বেশি। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ্ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিজেআরআইয়ের পরিচালক (কারিগরি) ড. মোঃ আসাদুজ্জামান। এ সময় অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×