ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী

দুর্যোগ মোকাবেলায় সবচেয়ে জরুরী সমন্বয়

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১৭ মে ২০১৮

দুর্যোগ মোকাবেলায় সবচেয়ে জরুরী সমন্বয়

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় সবচেয়ে জরুরী বিষয় সমন্বয় করা। তবে সেটাই এখন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা হোসেন বলেছেন, ব্রিটিশের করা মানসিক স্বাস্থ্যনীতি যুগোপযোগী করতে হবে। তিনি বলেন, মানবিক সঙ্কট থেকে উত্তোরণে মানসিক সহায়তা ও ব্যবস্থাপনা মডেল তৈরি করা হচ্ছে। পাশাপাশি মানবিক কার্যক্রম পরিচালনায় বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন তিনি। বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে প্রতিবন্ধিতা ও দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক ২য় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে তারা এসব কথা তুলে ধরেন। সায়মা হোসেন বলেন, মানবিক স্বাস্থ্যনীতি ব্রিটিশের করা। এটিকে যুগোপযোগী করতে হবে। এই সময় তিনি রোহিঙ্গাদের মানিবক কার্যক্রম পরিচালনায় বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের মানবিক সমস্যা নিয়ে যারা কাজ করছেন, তারা অনেকেই মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের সঙ্গে কাজ করতে ভাষাগত সমস্যা রয়েছে। সেখানে অনেক এনজিও কাজ করছে। কিন্তু জাতি সংঘের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাদের কোন সমন্বয় নেই। এতেও নানাবিধ সমস্যা তৈরি হচ্ছে। সায়মা হোসেন বলেন দুর্যোগকালে স্বাভাবিকভাবেই মানুষ ভয়, আতঙ্ক ও দুর্দশাগ্রস্ত থাকে। সেখানে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর অবস্থা আরও খারাপ থাকে। সে অবস্থায় তাদের পরম মমতা প্রয়োজন। তিনি বলেন রোহিঙ্গা নাগরিকরা এক ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। তাদের এখন পরিপূর্ণ মানসিক সহায়তা প্রয়োজন। রোহিঙ্গা নাগরিকসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শরণার্থী নারী ও শিশুদের জন্য মানসিক সহায়তার জন্য কাজ করতে তিনি আহ্বান জানান। প্রতিবন্ধিতা ও দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক ২য় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে ‘প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য ও মানসিক সহায়তা’ বিষয়ক সেশনের সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর কন্যা একথা বলেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে সমাপনী বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ শাহ কামাল। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় সবচেয়ে জরুরী বিষয় সমন্বয় করা। তবে সেটাই এখন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি মনে করেন বিভিন্ন অংশীদারদের মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি করা গেলে প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের সহায় সম্পদ রক্ষা আরও সহজ হবে। বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রতিবন্ধিতা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ডিস-এ্যাবিলিটি ইনটেনসিভ ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট শীর্ষক এ সম্মেলন মঙ্গলবার শুরু হয়। যা চলবে ১৮ মে পর্যন্ত। অর্থমন্ত্রী বলেন, সচেতনায় দুর্যোগকালীন ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারে। আগাম প্রস্তুতির কারণে এখন ক্ষয়ক্ষতি কমেছে। ৭০ -৮০ দশকে দুর্যোগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হত। চলতি বাজেটে দুর্যোগ ও প্রতিবন্ধীদের গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এখন প্রয়োজন সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও বিভাগের মধ্যে সমন্বয় করা। অর্থসচিব মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ সেশনে বক্তব্য রাখেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ুম, ইতালির সংস্থা ডিজ-এ্যাবিলিটি এ্যান্ড হিউমিনিটারির জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা মাইকেল ফালাভিগনা। এ সময় বলা হয়, ডিজাস্টারে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সব চেয়ে বেকায়দায় পড়ে প্রতিবন্ধীরা। মাইকেল ফালাভিগনা বলেন, বিশ্বকে নতুন দুর্যোগের মুখোমুখি করছে মানুষ। রোহিঙ্গা সঙ্কট ও সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ মানুষকে নতুন ধরনের দুর্যোগের মুখোমুখি করেছে। যা বিশ্ব পরিবেশে বড় ধরনের নেতিবাচক আঘাত। এত বড় শরণার্থী সঙ্কটর লাখ লাখ মানুষকে দুর্যোগের মুখে ফেলেছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, দুর্যোগ যে কোন মানুষের জন্য স্বাভাবিকভাবেই কঠিন সময়। সেখানে প্রতিবন্ধী মানুষেরা দুর্যোগে আরও বিপদাপন্নতার মধ্যে থাকে। তাদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়াতে হবে। এ সময়ে সঠিক সময়ে দুর্যোগের সঠিক বার্তা সঠিক মানুষের মাধ্যমে গণমাধ্যমে সরবরাহের অনুরোধ করেন বক্তারা। এ সেশনে তথ্য অধিদফতরের প্রধান তথ্য অফিসার কামরুন নাহার, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক হারুন উর রশিদ বক্তব্য রাখেন।
×