ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কেএসআরএমের এমডিসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

অবহেলা ও গাফিলতির কারণে সাতকানিয়ায় প্রাণহানি

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১৬ মে ২০১৮

অবহেলা ও গাফিলতির কারণে সাতকানিয়ায় প্রাণহানি

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ সাতকানিয়ায় গত সোমবার ইফতার ও যাকাত সামগ্রী প্রদানকালে ১০ নারীর প্রাণহানির ঘটনাটিকে অবহেলা ও গাফিলতির জের হিসেবে দাবি করেছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার যুগপৎভাবে। মঙ্গলবার এই দুই কর্মকর্তা গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, এতবড় একটি আয়োজনের বিষয়ে ইফতার ও যাকাত সামগ্রী দাতা প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম (কবির স্টীল রি রোলিং মিলস) কর্তৃপক্ষ প্রশাসনকে আগেভাগে অবহিত করেনি। ইতোমধ্যে এ ঘটনাটি নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ সদস্যের যে তদন্ত কমিটি হয়েছে তাদের প্রাথমিক তথ্য মতে, ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা ও গাফিলতির প্রমাণ মিলেছে। এদিকে, এ ঘটনায় পুলিশ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। সাতকানিয়া থানা পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে গ্রেফতার করা হয়েছে ৪ জনকে। তারা হলেন মুরাদুল আলম মুরাদ, মোঃ ইদ্রিস, হাবিব আহমেদ শাহেদ ও আজগর আলী। তারা ইফতার ও যাকাত সামগ্রী বিতরণ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। নিহত ১০ জনের লাশ স্ব স্ব পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে পোস্টমর্টেম ছাড়াই হস্তান্তর ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, যেহেতু এ বিষয়ে হত্যা মামলা হয়েছে সেক্ষেত্রে পোস্টমর্টেম রিপোর্টের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কিন্তু পোস্টমর্টেম হয়নি। এ বিষয়ে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তদন্ত কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে রিপোর্টে পেশের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর আরও কিছু উঠে আসলে সে বিষয়েও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এদিকে, নিহতদের মধ্যে হাসিনা আক্তারের স্বামী মোঃ ইসলাম মঙ্গলবার দুপুরে সাতকানিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। যাতে আসামি করা হয়েছে কেআরএসএমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ শাহজাহান ও ব্যবস্থাপনায় জড়িতদের। নিহতদের অধিকাংশে মুখে ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সাতকানিয়া থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানান, দ-বিধির ৩০৪(ক) এবং ৩৪ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়। এতে ইফতার ও যাকাত সামগ্রী বিতরণ আয়োজনে অব্যবস্থাপনা এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মীদের গাফিলতির অভিযোগ আনা হয়। কেএসআরএম গ্রুপের সিইও মেহেরুল করিম মঙ্গলবার ঘটনা প্রসঙ্গে জানান, এ বিষয়ে যেহেতু জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত টিম কাজ করছে সেহেতু আমরাও ওই রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি। তবে এরমধ্যে আমাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যা যা করণীয় তা করে চলেছি। উল্লেখ্য, গত সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাতকানিয়া উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নের সাটিয়াডেঙ্গা গ্রামের কাদেরিয়া মঈনুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে ঘটে এই মর্মান্তিক ঘটনা।
×