ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কোটা আন্দোলনকারীর নেপথ্যে উস্কানি, আবার সহিংস তাণ্ডব চালানোর আশঙ্কা

প্রকাশিত: ০৭:৩৭, ১৫ মে ২০১৮

কোটা আন্দোলনকারীর নেপথ্যে উস্কানি, আবার সহিংস তাণ্ডব চালানোর আশঙ্কা

শংকর কুমার দে ॥ কোটাই থাকবে না-জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষণা দেয়ার পরও নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়া বিষয়টিকে শুধুমাত্র প্রজ্ঞাপন জারি করতে বিলম্ব হওয়ার অজুহাতে থেমে যাওয়া কোটা সংস্কারের আন্দোলনে নেপথ্যে উস্কানি দেয়া হচ্ছে বলে গোয়েন্দা সংস্থার দাবি। ভিসির বাসভবনে হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের ঘটনার মতোই কোটা আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার উদ্দেশে আবারও সহিংস সন্ত্রাসের তা-বলীলা চালানো হওয়ার আশঙ্কায় সতর্ক দৃষ্টি ও নজরদারি শুরু করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। কোটা সংস্কারের আন্দোলন ইস্যু সমাপ্তির পর আবার কোটার প্রজ্ঞাপন জারির বিলম্ব আন্দোলনের সার্বিক পরিস্থিতি সহিংস হয়ে জানমাল নিরাপত্তার হুমকি হয়ে যাতে না দাঁড়াতে পারে সেজন্য নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে সরকারের নীতিনির্ধারক মহল। বঙ্গবন্ধুর নামে স্লেøাগান দিয়ে আবার বঙ্গবন্ধুর কন্যার ঘোষণাকে অবিশ্বাস করে কোটা সংস্কারের আন্দোলনের মতো একটি অরাজনৈতিক ইস্যুকে রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত করার অভিনব কৌশলের পেছনে কোন অশুভ চক্র জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোটা আন্দোলন আবারও রাজপথে চলে আসার কারণে তদন্তকারী পুলিশের ব্যস্ততায় ভিসির বাসভবনে হামলা ও লুটপাটের ঘটনার মামলার তদন্তে ভাটা পড়েছে। ভিসির বাসভবনে হামলাকারীরা নতুন করে কেউ গ্রেফতার হয়নি, লুটপাটের মালামাল উদ্ধার নেই। তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে এ খবর জানা গেছে। সরকারের নীতি নির্ধারক মহল সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারির জন্য গঠিত কমিটি কাজ করে যাচ্ছে, যাতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কোন অশুভ শক্তি বিভ্রান্ত করতে না পারে। কিন্তু প্রজ্ঞাপন জারি বিলম্বের কারণে সোমবার ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনসহ আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে মিছিল করে শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান নিয়ে ধর্মঘট পালন করা এবং প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত তারা এখানে অবস্থান করার ঘোষণাকে সাংঘর্ষিক পর্যায়ে নেয়ার ঘটনাটি সমস্যা সমাধানের পথ নয়। প্রধানমন্ত্রী যেভাবে কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন সেভাবেই তার ঘোষণা বাস্তবায়নের জন্য প্রজ্ঞাপনও জারি করার জন্য সময় না দিয়ে মানুষজনের জানমাল, নিরাপত্তা, ভোগান্তি ঘটিয়ে বিরক্তির কারণ হওয়ার বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ বলেছেন, ঢাবি ভিসির বাসভবনে সহিংসতার সৃষ্টি করার অভিযোগে দায়ের করা পাঁচটি মামলার তদন্ত করা হচ্ছে। শাহবাগ থানা ও রমনা থানায় দায়ের করা পাঁচটি মামলার তদন্ত করছে পুলিশ, পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট ও ছায়া তদন্ত করছে গোয়েন্দা সংস্থা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের (ভিসি) বাসভবনে হামলার জন্য শাহবাগ থানায় ৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একটি মামলার বাদী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা এসএম কামরুল আহসান। অপর তিনটি মামলার বাদী পুলিশের বিশেষ শাখা এসবি ও শাহবাগ থানার পুলিশ। ভিসির বাসায় হামলাকারীদের শনাক্ত করতে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক টিম কাজ করছে। তবে ভিসির বাসভবনে হামলাকারী ও লুটপাটের মালামাল উদ্ধার হয়নি।
×