ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

স্নিগ্ধার ‘বনেদিয়ানা’

প্রকাশিত: ০৭:১৫, ১৫ মে ২০১৮

স্নিগ্ধার ‘বনেদিয়ানা’

ডিপ্রজন্ম : শুরুর গল্পটা জানতে চাই। স্নিগ্ধা : শুরুটা তেমন ঘটা করে হয়নি। স্রেফ ছোটবেলার সুপ্ত ইচ্ছাটাকে বাস্তবায়ন করার একটি ছোট পদক্ষেপ বলা যায়। কী করব, কীভাবে করব কোন কিছুই আগে থেকে জানা ছিল না। এমনকি কারও কাছ থেকে তেমন কোন আইডিয়াও পাইনি। সাহস করে একটি ইটের গাঁথন দিলাম বনেদিয়ানা নামে। ইচ্ছা ছিল একটু ভিন্ন ধাঁচের ভিন্ন আঙ্গিকের গহনা নিয়ে কাজ করার। ছোট বেলা থেকে মামা-কাকাদের দারুণ সব চিত্রকলা দেখে মুগ্ধ হতাম। তাকিয়ে থাকতাম শুধু। একটু বড় হওয়ার পর কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়া নিজেই নিজের মনের মতো আঁকাআঁকি করতাম। সেই আঁকাআঁকির পোকা মাথায় থেকে যায় এবং ইচ্ছাও ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় ভর্তি হয়ে সেই ইচ্ছাটাকে একটা স্থায়ী রূপ দেয়ার। কিন্তু ভাগ্যদেবী সুপ্রসন্ন ছিলেন না। চলে আসতে হলো হিসাব-নিকাশের বেড়াজালে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগে। হিসাব-নিকাশের সঙ্গে সঙ্গে মাথায় ছিল বনেদিয়ানাকে একটু একটু করে বড় করে মানুষের দোরগোড়ায় এনে দাঁড় করানোর। ডিপ্রজন্ম : নামের পেছনের গল্পটা শুনতে চাই। স্নিগ্ধা : বনেদিয়ানা নামটি ভেবেছিলাম এই কারণে যে, যেহেতু একটু ভিন্ন টাইপের গহনা নিয়ে কাজ করব সেহেতু নামটাও একটু বনেদি টাইপ হলে মন্দ হয় না। আমাদের মেয়েদের শাড়ি গহনার প্রতি আকর্ষণ সেই প্রাচীনকাল থেকে। এখন সেই শাড়ি গহনায় এসেছে ভিন্নতা। আমি চেয়েছি বর্তমান যুগের স্টাইলের সঙ্গে প্রাচীন যুগের বনেদী স্টাইলের সংমিশ্রণে একটু ফিউশন আনার। সেই থেকে বনেদিয়ানা নামেই পরিচিত আমার ছোট স্বপ্নটি। ডিপ্রজন্ম : কি ধরনের ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করেন পণ্য তৈরিতে? স্নিগ্ধা : বনেদিয়ানার বেশিরভাগ গহনাই কাঠের ওপর বেস করে। কাঠের ওপর নানা ধরনের হাতে আঁকা নকশার প্রাধান্য পায় বেশি। নকশার মধ্যে পৌরাণিক বিভিন্ন চরিত্রকেও নিয়ে আসার চেষ্টা করি। উপমহাদেশের বরেণ্য চিত্র শিল্পী যামিনী রায়ের পেইন্টিংও স্থান পেয়েছে বনেদিয়ানার বিভিন্ন গহনায়। এছাড়াও বনেদিয়ানার মেটালের গহনা ও এখন মানুষের পছন্দের তালিকায়। কাপড়ের তৈরি কিছু গহনার ও স্থান রয়েছে বনেদিয়ানার গয়নার বাক্সে। ডিপ্রজন্ম : বনেদিয়ানার পণ্যগুলোকে অন্যদের থেকে কেন আলাদা মনে করেন? স্নিগ্ধা : বনেদিয়ানার গহনা নিঃসন্দেহে অন্যান্য সকলের চেয়ে আলাদা। নকশা থেকে শুরু করে সব কিছু নিজের আইডিয়ার উপর করা হয় খুব যতœসহকারে। তাই ইতোমধ্যে বনেদিয়ানার কদরও বেড়েছে বেশ। যেহেতু হাতে তৈরি, সবকিছু একটু সময় সাপেক্ষ তাই অন্যকিছুর সঙ্গে বনেদিয়ানার প্রডাক্টগুলো মিলিয়ে ফেলা চলবে না। আমরা দামের দিকটাও একইভাবে মানুষের হাতের নাগালে রাখার চেষ্টা করেছি। কম দামে ভাল কিছু দেয়ার কথা মাথায় রেখেই কাজ করে যাচ্ছি। ডিপ্রজন্ম : ভবিষ্যত নিয়ে কি ধরনের পরিকল্পনা আছে। স্নিগ্ধা : সামনে বনেদিয়ানাকে আরও প্রসারের চিন্তা আছে। গহনার পাশাপাশি থাকবে চিরাচরিত পোশাক সামগ্রী। দেশীয় কিছু সাধারণ উপকরণকে অসাধারণ করে তুলে ধরে সবাইকে উপহার দেয়াই আমাদের লক্ষ্য।
×