ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পাঁচ গোল খেয়ে প্রথম হার চ্যাম্পিয়ন বার্সিলোনার

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ১৫ মে ২০১৮

পাঁচ গোল খেয়ে প্রথম হার চ্যাম্পিয়ন বার্সিলোনার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আধুনিক ফুটবলে এই রেকর্ড নেই কোন দলের। স্প্যানিশ লা লিগায় অপরাজিত থেকে মৌসুম শেষ করা। গৌরবময় সেই অসাধ্য সাধন হাতের মুঠোয় এসেও ফসকে গেছে বার্সিলোনার। টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থাকা দলটি আর মাত্র দু’টো ম্যাচে হার এড়াতে পারলেই ইতিহাস গড়তে পাারত। চ্যাম্পিয়নশিপ আগেই নিশ্চিত হওয়ায় নির্ভারও ছিল কাতালানরা। কিন্তু রবিবার রাতে যা হয়ে গেল তা অনেকটাই অবিশ্বাস্য। টেবিলের ১৫ নম্বরে থাকা লেভান্তের কাছে হেরে গেছে লিওনেল মেসিহীন বার্সিলোনা। তাও আবার পাঁচ গোল হজম করে। ব্রাজিলিয়ান তারকা ফিলিপ কুটিনহো কিছুটা হলেও ইজ্জত বাঁচিয়েছেন। তিনি করেছেন হ্যাটট্রিক। তাতে লেভান্তের কাছে বার্সিলোনা হেরেছে ৫-৪ গোলে। যে কারণে ৩৮ ম্যাচের লা লিগায় প্রথম দল হিসেবে অপরাজিত থেকে লীগ শেষ করা হলো না মেসি, সুয়ারেজদের। ১৯৬৪ সালে এই লেভান্তের কাছে একবারই হেরেছিল বার্সা। সেবার ৫-১ গোলের ব্যবধানে হারতে হয়েছিল স্প্যানিশ জায়ান্টদের। এরপর ২০১৮ সাল। প্রায় অর্ধশত বছর পরের ঘটনা। আবারও ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছে পুচকে লেভান্তে। লেভান্তের বিপক্ষে আগের ৯ ম্যাচে ৩৬ গোল করা বার্সিলোনা এবার হেরেছে বেশ বাজেভাবেই। লেভান্তের হয়ে হ্যাটট্রিক করেন ইমানুয়েল বোয়াটেং। জোড়া গোল আসে এনিস বার্ডির পা থেকে। বার্সিলোনার হয়ে নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক করেন কুটিনহো। অতিথিদের অন্য গোলটি লুইস সুয়ারেজের। ম্যাচের নবম মিনিটে এগিয়ে যায় লেভান্তে। বোয়াটেংয়ের গোলে দারুণ অবদান স্প্যানিশ মিডফিল্ডার লুইস মোরালেসের। ডি বক্সের বাইরে থেকে ডিফেন্ডারদের এড়িয়ে বাই লাইন থেকে চমৎকার এক ক্রসে খুঁজে পান বোয়াটেংকে। ঝাঁপিয়ে ক্রস রুখে দেয়ার চেষ্টা করেন বার্সা গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন। কিন্তু একটুর জন্য নাগাল পাননি। খুব কাছ থেকে বল ঠিকানায় পৌঁছে দিতে কোন সমস্যা হয়নি ঘানার ফরোয়ার্ড বোয়াটেংয়ের। ৩১ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন বোয়াটেং। সাসা লুকিচের ডিফেন্স চেরা পাস ফেরাতে পারেনি অতিথিরা। ছুটে এসে চেষ্টা করেছিলেন টের স্টেগেন। তাকে ফাঁকি দিয়ে এগিয়ে যান বোয়াটেং। ৩৮ মিনিটে প্রথম ভাল সুযোগকে গোলে পরিণত করেন কুটিনহো। এই গোলে দারুণ অবদান খানিক আগে টমাস ভারমালেনের বদলি নামা জেরার্ড পিকের। তার কাছ থেকে পাস পেয়েই ডি বক্সের বাইরে থেকে বুলেট গতির শটে বল জালে পাঠান ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। বিরতির পর প্রথম মিনিটেই বার্সিলোনার জালে আবার বল পাঠায় লেভান্তে। জোশে কামপানার কাট ব্যাকে বল পেয়ে যান অরক্ষিত বার্ডি। ডি বক্সের বাইরে থেকে বাঁকানো শটে ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি। ৪৯ মিনিটে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন বোয়াটেং। এ্যান্টোনিও লুনার কাছ থেকে বল পেয়ে কোনাকুনি শটে জালে পাঠান এই ফরোয়ার্ড। ৪-১ গোলে এগিয়ে যায় লেভান্তে। স্বাগতিকদের আক্রমণ মানেই যেন গোল। বার্সিলোনার রক্ষণ বলতে যেন কিছু নেই। ৫৬ মিনিটে বল নিয়ে এগিয়ে গেল লেভান্তে, ব্যবধান বাড়ল আরেকটু। রজারের ডিফেন্স চেরা পাসে ছুটে গিয়ে বুলেট গতির শটে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন বার্ডি। ৫৮ মিনিট পর্যন্ত ৫-১ গোলে পিছিয়ে ছিল বার্সিলোনা। যে অবস্থা বিরাজ করছিল তাতে মনে হচ্ছিল, আট-দশটা গোল খেলেও অবাক হতে হবে না। এরপর কুটিনহো ও সুয়ারেজের বদৌলতে ব্যবধান কমিয়ে ইজ্জত রক্ষা করে বার্সা। ৫৯ মিনিটে গোল করেন কুটিনহো। পাঁচ মিনিট পর আবার কুটিনহোর বুলেট গতির শট। এবার ডি বক্সের বাইরে থেকে। ফল সেই একই। আবার বল লেভান্তের জালে। দারুণ এক হ্যাটট্রিকে ব্যবধান ৫-৩ এ নামিয়ে আনেন কুটিনহো। ৭১ মিনিটে সফল স্পট কিক থেকে ব্যবধান ৫-৪ করেন সুয়ারেজ। বাকি সময়ে সমতা ফেরানোর সুযোগ পেলেও পারেনি বার্সা। তেমনি ব্যবধান আরও বাড়ানোর সুযোগ নষ্ট করে লেভান্তে। এই হারের পরও আগেই শিরোপা নিশ্চিত করা বার্সিলোনার পয়েন্ট ৩৭ ম্যাচে ৯০। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের পয়েন্ট ৭৮। ৭৫ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে রিয়াল মাদ্রিদ। ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে ১৫ নম্বরে লেভান্তে। এই ম্যাচে বার্সার প্রাণভোমরা লিওনেল মেসিকে বিশ্রাম দিয়েছিলেন কোচ আর্নেস্টো ভালভার্ডে।
×