ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রোজায় পণ্যের দাম সহনীয় থাকবে ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১৪ মে ২০১৮

রোজায় পণ্যের দাম সহনীয় থাকবে ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ এবারও রোজায় পণ্যের দাম সহনীয় থাকবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, এ মুহূর্তে চিনি ও পেঁয়াজ ছাড়া অন্য সব নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক আছে। এজন্য রোজার মাসে নিত্যপণ্যের সরবরাহ ঠিক রেখে সহনীয় পর্যায়ে লাভ করতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। রবিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে রমজান উপলক্ষে নিত্যপণ্যের মজুদ, সরবরাহ, আমদানি, মূল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা বিষয়ক এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী ব্যবসায়ীদের বলেন, আপনারা রজমান মাসের পবিত্রতা রক্ষা করার জন্য আপনাদের বিবেক অনুসারে মানুষকে সঠিকভাবে (নিত্যপণ্য) সরবরাহ করবেন। যেহেতু ব্যবসা করেন, লাভও করবেন কিন্তু সহনীয় পর্যায়ে; এটাই বিনীত অনুরোধ আপনাদের কাছে। প্রতিবছর রোজা সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম না বাড়ানোর আশ্বাস দিলেও পরিস্থিতির খুব একটা হেরফের দেখা যায় না। রোজায় বেশি দামে পণ্য কিনতে হয় বলে অভিযোগ থাকে ক্রেতাদের। এবারও রোজায় পণ্যের দাম সহনীয় থাকবে বলে কয়েকদিন আগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের সঙ্গে আশ্বাস দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে রোজার আগে রাজধানীর বাজারে মুরগি-পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। চিনি ও পেঁয়াজ ছাড়া অন্য সব নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক আছে জানিয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, পেঁয়াজের দাম যেভাবে বেড়েছিল তার থেকে এখন সহনীয় পর্যায়ে আছে। পেঁয়াজের যা চাহিদা দেশীয় উৎপাদন থেকে হয় না। তাই ভারত থেকে পেঁয়াজ আনতে হয়। বর্ডার দিয়ে যদি ভালমতো আসতে না পারে, জ্যামে পড়ে, যদি আসতে পাঁচ দিন লাগে তবে পেঁয়াজ পচে যায়, নষ্ট হয়, এটাও মাথায় রাখতে হবে। বিশ্ববাজারে দাম অনেক কমে যাওয়ায় এবার রমজান মাসে চিনির দাম বাড়ার কোন কারণ নেই বলে মনে করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, বর্তমানে তেলের মূল্যও স্বাভাবিক। আন্তর্জাতিক বাজারেও গত বছরের তুলনায় এ সকল পণ্যের মূল্য কম রয়েছে। সঙ্গত কারণে এ মুহূর্তে এগুলোর মূল্য বৃদ্ধির কোন সম্ভাবনা নেই। চাহিদার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য মজুদ থাকার কারণে পণ্যে কোন সঙ্কট হবে না বলে জানান বাণিজ্যমন্ত্রী। রোজার শুরুতে একসঙ্গে পুরো মাসের বাজার না করে ধাপে ধাপে পণ্য কিনতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তোফায়েল আহমেদ। রোজার প্রথমে একসঙ্গে পুরো মাসের বাজার করলে এর প্রভাব পড়ে। ফলে প্রথম রোজার দিকের দাম দিয়ে সারা মাসের দাম বিচার করা ঠিক না। সভায় এক ব্যবসায়ী রোজায় বিভিন্ন নিত্যপণ্যের পাইকারির পাশাপাশি খুচরা দাম নির্ধারণের পরামর্শ দেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজটের কারণে পণ্য পরিবহনে ঝামেলা হচ্ছে জানিয়ে ওই ব্যাবসায়ী বলেন, অনেক কাঁচা পণ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, গতবারের চেয়ে এবার মসুর ডালের দাম ২১ দশমিক ৪৩ শতাংশ, ছোলা ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ, রসুন (আমদানি) ৪৫ দশমিক ৫ শতাংশ, রসুন (দেশী) ৩৯ শতাংশ, চিনি ১৬ শতাংশ, লবণ ৩ দশমিক ০৮ শতাংশ এবং গরুর মাংসের দাম ৩ দশমিক ৯০ শতাংশ কমেছে। এক মাংস ব্যাবসীয় জানান, রোজার মাসে মাংসের দাম নির্ধারণ করতে সোমবার ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে মাংস ব্যাবসায়ীদের সভা হবে। সভায় ব্যাবসায়ীরা তাদের কাছে মজুদ থাকা বিভিন্ন পণ্যের খতিয়ান এবং পাইকারি ও খুচরা দাম তুলে ধরেন। সাধারণত রোজার মাসে যেসব পণ্যের বেশি চাহিদা থাকে তার সঙ্কট হবে না বলেও মন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন তারা। সভায় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, অনেক সময় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের লোকজন আমাদের হয়রানি করে। অনেক সময় বস্তার ওজন এবং বস্তাতে দাম লেখার বিষয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করে। এ প্রেক্ষিতে বাণিজ্যমন্ত্রী ভোক্তা অধিদফতরের মহাপরিচালকের উদ্দেশে বলেন, রোজার মাসে এসব যেন না করা হয়। শুধু দামের ও ওজনের বিষয়টিতে নজরদারি করবে তারা। মন্ত্রী বলেন, সব ধরনের নিত্যপণ্য মজুদ অনেক বেশি রয়েছে। তাই আসন্ন রমজানে পণ্যের দাম বাড়ার কোন কারণ নেই। তারপরও যদি কোন ব্যবসায়ী পণ্য মজুদ করে দাম বাড়ায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
×