ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দলিল উদ্দিন দুলাল

এগিয়েছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ১৪ মে ২০১৮

এগিয়েছে বাংলাদেশ

৪৭ বছর শেষ, ৪৮ বছর চলবে। রাজনীতিবিদরা কত কথার ফানুস ওড়াবে। বাঙালীরা শুধু আশার আলো দেখবে, এটাই আমাদের ভবিষ্যত। এটা সত্য কথা। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর চারদিকে শুধু মৃদু মৃদু করে উন্নতি হয়েছে। চোখ মেলে দেখলে তা অনুধাবন করা যায়, কিন্তু বিশ্বাস করে না কোন কোন রাজনীতিবিদরা। রাজনীতিবিদরা সুশীল সমাজের টকশোতে যখন মিডিয়ার রুমে বসে উন্নতি চোখে দেখে না, (অনেকে দেখেও দেখে না)। কেউ জেগে জেগে স্বপ্ন দেখে, কেউ বলে আরও হতো যদি দুর্নীতি না থাকত, আবার কেউ বলে, এই উন্নতি টিকবে না। শেখ হাসিনা যে বাংলাদেশকে নিয়ে ভাবেন শুধু তাই না, তাঁর বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে উচ্চ আসনে আসীন করার চিন্তা-ভাবনা যথেষ্ট। ইতোমধ্যেই বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে তার নমুনা স্থাপন করেছেন। মানবতা, পরিবেশ দূষণসহ অন্যান্য খতিয়ান দিলে কলেবরে বৃদ্ধি পাবে মাত্র। তিনি যা বাঙালীর কাছে ওয়াদা করেছেন ক্ষমতায় আসীন হয়ে তার সত্তর ভাগ পূরণ করেছেন। তার বাস্তবতা বিদ্যুত, রাস্তাঘাট, যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন। গ্রামে-গঞ্জে এখন শহরের বাতাস। ডিজিটাল পদ্ধতিতে দেশ অনেক দূর এগিয়েছে। মুঠোফোন এখন বোবারাও ব্যবহার করে। সুতরাং ক্ষেত্র বিশেষ বহু দেশ থেকে অনেক এগিয়ে বাংলাদেশ। উচ্চবিত্তরা বিলাসবহুল তো বটেই আমাদের দেশের নিম্নবিত্ত খেটে খাওয়া মানুষ নৈমিত্তিক খাওয়া-দাওয়া, পোশাক-পরিচ্ছদে অন্তত যতটা চাকচিক্য, স্বাচ্ছন্দ্য দেখা যায়, অনেক দেশে তা দেখতে পাওয়া যায় না। বঙ্গবন্ধুর কন্যা অতীতের কথাও মনে রাখেন। ২০১৭ সালে সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন, তিনি যখন জেলে ছিলেন শুধু একটা পত্রিকায়ই আওয়ামী লীগের কথা সাহসের সঙ্গে লিখত তা হলো জনকণ্ঠ। জনকণ্ঠ নির্ভয়ে লিখত। এ অধমও জননেত্রী শেখ হাসিনার মুক্তির কথা তার কোর্টের উঠোনে পুলিশ বাহিনী যে কদর্যপূর্ণ আচরণ করেছিল তার খতিয়ানও লিখছি। তাছাড়া তার দলের নেতাদের কথাও কয়েকবার জনকণ্ঠ পত্রিকায় লিখেছি। বঙ্গবন্ধুর স্মরণশক্তি প্রখর ছিল। তার কন্যারও ধীশক্তিকে বাদ দেয়া যায় না। এ কারণেই তিনি জনকণ্ঠের প্রতি কৃতজ্ঞ। তার প্রশাসনে এখনও বিএনপি- জামায়াতের প্রেতাত্মা রয়ে গেছে। দলের মধ্যে ‘কাউয়া’ ঢুকেছে। প্রকৃত আওয়ামী লীগাররা কোণঠাসা অবস্থায় আছে। অনেকে স্থবির হয়ে গিয়েছে। এটা সত্য কথা মন্ত্রীদের কথার গুরুত্ব নেই। উদাহরণস্বরূপ দেখা যায়, কতবার মুক্তিযোদ্ধাদের কথা বলা হয়েছে। গ্রামে-গঞ্জে যেসব মুক্তিযোদ্ধা থাকে তাদের স্থানীয় প্রশাসনে অবশ্যই স্থান দিতে হবে। যেমন : স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটিতে নেয়া হবে, ইউনিয়ন পর্যায়ে শান্তিশৃঙ্খলা কমিটিতে রাখাসহ কমিটি হবে। আজও পর্যন্ত তার কোন নমুনা পাওয়া গেল না। গত ১২ জানুয়ারি ২০১৮ সালে বিশেষ ক্রোড়পত্রে এক জায়গায় লেখা হলো, মুক্তিযোদ্ধাদের যারা এখনও বেঁচে আছেন তাঁদের যথাযথ সম্মান দেয়া হয়েছে। এর ভেতরে বাস, স্টিমার, বিমান, ট্রেন, লঞ্চে সম্মানের সঙ্গে চলাফেরা করবে তাদের কোন ভাড়া লাগবে নাÑ ওটা অনেক ক্ষেত্রে কাগজেই রয়ে গেছে। বাসে পুচকে ছেলেরা ভাড়া না নেয়ার কথা বললে তারা মালিকদের কাছ থেকে কোন নির্দেশ পায়নি, আবার মালিকরা বলেন, তাদের নেতা-মন্ত্রী কোন নির্দেশনা দেয়নি। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা সূর্য সন্তান, ওদের মর্যাদা না দিলে স্বাধীনতা মিথ্যা হয়ে যাবে। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান না দিলে জাতি গর্বিত হবে না।’ কয়দিন আগে চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেন, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আপনারা বড় বড় অফিসার, আমলা, রাজনীতিবিদ হয়েছেন তাদের আপনাদের সম্মান করতে হবে। আমলারা, কেউ মন্ত্রী ছিল, কেউ এখনও মন্ত্রী, তারা এক সুরে বলছে মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা বাতিল করতে হবেÑ একটা কথা বলতে হয়, এদের ভেতর কারও ছেলে নেই, অনেকের ছেলেমেয়ে বিদেশে থাকে, তাদের মেধার দরকার। তাদের কথা শুনে ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন তথা প্রগতিশীল ছাত্ররা কোটা বন্ধ করার জন্য মাঠে নামলেন। তারা বুঝলেন না বঙ্গবন্ধুর দেয়া কোটা সংবিধানে সংরক্ষিত আছে। এখন তাদের কথা একটাই, বঙ্গবন্ধুর মেয়েকে দিয়ে কোটা বাতিল করে সব দায়-দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীর ওপর চাপানো। শেষ কথা, যারা ঢাকায় থাকেন তারা উন্নয়ন দেখে না। বাংলার সাধারণ মানুষের কাছে গেলে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে বাংলাদেশ হাসছে। হাসছে বাংলার দুঃখী মানুষ। লেখক : মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক কমান্ডার
×