ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ইন্দোনেশিয়ায় গির্জায় জঙ্গী হামলা নিহত নয়, আহত ৪০

প্রকাশিত: ০৪:৫৩, ১৪ মে ২০১৮

ইন্দোনেশিয়ায় গির্জায় জঙ্গী হামলা নিহত নয়, আহত ৪০

ইন্দোনেশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম সুরাবায়া শহরের তিনটি গির্জায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় অন্তত নয় জন নিহত হয়েছেন। রবিবারের এসব হামলায় আরও অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর এটি সর্বশেষ হামলা। খবর এএফপির। এই সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়ায় পবিত্র রমজান মাস শুরু হবে। ইতোমধ্যে দেশটিতে ইসলামিক স্টেট (আইএস) গ্রুপ আত্মঘাতী হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে সেখানে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পুলিশ গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, আত্মঘাতী হামলাকারীরা এসব হামলা চালিয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। একটি ঘটনাস্থলের কাছে দাঁড়িয়ে পূর্বজাভা পুলিশের মুখপাত্র ফ্রান্স বারুং মানগেরা জানিয়েছেন, তিনটি গির্জায় বিস্ফোরণ ঘটেছে। এতে নয় জন নিহত ও অপর ৪০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। যাদের মধ্যে দুজন পুলিশও রয়েছেন। একটি হামলাস্থলে আমরা এখনও প্রবেশ করতে পারিনি। স্থানীয় সময় সকাল সাতটা ৩০মিনিটে তিনটি পৃথক এলাকায় বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার দায় এখনও কেউ স্বীকার করেনি। টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ফুটেজে দেখা গেছে, সান্তা মারিয়া ক্যাথলিক গির্জায় আগুন জ্বলছে। সেখান থেকে ঘন কালো ধোঁয়া উঠছে। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, গির্জায় ছোট একটি শিশু ও এক কিশোরকে নিয়ে একজন নারী প্রবেশ করার পর নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে প্রশ্ন করার সময় বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ফুটেজে গির্জার প্রবেশ পথের চারপাশে মোটরসাইকেলের ধ্বংসাবশেষ, মৃতদেহ পড়ে থাকতে ও পুলিশকে জায়গাটি ঘিরে রাখতে দেখা গেছে। চতুর্থ আরেকটি গির্জায় বিস্ফোরণ ঘটেছে কিনা তাও তদন্ত করে দেখছে কর্তৃপক্ষ। সান্তা মারিয়ায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটানোর সময় একজন হামলাকারী নিহত হয়েছে। তবে এটি স্পষ্ট নয় যে অন্য আর কেউ নিহত বা আহতদের মধ্যে আছে কিনা। সান্তা মারিয়া চার্চের প্রত্যক্ষদর্শী রোমান (২৩) বলেন, অমি সে সময় ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ি। অনেকের চিৎকার শুনতে পাই। রাজধানী জাকার্তার বাইরে একটি উচ্চ নিরাপত্তা বলয়ে থাকা কারাগারে বন্দী জঙ্গীদের হামলায় পাঁচ ইন্দোনেশিয়ান পুলিশ ও এক বন্দী নিহত হওয়ার কয়েক দিন পর গির্জায় বোমা হামলার ঘটনাটি ঘটল। সে সময় আইএস ওই হামলার দায় স্বীকার করেছিল। যদিও পুলিশ সে দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে। বোমা হামলার পর সুরাবায়ার সব গির্জা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার আদেশ দিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি শহরটিতে আয়োজিত একটি বড় খাদ্য উৎসবও বাতিল করা হয়েছে। সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ার ভেতরে তৈরি হওয়া জঙ্গীদের পুনরুত্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির জনসংখ্যা ২৬ কোটি হলেও সেখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক খ্রীস্টান, হিন্দু ও বৌদ্ধ রয়েছে। যারা ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা ও জঙ্গী হামলার প্রেক্ষাপটে উদ্বেগের মধ্যে জীবন যাপন করছে। প্রায় ১৭ হাজার দ্বীপপুঞ্জের দেশটি দীর্ঘদিন ধরে ইসলামী জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। গত ১৫ বছরে জঙ্গীরা সেখানে ধারাবাহিক হামলা চালিয়েছে। যার মধ্যে ২০০২ সালের বালি বোমা হামলা অন্যতম। সেই হামলায় ২০২ জন লোক নিহত হয়। যাদের বেশিরভাগই ছিল বিদেশী পর্যটক। এই বোমা হামলাই ছিল দেশটির সবচেয়ে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসী হামলা।
×