ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কুড়িগ্রামে বাংলাদেশ ভাওয়াইয়া একাডেমির রজতজয়ন্তী

প্রকাশিত: ০৭:৪৬, ১৩ মে ২০১৮

কুড়িগ্রামে বাংলাদেশ ভাওয়াইয়া একাডেমির রজতজয়ন্তী

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ বাংলাদেশ ভাওয়াইয়া একাডেমির ২৫ বছর পূর্তিতে নানা আনন্দ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ভাওয়াইয়া উৎসব। কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার পাচপীরে বাংলাদেশ ভাওয়াইয়া একাডেমির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় এ ভাওয়াইয়া উৎসব। উৎসবে কুড়িগ্রাম, রংপুর ও লালমনিরহাট জেলার পাশাপাশি ভারতের কুচবিহার ও আসাম অঞ্চলের ভাওয়াইয়া গানের শিল্পীরা যোগ দেন। ভারতের কুচবিহার থেকে ভাওয়াইয়া উৎসবে যোগ দিতে আসা মঞ্জু রানী বর্মা জানান, ভাওয়াইয়া গান বাংলাদেশের উত্তারাঞ্চলের আঞ্চলিক গান হলেও এ গান এখন বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের বাংলা ভাষীদের মাঝে জনপ্রিয় গান। আমি এ উৎসবে যোগ দিতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। বাংলাদেশ ভাওয়াইয়া একাডেমি পরিচালক ভূপতি ভূষণ বর্মা জানান, ভাওয়াইয়া এ অঞ্চলের মাটি ও মানুষের গান। ভাওয়াইয়া গান নতুন প্রজন্মকে শেখানোর উদ্দেশ্যে ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ ভাওয়াইয়া একাডেমি প্রতিষ্ঠিত করা হয়। এ পর্যন্ত এই একাডেমি থেকে ২ হাজারেরও বেশি শিল্পীকে ভাওয়াইয়া গানের তালিম দিয়েছি। এদের মধ্যে ৫০ জনেরও বেশি শিল্পী রেডিও টেলিভিশনে গানের জন্য তালিকা ভুক্ত হয়েছে। রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ^বিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ও ভাওয়াইয়া গান গবেষক ড. তুহিন ওয়াদুদ জানান, ভাওয়াইয়া গান হচ্ছে এই রংপুর অঞ্চলের ভূমির গান। এখানকার জীবন, এখানকার সংস্কৃতি, এখানকার আবহ সবকিছুই গানের সুরে এবং কথায় ফুটে ওঠে। বাংলাদেশ ভাওয়াইয়া একাডেমির রজতজয়ন্তী উদযাপনে উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুর্গাপুর হাইস্কুল মাঠে দিনব্যাপী আনন্দ আয়োজনে মেতে ওঠে শিল্পী সংগঠকসহ এ অঞ্চলের ভাওয়াইয়া প্রেমীরা। উত্তর অঞ্চলের মানুষের যাপিত জীবন আর সংস্কৃতির সুরেলা বর্ণনা রয়েছে ভাওয়াইয়া গানে। শত বছরের ধারাবাহিকতায় আজও এই গান এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের সঙ্গীত। ভাওয়াইয়া স¤্রাট আব্বাস উদ্দিন, ভাওয়াইয়া যুবরাজ কছিম উদ্দিন, হরললাল রায়, রথীন্দ্রনাথ রায়সহ এ অঞ্চলের অসংখ্য শিল্পী এই গানকে সমৃদ্ধ করেছেন নিজস্ব গায়কী ঢঙে। আর নদী কেন্দ্রীক এ অঞ্চলের মানুষের জীবন চিত্র উঠে এসেছে ভাওয়াইয়ার সুরে ও কথায়। ভাওয়াইয়া এখন আর শুধু এ অঞ্চলের গান নয়। এর ব্যাপ্তী ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশসহ দেশের বাইরেও। সম্প্রসারণ ও এর অতিত ঐতিহ্য ধরে রাখার নিরন্তর চেষ্টা করছেন এ অঞ্চলের শিল্পী সংগঠকরা। ভাওয়াইয়া গান সম্প্রসারণ হলে শুধু এ অঞ্চলের সংস্কৃতি বিকশিত হবে না-বিকশিত হবে বাঙালীর হাজার বছরের ইতিহাস ঐতিহ্য। এতে ভাওয়াইয়ার প্রতি আকৃষ্ট হবে নতুন প্রজন্ম। এমনই বলছে এ অঞ্চলের শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীরা।
×