ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রাজ্য হারালেন নাদাল

প্রকাশিত: ০৭:০০, ১৩ মে ২০১৮

রাজ্য হারালেন নাদাল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটছিলেন রাফায়েল নাদাল। বৃহস্পতিবারই নতুন এক ইতিহাসও গড়েছিলেন তিনি। তৃতীয় রাউন্ডের টিকেট কেটে জন ম্যাকেনরোর গড়া ৩৪ বছরের রেকর্ড ভেঙ্গে টানা ৫০ সেট জয়ের অবিস্মরণীয় কীর্তি গড়েছিলেন স্পেনের এই টেনিস তারকা। কিন্তু মাদ্রিদ ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালেই জয়রথ থেমে যায় নাদালের। টানা ২১ ম্যাচ জয়ের পর শুক্রবার অস্ট্রিয়ার ডোমিনিক থিয়েমের কাছে ৭-৫ এবং ৬-৩ গেমে হার মানেন তিনি। এই হারের ফলে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানও হারাচ্ছেন নাদাল। তার জায়গায় চলে আসবেন রজার ফেদেরার। মাদ্রিদ ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডে ত্রয়োদশ বাছাই আর্জেন্টিনার দিয়েগো শুয়ার্টজম্যানকে হারিয়ে শেষ আটের টিকেট পেয়েছিলেন নাদাল। পাশাপাশি ক্লে কোর্টে টানা ৫০ সেট জিতে প্রায় তিন যুগের পুরনো রেকর্ডও ভাঙ্গেন নাদাল। ১৯৮৪ সালে ক্লে-কোর্টে টানা ৪৯ সেট জিতে রেকর্ড গড়েছিলেন আমেরিকার জন ম্যাকেনরো। রেকর্ড গড়ার পরের ম্যাচেই অঘটনের শিকার হয়েছেন নাদাল। অস্ট্রিয়ার প্রতিভাবান খেলোয়াড় থিয়েমের কাছে সরাসরি সেটে হেরে যান নাদাল। ৩৫৭ দিন আগে ক্লে কোর্টে সর্বশেষ হেরেছিলেন তিনি। রোমে ইতালিয়ান ওপেনে এই থিয়েমের কাছে হারের লজ্জা পেয়েছিলেন নাদাল। এই লজ্জায় শীর্ষস্থানও হারালেন তিনি। তাই ম্যাচ শেষে থিয়েমের প্রশংসায় পঞ্চমুখ নাদাল। এ প্রসঙ্গে ম্যাচের শেষে তিনি বলেন, ‘যখন সে ভাল খেলে তখন তাকে থামানো বেশ কঠিন। সে ভাল খেলেছে কিন্তু আমি ভাল খেলতে পারিনি। এখানেই ম্যাচের ভাগ্য ঠিক হয়ে গেছে। ডোমিনিক থিয়েমের জন্য শুভ কামনা থাকল।’ নাদালের বিদায়ী ম্যাচ দেখতে গ্যালারিতে এক হয়েছিলেন স্পেনের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই ক্লাব বার্সিলোনা-রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়রাও। রাফায়েল নাদাল যেমন ফুটবলের ভক্ত, তেমনি স্পেনের অনেক ফুটবলারও নাদালের খেলার ভক্ত। যে কারণেই শুক্রবার মাদ্রিদ ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে নাদালের খেলা মিলিয়ে দিল দুই স্প্যানিশ জায়ান্টকে। নাদালের সঙ্গে ডোমিনিক থিয়েমের লড়াই দেখতে গিয়েছিলেন বার্সিলোনার জেরার্ড পিকে, রিয়াল মাদ্রিদের লুকাস ভাসকেজ এবং মার্কো এসেনসিও। একই গ্যালারিতে বসে তারা মেতে উঠেছেন হাসি-ঠাট্টা আর খোশগল্পে। অথচ কদিন আগে ‘এল ক্লাসিকো’তে তাদের ‘মল্লযুদ্ধ’ দেখে মনে হয়েছে, কেউ কারও ছায়াও মাড়াবেন না। কিন্তু নাদালের খেলা মিলিয়ে দিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুটি ক্লাবের খেলোয়াড়দের। অবশ্য শুধু রিয়াল-বার্সার খেলোয়াড়েরাই নন, এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের গোলরক্ষক ইয়ান ওবালাক ও মিডফিল্ডার সল নিগেজও গিয়েছিলেন নাদালের খেলা দেখতে। নাদালের খেলা দেখতে পাশাপাশি বসেছেন বার্সার পিকে ও রিয়ালের ভাসকেজ। অথচ ফুটবল মাঠে কেউ কাউকে তিল পরিমাণ ছাড় দেন না। কিন্তু নাদালের খেলা মিলিয়ে দিল তাদের। যদিও এসব ভক্তকে হতাশ করেছেন ‘ক্লে কোর্টের রাজা’। সেমিফাইনালে উঠে উচ্ছ্বসিত থিয়েম। ম্যাচের শেষে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘নাদালকে হারানো কখনই সহজ নয়। আজও সহজ ছিল না। কিন্তু আজকের দিনটি আমার ছিল। ম্যাচের শুরু থেকেই বুঝতে পেরেছিলাম তা। এ জন্য নাদালকে সবসময়ই চাপে রাখার চেষ্টা করেছি এবং শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছি।’ সেমিফাইনালে ষষ্ঠ বাছাই দক্ষিণ আফ্রিকার কেভিন এন্ডারসনের মুখোমুখি হবেন থিয়েম। শেষ আটে এন্ডারসন ৭-৬ (৭/৩), ৩-৬ ও ৬-৩ গেমে অবাছাই সার্বিয়ার ডুসান লাজোভিচকে পরাজিত করে সেমিফাইনালের টিকেট কাটেন।
×