ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জাতিসংঘ প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাতের জের

নিরাপত্তা বাহিনীর হুমকির মুখে রোহিঙ্গারা আত্মগোপনে

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ১৩ মে ২০১৮

নিরাপত্তা বাহিনীর হুমকির মুখে রোহিঙ্গারা আত্মগোপনে

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে সহিংসতার শিকার হওয়া যেসব গ্রামবাসী তাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেছিলেন, মিয়ানমার নিরাপত্তা সংস্থাগুলো সেসব গ্রামবাসীকে হন্যে হয়ে খুঁজতে শুরু করেছে। মিয়ানমার নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর নজরে পড়ার পর গত সপ্তাহে রাখাইনে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের (ইউএনএসসি) প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলা রোহিঙ্গা গ্রামবাসীরা এখন আত্মগোপনে আছে। সম্প্রদায়ের সদস্য সূত্রে এ কথা বলা হয়েছে বলে জানা গেছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের। চলতি মাসে দেশটির রাখাইন রাজ্যে ইউএনএসসির সদস্যদের সফরের সময় গ্রামবাসীরা তাদের সঙ্গে কথা বলে ও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে নির্মম সহিংসতার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে। এখন নিরাপত্তা সংস্থাগুলো তদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করার পর তাদের আর পাওয়া যাচ্ছে না; বলা চলে তাদের লুকিয়ে থাকতে অনেকটা বাধ্য করা হচ্ছে। এক রোহিঙ্গা সাংবাদিক গার্ডিয়ানকে জানান, রাখাইনে ইউএনএসসির সদস্যদের পরিদর্শনে আসার মাত্র কয়েক দিন আগে মংডুর কর্তৃপক্ষরা সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে কোন কথা না বলার জন্য সকলকে সতর্ক করেন। প্রতিবেদক আরও বলেন, সতর্কতা না মানলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ারও হুমকি দেয়া হয়। অধিকাংশ গ্রামবাসী ইউএনএসসির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা থেকে বিরত থাকলেও নলবোনিয়া গ্রামের তিন কিশোর ও মধ্য বয়সী এক নারী তাদের সঙ্গে কথা বলে। কিন্তু ইউএনএসসির সদস্যরা গ্রাম ছেড়ে চলে আসার পর পরই মিয়ানমারের সা রা পা (সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা ইউনিট) ও সীমান্ত নিরাপত্তা পুলিশ (বিজিপি) গ্রামে পৌঁছে ওই সব লোককে খোঁজ করে, যারা জাতিসংঘ প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছে। নিরাপত্তার খাতিরে নাম প্রকাশ করতে নারাজ ওই প্রতিবেদক বলেন, নলবোনিয়ায় পরিদর্শনে যাওয়া ইউএনএসসির সদস্যদের সঙ্গে যে রোহিঙ্গারা কথা বলেছে সেসব দৃশ্য গোয়েন্দা প্রতিনিধিরা ভিডিও করে নিয়েছিল। সা রা পা প্রতিনিধিরা গ্রামের মাতবরদের সেসব ভিডিও দেখিয়ে ওই চার রোহিঙ্গাকে হন্যে হয়ে খুঁজে ফিরছে। এটি স্পষ্ট যে, সরকার বা নিরাপত্তা সদস্যদের কারণে তারা এখন নিজেদের আত্মগোপনে রেখেছে। তবে আমরা এখন পর্যন্ত জানি না, তারা বর্তমানে এ দেশে আছে, না বাংলাদেশে চলে গেছে। এদিকে, প্রশাসন ও অন্য গ্রামবাসী সেনাবাহিনীকে জানিয়েছে, তারা ওই তিন কিশোর ও নারীর বিষয়ে কিছুই জানে না।
×