ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে নির্মূল কমিটি কমিশন করেছে

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১৩ মে ২০১৮

তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে নির্মূল কমিটি কমিশন করেছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্য কি না, তার তদন্তে তিন সদস্যের কমিশন গঠন করেছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। বেসরকারী এই তদন্ত কমিশনে থাকছেন বিচারপতি শামসুল হুদা, বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম। কাজী মুকুল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত কয়েকদিন ধরে কয়েকটি দৈনিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনজীবী ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ সম্পর্কে এমন কিছু সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে যা ট্রাইব্যুনালের মর্যাদা ক্ষুণœ করার পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধীদের চলমান বিচার প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ যেহেতু একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য এবং গত পাঁচ বছর ধরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলা সাফল্যের সঙ্গে পরিচালনা করেছেন সে কারণে অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনা করে এ বিষযে তদন্তের জন্য নির্মূল কমিটি সুপ্রীমকোর্টের তিন প্রাক্তন বিচারপতিকে নিয়ে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেছে। শনিবার একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ ও উপদেষ্টা পরিষদের এক যৌথসভায় ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে উত্থাপিত কথিত অভিযোগ তদন্তের জন্য গঠিত কমিশন তাদের বক্তব্য প্রদান করেন। নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই যৌথ সভায় এ বিষয়ে নিম্নোক্ত প্রস্তাব গৃহীত হয়। ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহাজোট সরকারের দুই মেয়াদের অন্যতম প্রধান সাফল্য হচ্ছে দেশে ও বিদেশে যাবতীয় প্রতিকূলতা ও ষড়যন্ত্র বানচাল করে ’৭১-এর গণহত্যাকারী, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা, যা ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ ও প্রশংসা অর্জন করেছে। এই বিচার কার্যক্রমের মান, ট্রাইব্যুনালের মর্যাদা এবং বিচার প্রক্রিয়া নির্বিঘœ ও দ্রুততর সম্পন্ন করার প্রয়োজনে আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। যেহেতু ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে উত্থাপিত কথিত অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর ও স্পর্শকাতর, সেহেতু দ্রুত সুপ্রীমকোর্টের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করে এ বিষয়ে যথাযথ তদন্ত করা হোক। একই সঙ্গে আমরা অভিযুক্ত, অভিযোগকারী এবং ট্রাইব্যুনালের সঙ্গে জড়িত সবাইকে অনুরোধ করব এ বিষয়ে তদন্ত শেষ হওয়ার আগে তারা যেন প্রকাশ্যে কোন মন্তব্য প্রদান না করেন। কোনরকম তদন্ত ছাড়া একটি মহলের অভিযোগের ভিত্তিতে গণমাধ্যমে ট্রাইব্যুনালের অন্যতম দক্ষ প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ সম্পর্কে যে সব সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা ৩০ লাখ শহীদ পরিবারের পাশাপাশি বিচারপ্রত্যাশী গোটা জাতিকে ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত করেছে, যা ট্রাইব্যুনালের ভাবমূর্তির জন্যও ক্ষতিকারক। আমরা গণমাধ্যমকেও অনুরোধ জানাচ্ছি। ’৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের গুরুত্ব, স্পর্শকাতরতা এবং দেশে-বিদেশে এই বিচার প্রশ্নবিদ্ধ ও বানচাল করবার চলমান চক্রান্ত বিবেচনা করে তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এ বিষয়ে আর কোন সংবাদ যেন প্রকাশ বা প্রচার করা না হয়। ‘ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ইতোপূর্বে একাধিকবার প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হয়েছেন। আমরা তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের ১২ মের জরুরী সভায় উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি শামসুল হুদা, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম, ক্যাপ্টেন সাহাবউদ্দিন আহমেদ বীরউত্তম, ক্যাপ্টেন আকরাম আহমেদ বীরউত্তম, ডাঃ ইকবাল কবীর, লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, শিক্ষাবিদ মমতাজ লতিফ, কাজী মুকুল, শহীদজায়া সালমা হক, কবি ড. ফরিদা মজিদ, অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মকবুল-ই ইলাহী চৌধুরী, সাবেক ফুটবলার শামসুল আলম মঞ্জু, ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, লেখক আলী আকবর টাবী, মুক্তিযোদ্ধা শফিকুর রহমান শহীদ, অধ্যাপক আবদুল গফ্ফার, সমাজকর্মী মোয়াজ্জেম হোসেন লাভলু, সাংবাদিক ফজলুর রহমান, সাংবাদিক শওকত বাঙালি, উপাধ্যক্ষ কামরুজ্জামান, শহীদসন্তান ডাঃ নুজহাত চৌধুরী শম্পা, ডাঃ মামুন আল মাহতাব, শহীদসন্তান আসিফ মুনীর তন্ময়, শহীদসন্তান তানভীর হায়দার চৌধুরী শোভন, ব্যারিস্টার নাদিয়া চৌধুরী, এ্যাডভোকেট মালেক শেখ, এ্যাডভোকেট কাজী মানছুরুল হক খসরু, এ্যাডভোকেট আবদুল মালেক, সমাজকর্মী শেখ আলী শাহনেওয়াজ পরাগ, সমাজকর্মী শিমন বাস্কে ও সমাজকর্মী সাইফ উদ্দিন রুবেল প্রমুখ।
×