ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আনন্দ আয়োজনে বাফার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্্যাপন

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১৩ মে ২০১৮

আনন্দ আয়োজনে বাফার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্্যাপন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সময়ের ¯্রােতধারায় প্রতিষ্ঠার ৬৩ বছরে পূর্ণ করেছে বুলবুল একাডেমি অব ফাইন আর্টস (বাফা)। পদার্পণ করল পথচলার ৬৪ বছরে। সেই সাফল্যের উদ্্যাপন হলো শনিবার। সংগঠনের সদস্যদের পদচারণায় মুখরিত হলো আয়োজন। নাগরিক সমাবেশ, স্মৃতিচারণ এবং নৃত্য-গীতের বর্ণিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় সাজানো হয় অনুষ্ঠান। বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তিন মাসব্যাপী এ আনন্দ আয়োজনের সূচনা হয়। একঝাঁক বর্ণিল বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য দেন বাফার সম্পাদক মোঃ ফজলুর রহমান। স্মৃতিচারণ করেন বাফার সাবেক সভাপতি শামসুজ্জাহান নূর, বর্তমান কোষাধ্যক্ষ কবির আহমেদ, বাফার উত্তরা শাখার উপাধ্যক্ষ কাজল মুখার্জীসহ প্রতিষ্ঠানের বর্তমান ও সাবেক সদস্যরা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাফার সভাপতি হাসানুর রহমান বাচ্চু। উদ্বোধনী বক্তব্যের বাফার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, ১৯৫৪ সালের ১৭ মে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান নৃত্যাচার্য বুলবুল চৌধুরী। মৃত্যুর পর দেশের নৃত্যশিক্ষায় তার অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে ১৯৫৫ সালের ১৭ মে প্রতিষ্ঠিত হয় বুলবুল একাডেমি অব ফাইন আর্টস। সেই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় আমি এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হই। পরবর্তীতে ১৯৫৬ সালে আমাকে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য করে নেয়া হয়। বাফার সূচনালগ্নের সেই দিনগুলো ছিল এই ভূখ-ের সংস্কৃতি ভুবনের জন্য দারুণ আশাব্যঞ্জক। কারণ সেই সময় দেশে নৃত্যচর্চা প্রশিক্ষণের জন্য অন্য কোন প্রতিষ্ঠান ছিল না। পরবর্তী সময়ে অনেক ঝড়-ঝাপটার ভেতর দিয়ে এগিয়েও স্বমহিমায় টিকে আছে বাফা। উদ্বোধনী কথনের পর ছিল স্মৃতিচারণ। দ্বিতীয় পর্বে ছিল বাফার শিক্ষার্থী শিল্পীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এ পর্বে পরিবেশিত হয় শিশু শিল্পীদের নৃত্য-গীত। সেই সঙ্গে পরিবেশিত হয় বড়দের নাচ-গান। সন্ধ্যা পর্যন্ত চলমান অনুষ্ঠানে বয়ে যায় সুরেলা শব্দধ্বনি। রবীন্দ্র ও নজরুলসঙ্গীতের সঙ্গে পরিবেশিত শেকড়সংলগ্ন লোকসঙ্গীত। নজরুলের গানের দুই এ্যালবামের প্রকাশনা ॥ লাল মাটিয়ার বেঙ্গল বই প্রাঙ্গণে শনিবার নজরুলের গানের দুটি এ্যালবামের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। অনিন্দিতা চৌধুরীর কণ্ঠে ধারণ করা ‘নয়নের নীরে’ ও বিজন চন্দ্র মিস্ত্রির কণ্ঠে ধারণ করা ‘বনে বনে লাগলো দোল’ সংকলনদ্বয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন শিল্পী সাদিয়া আফরিন মল্লিক এবং খায়রুল আনাম শাকিল। মোড়ক উন্মোচন শেষে অনিন্দিতা চৌধুরী ও বিজন চন্দ্র মিস্ত্রি গান গেয়ে শোনান। অনিন্দিতা চৌধুরীর ‘নয়নের নীরে’ এ্যালবামটিতে সংকলিত গানগুলো হলোÑ ‘জনম জনম গেল’, ‘আয় মরু পারের হাওয়া’, ‘রুমঝুম্ রুমঝুম্’, ‘বুলবুলি নীরব নার্গিস বনে’, ‘মোর ঘুমঘোরে এলে মনোহর’, ‘তুমি যতই দহ না’, ‘প্রিয় যাই যাই বলো না’ ও ‘আমার যাবার সময় হল’। বিজন চন্দ্র মিস্ত্রির ‘বনে বনে লাগলো দোল’ এ্যালবামটিতে সংকলিত গানগুলো হলোÑ ‘আমার আপনার চেয়ে’, ‘কুহু কুহু কুহু কোয়েলিয়া’, ‘তুমি যতই দহ না’, ‘হে প্রিয় আমারে দিব না’, ‘চেয়ো না সুনয়না’, ‘আমার বিফল পূজাঞ্জলি’, ‘ফুল-ফাগুনের এলো মরশুম’, ‘কেন উচাটন মন পরান’, ‘এ কোন্ মধুর শরাব দিলে’ ও ‘তুমি আরেকটি দিন থাকো’। রবীন্দ্রসঙ্গীত উৎসবে সম্মাননায় ভূষিত মিতা হক ॥ রবীন্দ্রনাথের গানের সুরে সুরে সংস্কৃতির লড়াইকে বেগবান করার প্রত্যয়ে শেষ হলো বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা আয়োজিত জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত উৎসব। শনিবার বিকেলে সমাপনী আয়োজনে রবীন্দ্রসঙ্গীত চর্চায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা সম্মাননা’ প্রদান করা হয় প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী মিতা হককে। শাহবাগের সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আয়োজনে শিল্পীর হাতে সম্মাননা স্মারক ও অর্থমূল্য তুলে দেন সংস্থার সভাপতি তপন মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজেদ আকবর। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জগদীশচন্দ্র বসুর বন্ধুত্ববার্ষিকীর আয়োজন ॥ দুই ভুবনের বাসিন্দা। একজন আবেগমাখায় শিল্প-সাহিত্যের স্রষ্টা আর অপরপর সর্বদা যুক্তির পথে চলা বিজ্ঞানী। তবে চলার পথ ভিন্ন হলেও দুজনের মাঝে গড়ে উঠেছিল দারুণ সখ্য। সেই সখ্যের সুবাদে হয়েছিল বন্ধুত্ব। বাঙালীর অহঙ্কার এই দুই বরেণ্য ব্যক্তিত্ব হলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু। শনিবার উদ্্যাপিত হলো এই দুই কীর্তিমানের ১২০তম বন্ধত্ববার্ষিকী। এদিন বিকেলে আগারগাঁওয়ের জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর এ উপলক্ষে আলোচনাসভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। ‘রবীন্দ্রনাথের বিজ্ঞান চেতনা, ধ্যান ও স্রষ্টা বন্দনা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির সাবেক সভাপতি ড. এম শমশের আলী। প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন বিজ্ঞান একাডেমির সেক্রেটারি ড. মেসবাহউদ্দিন আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী আব্দুল ফাত্তাহ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু তার বিজ্ঞানকর্ম দিয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথকে প্রভাবিত করেছেন। রবীন্দ্রনাথের বিজ্ঞানমনস্কতার পেছনে জগদীশ চন্দ্র বসুর অবদান রয়েছে। অন্যদিকে, রবীন্দ্রনাথ জগদীশ চন্দ্র বসুকে বিজ্ঞান গবেষণার জন্য আর্থিক সাহায্য প্রদান করেছিলেন। দুইজনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের এটি ছিল অন্যতম দিক। আসাদুজ্জামান নূর আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গানের মধ্যে যে বিজ্ঞান চেতনা লুকিয়ে আছে তা আজকের আলোচনার মাধ্যমে উঠে এসেছে। রবীন্দ্রনাথের মতো যুক্তিবাদী ও বিজ্ঞানমনস্ক মন আমাদের সকলেরই থাকা উচিত। উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের যেমন মানবিক তথা শিল্প-সংস্কৃতির বিষয়সমূহ সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে, একইভাবে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদেরও বিজ্ঞান সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। তাহলেই এদেশে আগামীদিনে যোগ্য, দক্ষ, রুচিশীল ও মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন মানুষ তৈরি হবে। ‘এখনো গেল না আঁধার’ ॥ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্বদেশ পর্যায়ের গানের সুরে দেশমাতৃকার বন্দনা করল সঙ্গীত সংগঠন সুরতীর্থের শিল্পীরা। সে সঙ্গে সকল আঁধার ঘুচিয়ে আলোর পথে চলার প্রত্যয়ও ছিল তাদের কণ্ঠে। এসব নিয়েই একক ও সম্মেলক গানে কবিগুরুর জয়ন্তীতে তাকে প্রণতিও জানালেন তারা। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে ‘এখনো গেল না আঁধার’ শিরোনামের সুরতীর্থের এই আয়োজনটির পরিচালনা করেন মিতা হক। আনন শিশুসাহিত্য পুরস্কার পেলেন কাইজার চৌধুরী ॥ শনিবার উদযাপিত হলো আনন ফাউন্ডেশনের ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। বিকেলে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে এই আয়োজন হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শিশুসাহিত্যিক রফিকুল হক দাদু ভাই। ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি স ম শামসুল আলমের সভাপতিত্বে সম্মানিত অতিথি ছিলেন ছড়াকার সিরাজুদ ফরিদ, শিল্পী বুলবুল মহলানবীশ, শিশুসাহিত্যিক জাহাঙ্গীর আলম জাহান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের মহাসচিব নজরুল ইসলাম নঈম। এই আয়োজনে শিশুসাহিত্যিক কাইজার চৌধুরীকে আনন শিশুসাহিত্য পুরস্কার ২০১৮ প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে নৃত্য, সঙ্গীত, আবৃত্তি ও ছবি আঁকার বিজয়ী ২৬ শিশুকে বই পুরস্কার দেয়া হয়। পিএসসিতে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ছয় ও জেএসসিতে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত সাত ছাত্রীকে বৃত্তি প্রদান করা হয়।
×