ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাগেরহাটে ঝড়ে গাছ পড়ে ব্যবসায়ী নিহত ॥ আহত দুই

প্রকাশিত: ০৫:২৩, ১৩ মে ২০১৮

বাগেরহাটে ঝড়ে গাছ পড়ে ব্যবসায়ী  নিহত ॥ আহত দুই

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ ফকিরহাট উপজেলায় ঝড়ে গাছ চাপা পড়ে অরুণ দাস (৩৮) নামে এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছে আরও দুজন। শুক্রবার রাতে খুলনা-মোংলা মহাসড়কের ফকিরহাটের খাজুরা নামকস্থানে ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে রাতেই খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নিহত অরুণ খুলনা শহরের ধর্মসভা ক্রসরোডের যোগেশ দাসের ছেলে। কাটাখালী হাইওয়ে থানার ওসি আজিজুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে মহেন্দ্রযোগে খুলনায় যাচ্ছিলেন অরুণ দাস ও তার বড় ভাই অশোক দাস (৫২)। পথে ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে খুলনা-মোংলা মহাসড়কের ফকিরহাটের খাজুরা এলাকায় তাদের বহনকারী মহেন্দ্র গাড়ির ওপর একটি বাবলাগাছ ভেঙ্গে পড়লে ঘটনাস্থলে অরুণ দাসের মৃত্যু হয়। আহত হয় নিহতের বড় ভাই অশোক দাস ও মহেন্দ্র চালক। তবে, আহত মহেন্দ্র চালকের নাম জানাতে পারেনি পুলিশ। নীলফামারীতে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ হাজার পরিবার স্টাফ রিপোর্টার নীলফামারী থেকে জানান, জেলার ডোমার, ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলায় বৃহস্পতিবার রাতের কালবৈশাখীর ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫০ হাজার পরিবার। এসব পরিবারের ঘরবাড়ি বিধ্বস্তসহ ১৭ হাজার পাঁচ শ’ হেক্টর জমির ফসল বিনষ্ট হয়েছে। ওই ঝড়ে বিদ্যুত ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়লে প্রায় ৯৬ হাজার পরিবার বিদ্যুতবিহীন রয়েছে। গাছ ও ঘর চাপায় নিহত হয়েছে ৭ জন। এছাড়া ফসলের ক্ষতির দৃশ্য দেখে কৃষক জ্যোতিময় নাথ (৬৫) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। ব্যাপক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ও এলাকার কৃষকের ফসল হানিতে ডোমার ও ডিমলা উপজেলাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন নীলফামারী-১ আসনের সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার। শনিবার দুপুরে জেলার ডোমার উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে দুর্যোগ পরবর্তী মতবিনিময় সভা ও সংবাদ সম্মেলনে তিনি ওই দাবি জানান। ওই সভায় ডোমার পিডিবির সহকারী প্রকৌশলী সাইমুল হক জানান, বৃহস্পতিবারের ঝড়ে ডোমার ও ডিমলা উপজেলায় ১১ কেভির একশত কিলোমিটার লাইনে ২২টি পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৭ হাজার গ্রাহক বিদ্যুতবিহীন আছেন। বিদ্যুত সরবরাহ স্বাভাবিক হতে আরও দুই থেকে তিন সময় লাগবে। অপরদিকে ডোমার পল্লী বিদ্যুতের উপ-মহাব্যবস্থাপক মোঃ আলম হোসেন জানান, ডোমার ডিমলায় এক হাজার ৩৫২ কিলোমিটার লাইনে নয়টি পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ৫৩ হাজার গ্রাহক বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। এর মধ্যে ৫০০ কিলোমিটার মেরামত করে প্রায় পাঁচ হাজার গ্রাহকের সংযোগ চালু করা সম্ভব হয়েছে। এদিকে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্র জানায়, ওই ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে জেলার ডোমার, ডিমলা এবং জলঢাকা উপজেলার ২২টি ইউনিয়নে ১৭ হাজার পাঁচশত হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হয়েছে। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১২ হাজার ৩৬ হেক্টর। এর মধ্যে বেরো ক্ষেত নয় হাজার ২৯৮ হেক্টর, আউশ ৫১ হেক্টর, পাট এক হাজার ৮৩৬ হেক্টর, বাদাম ১২০ হেক্টর, ভুট্টা ৪৮৮ হেক্টর, মরিচ ২৩ হেক্টর, সবজি ২১৭ হেক্টর এবং মুগডাল তিন হেক্টর। ক্ষয় ক্ষতির বিষয়ে নীলফামারী-১ আসনের সংসদ সদস্য আফতাব উদ্দিন সরকার দাবি করে বলেন, ‘আমার জীবনে এমন ঝড়-শিলাবৃষ্টি দেখিনি। ওই ঝড়ে ডোমার উপজেলার নয়টি এবং ডিমলা উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের কৃষক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কিভাবে ওই ক্ষতির মোকাবেলা করবেন সে পথ খুঁজে পাচ্ছেন না তারা।
×