ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অস্ট্রেলিয়া বাদে ক্রিকেট ইতিহাসে নিজেদের অভিষেক টেস্ট এখনও কোন দল জিততে পারেনি। আয়ারল্যান্ডের বেলায় এমন কিছু ঘটে কিনা, সেটিই এখন দেখার অপেক্ষা।

অভিষেকের আনন্দ ছুঁয়ে যাচ্ছে আইরিশদের

প্রকাশিত: ০৬:১১, ১২ মে ২০১৮

অভিষেকের আনন্দ ছুঁয়ে যাচ্ছে আইরিশদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিকেটের নব ইতিহাসে নাম লেখাল আয়ারল্যান্ড। ১১তম দল হিসেবে টেস্ট আঙ্গিনায় পা রাখল ইউরোপের ঐশ্বর্যমন্ডিত এ দেশ। যদিও শুক্রবার ডাবলিনে বৃষ্টির কারণে এ রিপোর্ট লেখার সময়ও খেলা শুরু হয়নি। তাতে কী? পাঁচদিনের ম্যাচ। সাদা পোশাকের আনন্দ ছুঁয়ে যাচ্ছে আইরিশ অধিনায়ক উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড থেকে শুরু করে প্রতিপক্ষ পাকিস্তান কাপ্টেন সরফরাজ আহমেদকেও। ‘আয়ারল্যান্ড ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত সকলের জন্য এটি অনেক বড় উপলক্ষ। অতীতে আমরা অনেক খেলোয়াড় পেয়েছি। কিছু খেলোয়াড় এখানেও আছে, আবার কিছু নেই। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে এবং স্বীকৃতি দিতে হবে এ পর্যায়ে আসতে তারা কি করেছেন। তাদের অবদান না থাকলে আমরা এমন ভাগ্যবান নাও হতে পারতাম। আইরিশদের জন্য এটা স্মরণীয় মুহূর্ত, আমাদের জন্য গর্বের।’ বলেন পোর্টারফিল্ড। আর সফরকারী পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজও রোমাঞ্চিত, ‘আইরিশদের এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে তাদের আমি অভিনন্দন জানাতে চাই এবং ম্যাচের জন্য শুভকামনা। আয়ারল্যান্ডের খেলোয়াড়রা প্রায়ই আইসিসির ওয়ানডে এবং টি২০ র‌্যাঙ্কিংয়ে জায়গা করে নেয়। আমার মতে তারা টেস্ট ক্রিকেটেও নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারবে।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘ঐতিহাসিক এই ম্যাচের অংশ হতে পারা আমাদের জন্য আনন্দের। আয়ারল্যান্ডের সমৃদ্ধ ক্রিকেট কাঠামো রয়েছে। তাদের বিপক্ষে খেলা সহজ হবে না।’ সাদা পোশাকে প্রথম হলেও ক্রিকেটে আইরিশরা মোটেই নতুন নয়। তাদের দেশে ক্রিকেটের প্রচলন সেই ১৭৩১ সাল থেকে। তবে স্বীকৃত ক্রিকেট খেলুড়ে দেশের তালিকায় স্থান ১৯৯৩ সালে। ওই বছর ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) সহযোগী সদস্য হয় দেশটি। আইসিসি ট্রফি, ইউরোপীয় ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশিপ এবং আইসিসি আন্তঃমহাদেশীয় কাপে অংশ নিয়ে ক্রিকেটে পথচলা শুরু। ওয়ানডে স্ট্যাটাস আরও অনেক পরে। ২০০৭ সালে প্রথম ওয়ানডে সিরিজ খেলার অনুমতি পাওয়ার পর থেকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাদের নব উত্থানের শুরু। আর ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাওয়ার ঠিক দশ বছর পর আফগানিস্তানের সঙ্গে ২০১৭ সালে টেস্ট মর্যাদা অর্জন করে আয়ারল্যান্ড। একসময় আয়ারল্যান্ড দলটি ছিল একঝাঁক ‘পার্ট টাইমার’ নিয়ে গঠিত। দলের সদস্যদের প্রায় সবাই অন্য পেশার পাশাপাশি শখের বসে ক্রিকেট খেলতেন। মাঠে অনুশীলনের যথেষ্ট সুযোগও পেতেন না তারা। ২০০৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়ে জিম্বাবুইয়ের সঙ্গে ম্যাচ ‘টাই’ দিয়ে শুরু। পরের ম্যাচে সবাইকে চমকে দিয়ে শক্তিশালী পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩ উইকেটের জয় তুলে নেয়। তখনও অপেশাদার ক্রিকেট দল আয়ারল্যান্ড। সেই বিশ্বকাপে অধিনায়কত্ব করা জনসন বলেন, ‘ওই জয়টা ছিল আমাদের কাছে অত্যন্ত স্পেশাল। তখন থেকে আমাদের জার্নিটা শুরু হয়েছিল। বাকি বিশ্ব তখন থেকেই আমাদের ক্রিকেট নেশন বলে চিনেছিল।’ অস্ট্রেলিয়া বাদে ক্রিকেট ইতিহাসে নিজেদের অভিষেক টেস্ট এখনও কোন দল জিততে পারেনি। ১৮৭৭ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের অভিষেক টেস্টে জয়ের স্বাদ পেয়েছিল অসিরা। আয়ারল্যান্ডের বেলায় এমন কিছু ঘটে কি-না, সেটিই এখন দেখার অপেক্ষা। নিজেদের অভিষেক টেস্ট হলেও আয়াল্যান্ডের এই দলে আছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিষ্ঠিত একঝাঁক অভিজ্ঞ তারকা ক্রিকেটার। সুতরাং অভিষেক স্মরণীয় করে রাখার সুযোগ পোর্টারফিল্ডদের সামনে।
×