ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযুদ্ধের সময় খালেদা বন্দী ছিলেন, নির্যাতিতও হয়েছেন

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১২ মে ২০১৮

মুক্তিযুদ্ধের সময় খালেদা বন্দী ছিলেন,  নির্যাতিতও হয়েছেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মালয়েশিয়ার নির্বাচনে মাহাথিরের বিজয়ে গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেছেন, এ নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিন। শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ সেন্টার’ নামক একটি সংগঠন আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার রাজনীতি ৩৪ বছর শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ফখরুল বলেন, একটি মামলায় পাঁচ বছরের সাজার রায়ের পর ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে বন্দী রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। তাকে অন্যায়ভাবে কারাগারে বন্দী রাখা হয়েছে। আমরা অবিলম্বে তাকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় ঐক্য গড়ার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকার আমাদের সবকিছু লুটে নিয়ে যাচ্ছে। তাই এ সরকারকে পরাজিত করতে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। এর পর নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ফখরুল বলেন, দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বারবার খালেদা জিয়ার নাম উচ্চারিত হচ্ছে। তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন হিসেবে দায়িত্ব পালনের ৩৪ বছর অতিক্রম করেছেন। তিনি গণতন্ত্রের জন্য মানুষের ভোট, বেঁচে থাকার, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য তার পুরো জীবন সংগ্রাম করে চলেছেন। জিয়াউর রহমান ৯ মাস যুদ্ধে থাকাকালে খালেদা জিয়াকে শিশু সন্তান নিয়ে নানান ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে জীবন পার করতে হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে তার যে অবদান তা কোনভাবেই কম নয়। তিনি নির্যাতিত এবং বন্দী ছিলেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, কারাগার থেকে খালেদা জিয়া যে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাতে আমরা জনগণের ঐক্য সৃষ্টি করে আমাদের ওপর যে ভয়াবহ দুঃশাসন চেপে বসে আছে তা সরাতে পারব। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলব, মালয়েশিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখুন। দুর্নীতি করলে, জনগণ ও গণতন্ত্রের বাইরে চলে গেলে সব শক্তি দিয়েও জনমতকে যে প্রতিহত করা যায় না তা প্রমাণ করেছে মালয়েশিয়ার জনগণ। রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য মামলা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে কারাগারে রাখা হয়েছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, সম্ভবত তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যাকে হাইকোর্ট জামিন দেয়ার পর তা স্থগিত করে সুপ্রীমকোর্ট শুনানি করছেন। তাকে কারাগারে আটকে রেখে আবারও একদলীয় একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার চক্রান্ত করছে আওয়ামী লীগ। পরাজয়ের ভয়ে আওয়ামী লীগ খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মাঠে নেই মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, এখন মাঠে আছে পুলিশ। পুলিশই আজকে আমাদের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সিটি কর্পোরেশনের ভোট নিয়ে নাটক করছে। গাজীপুর সিটির নির্বাচন নিয়ে এমন একটা কাজ করল, যেটা জনগণ বুঝে নিয়েছে যে কারা করছে, কীভাবে করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে পুরোপুরি অকার্যকর করে ফেলছে। আইনশৃঙঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন শেষ হয়ে গেছে। মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। অনেকে আছেন যাদের কথা বলতে ও লিখতে দেয়া হচ্ছে না। তাদের বলা হচ্ছে চাকরি চলে যাবে। সরকার নির্বাচন কমিশনকে ধ্বংস করে দিয়েছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, প্রতিদিন খুলনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এমনকি যারা বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনের এজেন্ট হবেন তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। নেতাকর্মীরা নির্বাচনের প্রচার কাজ করতে পারছে না। আওয়ামী লীগ পুলিশকে দিয়ে গোটা নির্বাচনী মাঠ দখল করে নিয়েছে। খুলনায় আমাদের দলের মেয়র প্রার্থী মঞ্জুর সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনি বলেছেন এরপরও শেষ দিন পর্যন্ত মাঠে থাকব এবং জয় লাভ করব। আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাবুল তালুকদার। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপেদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবেদ রাজা, ফরহাদ হোসেন আজাদ, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ। আন্দোলনে খালেদার মুক্তি নিশ্চিত করা হবে- মোশাররফ ॥ আন্দোলন করেই কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্মিলিত ছাত্র ফোরাম আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে ড. মোশাররফ বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য খালেদা জিয়াকে মাইনাস করতে চাচ্ছেন। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের সহ-সভাপতি নাহিদুল ইসলাম নাহিদ প্রমুখ।
×