ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শেরপুরে চাঁই বিক্রির ধুম

প্রকাশিত: ০৪:৫৫, ১২ মে ২০১৮

শেরপুরে চাঁই বিক্রির ধুম

গ্রাম-বাংলায় মাছ শিকারের এক অন্যতম বাহন চাঁই। বর্ষায় নিচু এলাকার আইল-বাতুরে মাছ শিকারে ব্যবহার করা ওই চাঁই শেরপুর অঞ্চলে ‘বুরুং’ নামে সমধিক পরিচিত। বর্ষা মৌসুম সামনে রেখে ওই চাঁই বা বুরুং বিক্রির ধুম পড়েছে শেরপুরের গ্রামীণ হাট-বাজারসহ শহরতলীতেও। বর্ষা মৌসুম না এলেও দফায় দফায় বর্ষণে খাল-বিল, নদী-নালা ও ডোবায় সমৃদ্ধ শেরপুরের নিচু এলাকাগুলোতে ক্ষেত-খোলায় চারদিকে থৈ থৈ পানি বিরাজ করছে। ওই পানিতেই প্রত্যন্ত অঞ্চলের লোকজন আইল-বাতুরে চাঁই বা বুরুং পেতে মাছ শিকার শুরু করে দিয়েছে। চাঁইয়ের ফাঁদে পুটি, গতা, বইটা, খলসে, ও দাড়কিনাসহ নানা জাতের ছোটমাছ শিকারও মিলছে। এজন্য ওইসব এলাকাতে মাছ শিকারে এখন সীমিত পরিসরে চাঁই ব্যবহার হচ্ছে। সরকারী-বেসরকারী কোন সাহায্য-সহযোগিতা ছাড়াই আদিবাসী সম্প্রদায়সহ স্থানীয় অধিবাসীদের একটি ক্ষুদ্র অংশের হাতে বাঁশ দিয়ে তৈরি হয় চাঁই। ওই শিল্পের সঙ্গে জড়িত হয়ে অনেকেই এখন জীবিকা নির্বাহ করছে। এদিকে বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে অনেকেই ওই চাঁই কিনে হাতের কাছে রেখে দিচ্ছেন। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলায় ওই চাঁই বিক্রি হচ্ছে দেদার। বড়-ছোট বিভিন্ন ধরনের চাঁই বাজারে বিভিন্ন দামে পাওয়া যাচ্ছে। একটি বড় চাঁই আড়াইশ থেকে ৩শ’ টাকা এবং ছোট চাঁই ১শ’ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরেজমিনে ঝিনাইগাতী সদরে গেলে দেখা যায়, সেখানে রাস্তার দু’পাশে বসা চাঁইয়ের বাজারে ক্রেতাদের প্রচ- ভিড়। সপ্তাহে ২ দিন রবিবার ও বুধবার বাজার হওয়ায় ক্রেতাদের ভিড়ে চাঁই বিক্রির ধুম পড়েছে। পছন্দের ও জুৎসই চাঁই পেতে অনেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষাও করছেন। চাঁই বিক্রেতা আয়নাল মিয়া জানান, বর্ষায় কৃষকসহ স্থানীয় অধিবাসীদের অনেকেই মাছ ধরার জন্য আগ্রহে বসে থাকে। এজন্য চাঁইয়ের চাহিদা বেশি। আমরাও চাঁই বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছি। বর্ষা যত এগিয়ে আসবে, ততই বিক্রি বাড়বে চাঁইয়ের। চাঁই ক্রেতা ফকির মিয়া জানান, মাছ ধরার একটি শখের সময় বর্ষা মৌসুম। চাঁই ক্র্য় করে নিয়ে যাচ্ছি। রাতের বেলায় মাছ ধরার ফাঁদটি পেতে রাখব। আর ভোরে গিয়ে তুলে দেখবো চাঁই ভর্তি মাছ। - রফিকুল ইসলাম আধার, শেরপুর থেকে
×