ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ধর্ম আমার ইসলাম, জাতিতে আমরা বাঙালী সা’দত আলি আখন্দ

প্রকাশিত: ০৪:৪৪, ১২ মে ২০১৮

ধর্ম আমার ইসলাম, জাতিতে আমরা বাঙালী  সা’দত আলি আখন্দ

৪৭ বছর আগে এসেছিল এক ১২ মে, তখন সেই রক্তঝরা-’৭১। আজ ২০১৮ এর ১২ মে আবার ফিরে এসেছে সেই দিন। আমার ’৭১ বছর বয়সী বাবা সা’দত আলি আখন্দের চলে যাবার ৪৭ বছরের সঙ্গে বাংলাদেশ আজ পার করে এসেছে ৪৭ বছর। তখন বিজয়ের আর ৭ মাস বাকি, না মাত্র ২১০ দিন পার করতে পারলেন না আজীবন এক কলমযোদ্ধা, লড়াকু লেখক সা’দত আলি আখন্দ। নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের জয়ের আগেই ’৭১-এর ১২ মে যুদ্ধরত রক্তাক্ত বাংলা ছেড়ে চলে গেলেন তিনি চির শান্তির জগতে। নিজে চোখে দেখে যেতে পারলেন না তার সারাজীবনের লালিত স্বপ্ন বাঙালীর স্বাধীনতা ও একটি ঠিকানা। না নিজ কানে শুনে যেতে পারলেন না তার শব্দসৈনিক সন্তান এম আর আখতার মুকুলের কণ্ঠের প্রতিদিনের শব্দযুদ্ধ চরমপত্র। না তিনি জেনে যেতে পারলেন না তারই সুযোগ্য দুই সন্তান চরমপত্র খ্যাত মোস্তফা রওশন আখতার মুকুলের ও গবেষক ড. মোস্তফা নূরউল ইসলামের (সদ্য প্রয়াত) বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্তির সাফল্য। ’৭১-এর ৭ মার্চের সেই বজ্রকণ্ঠের শপথের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমাদের ৭১ বছর বয়সী পিতা ঘর ছেড়ে পা বাড়ালেন অজানার পথে। মুক্তিযুদ্ধের দামামা তখন চরমে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে নিরপরাধ বাঙালীর ছোটাছুটি এদিন-ওদিক-সেদিক। আমার মা-বাবা পেছনে ফেলে গেলেন তাঁদের বাসভূমি সঙ্গে জীবনের ৪৫ বছরের ‘আখন্দ পরিবারের লাইব্রেরি’ যেখানে সঞ্চিত ছিল তাঁর সংগৃহীত দেশী ও বিদেশী বিরল পুস্তকাদি, ব্যক্তিগত চিঠিপত্র ডাইরি ও রচনাকর্ম। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বগুড়া শহরের তিনদিক থেকে আক্রমণ চালায় ও জলেশ্বরীতলার বাড়িটার সবকিছু লুট করে আগুন লাগিয়ে দেয়। কারণ, তাদের তালিকায় লেখা ছিল সা’দত আলি আখন্দের নাম তাদের জানা ছিল এই মানুষটির কোন বিশ্বাস, মানস ভাবনার ধারক, প্রচারক, স্টাবলিশমেন্ট বিরোধী ও মুক্তচিন্তার প্রগতিবাদী ছিলেন। ‘বীর বাঙালী অস্ত্রধর বাংলাদেশ স্বাধীন করো’- এই প্রত্যয়ে তিনি বুঝে নিয়েছিলেন এখনই প্রকৃত সময় ৭ কোটি বাঙালীর সামনে এক দুঃসাহসী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার। মার্চের শেষ থেকে মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আমার বাবা ও মা ছুটে চলেছেন এ গ্রাম থেকে অন্য এক গ্রাম নানা অজানা-অচেনা জায়গায়। এলো মে মাসের ১২ তারিখ প্রায় আড়াই মাস ধরে এক মহাযুদ্ধ করে গেলেন ৭১ বছর বয়সী এক যোদ্ধা তাঁর জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। তখন আমার তাঁর ১০ বছর সন্তানের যুদ্ধের দামামার মাঝে কে কোথায় ছিটকে পড়েছি জানি না। কেউ কেউ দেশের প্রত্যন্তঞ্চলে লুকিয়ে, সেজ ভাই এম আর আখতার মুকুল কলকাতায় স্বাধীন ভাষা বেতার কেন্দ্রে, বড় ভাই প্রফেসর মোস্তফা নূরউল ইসলাম উচ্চশিক্ষার্থে বিলেতে, বড় বোন তাঁর স্বামীর চাকরির সুবাদে পাকিস্তানের ইসলামাদে গৃহবন্দী, আমিও বৈমানিক স্বামী, সন্তানসহ বন্দী জীবনের মাঝে। কেউ জানতে পারিনি এই চরম দুঃসংবাদ যে কবে ও কখন আমরা পিতা হারা হয়েছি। যখন সংবাদটি এসে পৌঁছলো তখন তাকিয়ে দেখি ক্যালেন্ডারের বেশ কয়েকটি পাতা বদলে গিয়েছে ততদিনে। কে এই সা’দত আলি আখন্দ যাঁর নাম নিয়ে প্রতিবছর ১২ মে দিনটি আমাদের মাঝে ফিরে ফিরে আসে। বাংলা একাডেমি ‘সা’দত আলি আখন্দ সাহিত্য স্মৃতি পুরস্কার’ ঘোষণা করে যেখানে বাংলাদেশের প্রথিতযশা লেখক-সাহিত্যিকরা প্রতিবছর তাঁর নামের পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৯ সালে বাংলা একাডেমির ফোকলো বিভাগ সা’দত আলি আখন্দের সারাজীবনের রচনা, প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত চরিত্রাবলী বিলেত ও মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে সংগৃহিত বেশ কয়েকটি দুষ্প্রাপ্য দুর্লভ গ্রন্থ, হাতে লেখা পা-ুলিপি, কবিতা, ছোটগল্প প্রবন্ধ এমনকি তাঁর ছাত্র বয়সের কবিতা সবকিছু যোগাড় করে। তারা কঠিন এক গবেষণা করে ৮৬২ পাতার এক বিশাল সঙ্কলন সাদত আলি আখন্দ রচনাবলী প্রকাশ করে। এভাবে শত বছর আগে সাদত আলি আখন্দের রচনাবলীর মাঝে তাঁর চিন্তাধারা, মাহসনসভাবনা ও চিন্তা-চেতনা শক্তিকে বর্তমানে ফিরিয়ে এনে বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়ায় বাংলা একাডেমি সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। ইতিহাসের ছাত্র ইতিহাস গবেষক সাদত আলি আখন্দকে জানতে, চিনতে ও বুঝতে হলে ইতিহাস সিঁড়ি বেয়ে ফিরে যেতে হবে গত শতাব্দীর গোড়ায় ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার আমল। তখন সময়কাল ১৯২৬-৩৬ চারদিকে ধর্মান্ধতায় আঁধারে ভরা সমাজ। সবকিছুই অস্বচ্ছ অস্পষ্টও অদৃশ্য। যদিও এই ভূ-খ-ে বসবাসকারী বাঙালী মুসলমানদের বোঝানো হতো জন্মগ্রহণকারী এই মাটি তাদের আসল দেশ নয়। দেশ তাদের পশ্চিমের আরব-ইরান আফগানিস্তান, সিরিয়া বা অন্য কোথাও। জন্মের পরই মায়ের মুখের ভাষা বাংলা হলো ‘কুফরি জবান’। বাঙালী মুসলিমদের মুখের ভাষা হবে হয় আরবী অথবা ফার্সী বা উর্দু। এমনি এক অস্বাভাবিক অস্থিরতা ও সম্ভাবনাহীন অসহনীয় ব্রিটিশ আমলে আমাদের পূর্ব পুরুষ কয়েকজন মুক্তবুদ্ধি আন্দোলনকারী সাহসী ভূমিকায় এগিয়ে আসেন সওগাত গোষ্ঠীর তরুণ লেখক সাদত আলি আখন্দ তাদের অন্যতম। সাদত আলি আখন্দ প্রাথমিক শিক্ষালাভ করেন বগুড়ার মহাস্থানগড়ের ওপর চিংগাসপুর গ্রামের কাছাকাছি পাঠশালায়। তাঁর শিক্ষক পিতা ও মার অত্যন্ত মনোযোগী এবং তৎপর ছিলেন মেধাবী ছেলের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য। এমনকি ছেলের পড়ালেখার ব্যাপারে প্রত্যেক শিক্ষককে প্রয়োজনে প্রহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ১৯১৬ সালে তিনি প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাস করে হাজী মোহাম্মদ মহসীন বৃত্তি লাভ করেন। উচ্চশিক্ষার্থে এবার তিনি কলকাতার সেন্ট জেডিয়ার্স কলেজে ভর্তি হন এবং বেকার হোস্টেল থেকে পড়াশোনা করেন। এরপর ১৯১৮ সালে ওখান থেকে প্রথম বিভাগে আইএ পাস করেন। ইতিহাসের প্রতি প্রবল আগ্রহ থাকায় ইতিহাসে অনার্স নিয়ে তিনি কলকাতার সেন্টপলস্ কলেজে ভর্তি হন এবং কারমাইকেল হোস্টেল থেকে পড়াশোনা চালান। তবে আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে তাকে রাজশাহী গবর্মেন্ট কলেজে ভর্তি করা হয় এবং সেখান থেকে তিনি প্রথম স্থানে বিএ অনার্স ডিগ্রী লাভ করেন। পুলিশ বিভাগে যোগদানের পর যখন তিনি কলকাতায় ইনটেলিজেন্স ব্রাঞ্চে কর্মরত ছিলেন সে সময়ে তিনি রিপন কলেজে ভর্তি হন এবং ১৯৩৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পেশায় পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তা, একজন অত্যন্ত সৎ দায়িত্ববান ও দক্ষ অফিসার হিসেবে সা’দত আলি আখন্দ পুলিশ বিভাগে সুদীর্ঘ ৩১ বছর অত্যন্ত কৃতিত্বের সঙ্গে চাকরি করেছেন। তবে এই বিভাগের সকল লোভ-লালসা, দুর্নীতি এড়িয়ে কাজ করতে যেয়ে একজন যেমন প্রশংসা পেয়েছেন তেমনি হয়েছেন বিরাগভাজন। প্রতিদিন চোর, ডাকাত, গুন্ডা আর বদমাশদের নিয়ে কারবার করতে গিয়ে এখন খাঁটি আদর্শ বাঙালী পরিচ্ছন্ন মুক্তবুদ্ধির চিন্তার মননশীল মানুষ হিসেবে বারবার বিবেকের কাছে হোঁচট খেতে হয়েছে তাঁকে। খাকি পোশাকের এ ধরনের জীবনের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারেননি তিনি। চাকরি জীবনের ৩১ বছরই তাঁর কাছে ‘অন্যদিন-অন্যজীবন’ এর মতো মনে হয়েছে। নিজেকে তিনি অনুভব করেছেন। ‘ Square peg in a round hole ’ হিসেবে তবে নিজের সৎ চেষ্টা, নিষ্ঠা ও নৈপুণ্য বলে পুলিশের উচ্চপদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। পঞ্চাশ দশকের শেষে এবার তিনি তাঁর দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের বগুড়া কোর্টে আইনজীবী হিসেবে স্বাধীন পেশায় যোগদান করেন। কিন্তু আইনজীবী হিসেবে সা’দত আলি আখন্দ ছিলেন আগের মতোই সৎ-সত্যবাদী, নির্ভীক, স্পষ্টবাদী এবং আত্মবিশ্বাসী। তবে আইন ব্যবসার মিথ্যা কপটতার জ্বালে তিনি নিজেকে জড়াতে রাজি ছিলেন না। ওকালতিতে তাঁর অসীম উৎসাহ উদ্দীপনা থাকলেও শেষপর্যন্ত তিনি তাঁর আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়ে পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারলেন না। আইনের ফাঁকে আসামিকে অপরাধ থেকে মুক্তি দিতে যে সকল অনৈতিক পথ অবলম্বন করতে হয় তিনি সেগুলোর সঙ্গে একমত হতে পারতেন না। ফলে আইনজীবীর কর্মজগত থেকে স্বেচ্ছায় নিজেকে গুটিয়ে নেন। তবে পুলিশের খাকি পোশাক এবং আইনজীবীর কালো গাউনের আড়ালে সা’দত আলি আখন্দের ছিল এক পরিচ্ছন্ন, সাহিত্যমোদী সৃজনশীল হৃদয়- যার লালন তাঁর জীবনের প্রথম থেকে। ম্যাট্রিক পরীক্ষার পর অবসর সময়ে নিজ হাতে একটি পা-ুলিপি তৈরি করেছিলেন যার তিনটি বিভাগে ছিল কবিতা, গল্প ও প্রবন্ধ। তখনকার ব্রিটিশ ইন্ডিয়া, প্রশাসনিক প্রদেশ বঙ্গদেশ-সেই বঙ্গদেশের বাসিন্দার সাধারণ বঙ্গীয় মসুলমান। আমাদের পূর্ব পুরুষের মুক্তচিন্তার কয়েকজন মানুষ তার অভিযাত্রী হয়ে নেমে পড়েছিলেন। চারদিক আচ্ছন্ন করে রাখা ধর্মাত্ব প্রতিকূলতাকে তারা দুঃসাহসিক চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন। তাই বারবার প্রশ্ন ও স্পষ্ট জবাবের সন্ধান-‘বাঙালী মুসলিম কে? ধর্ম বাট ইসলাম তাহলে রিলিজিয়ন আর ন্যাশনাজিম কি সার্ম্যসক। বাঙালী মসুলমানদের জাতীয় পরিচয় কি’? এরই ধারাবাহিকতায় কাজী নজরুল ইসলাম ১৯৪২ সালে নবযুগ পত্রিকায় লিখলেন ‘বাংলা বাঙালীর হোক-বাংলার জয় হোক-বাঙালীর হয় হোক।’ ইতিহাসের আরেক পর্ব ১৯৪৭ সালে দেড় দুই হাজার মাইলের ফারাকে আজব উদ্ভট যে, পাকিস্তান গ্রাস করে রেখেছিল আমার বাংলা বাঙালিত্বকে। ধর্মীয় স্বতন্ত্রের ভিত্তিতে সদ্যগঠিত পাকিস্তানের নাগরিক ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ পরের বছর ১৯৪৮ সলেই জানিয়ে দিলেন ‘আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালী।’ যে দেশে আমরা ৭০০ বছরের বেশি সময় বসবাস করে এসেছি, জন্মের পরই যে ভাষায় আমরা ঘরে বাইরে, আনন্দে, সুখে-দুঃখে ব্যবহার করে এসেছি, সেই ভাষায় কথা বলার অধিকারের জন্য লড়াই ’৫২ সালে বাংলার ছেলেরা বুকের রক্ত ঢেলে দিলে তারই ফলশ্রুতিতে বাংলা হলো রাষ্ট্রভাষা। এরই স্রোতে এলো ’৭১- ততদিনে কোটি বাঙালীর চেতনায় পৌঁছে গিয়েছে সা’দত আলি আখন্দের সেই ঠিকানার সন্ধান আর তাই কান পাতলে শোনা যায় কোটি বিশ্বাসের সেই উচ্চারণ ‘তোমার আমার ঠিকানা-পদ্মা-মেঘনা-যমুনা।’ আবারও সিঁড়ি বেয়ে চলে যাই সেই ১৯২৯ সালে সা’দত আলি আখন্দের সাড়া জাগানো প্রবন্ধ ‘বাঙালী’ যেখানে তিনি স্বপ্নের জাল বুনেগিয়েছিলেন সেখানে লেখা ‘গোটা বাংলাদেশে এমন একটা প্লাটফর্ম থাকা উচিত যেখানে বাংলাদেশের সকল ধর্মের মানুষ নিঃসংকোচে এসে পাশাপাশি দাঁড়াতে পারেন। ধর্ম সেখানকার মাপকাঠি, হবে না শুধু বাঙালী বলেই তারা সেখানে আসন পাবেন।’ তাঁর চলে যাওয়ার আজ ৪৭ বছর হলেও বাংলাদেশ তাকে ভুলে যায়নি। ভুলতে পারেনি। আজও বাংলা একাডেমির বই মেলার স্টলে সাজানো ‘সা’দত আলি আখন্দের রচনাবলী যা আমাদের তরুণ সমাজকে জানিয়ে দেয় আমাদের পূর্ব পরুষরা কি ভাবতেন কি ছিল তাঁদের পথ নির্দেশনা। আজও পাঠকদের কাছে সা’দত আলি আখন্দের সাহসী লেখনী বার বার মনে করিয়ে দেয় ‘ধর্ম আমার ইসলাম আর জাতিতে আমরা বাঙালী।’ প্রায় ১১৮ বছর আগে জন্ম নেয়া সা’দত আলি আখন্দের জীবনের সব গুণাবলী আলোচিত হোক সবখানে-যেমন তিনি সততা ও প্রত্যয়ের সঙ্গে এক সৎ-সুন্দর ও নির্মল ও নির্লোভ জীবনযাপন করেছেন তেমনি তাঁর অপরিসীম মেধা ও মনন, অসীম চেষ্টা এবং অধ্যাবসায় জীবনযাপন করেছেন তেমনি তাঁর ধারা এক অভিন্ন লক্ষ্যে পৌঁছে গেছেন। সংযম, নিয়মানুবর্তিতা, কঠোর শ্রম ও নৈতিকতা তাঁকে নিয়ে গিয়েছে গ্রাম থেকে শহরে রাজধানী থেকে বিলেত ও মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল পাঠাগারে। সা’দত আলি আখন্দের এই পরিপূর্ণ জীবন সম্বন্ধে স্কুল-কলেজের রচনা গ্রন্থ-কবিতা প্রবন্ধ হতে পারে এবং আরও হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের গবেষণার বিষয়বস্তু। যতই দিন যাচ্ছে ততই সা’দত আলি আখন্দকে যেন এক কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ কাটিয়ে পরিষ্কার সূর্যের আলোয় সৃষ্ট চেনা যাচ্ছে। আজ ১২ মে আমাদের পরিবারের শোক পরিণত হোক জাতীয় শক্তিতে যা সঠিক পথ দেখাবে বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের তরুণ মুসলিমদের।
×