ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিপ্লবী গার্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ

ছয় ইরানী ও তিন কোম্পানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত: ০৪:৩৯, ১২ মে ২০১৮

ছয় ইরানী ও তিন কোম্পানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের  নিষেধাজ্ঞা

ইসলামিক রেভ্যুলশনারি গার্ডের (আইআরজিসি) সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ছয় ইরানী ও তিন কোম্পানির ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার দুই দিন পর যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ নতুন এ নিষেধাজ্ঞা জারি করল। মার্কিন ডলারে আইআরজিসির প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে সহায়তা করায় ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংককেও এ নিষেধাজ্ঞায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।- খবর বিবিসি। যেসব ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে, তাদের নাম প্রকাশ করেনি ট্রেজারি বিভাগ। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, এই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোই আইআরজিসির জন্য মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করছে। যা দিয়ে ইরান মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে প্রভাব বিস্তার ও ‘ক্ষতিকর কার্যক্রম’ চালাচ্ছে; ওই প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতেই যুক্তরাষ্ট্রের এ শাস্তি, জানিয়েছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মনুচিন। পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ইরানের ওপর নতুন করে বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিতে ৯০ থেকে ১৮০ বা এর চেয়েও বেশি দিন লাগতে পারে বলে ধারণা দিয়েছিলেন ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তার আগেই আইআরজিসির সঙ্গে সম্পর্কের অজুহাতে ছয় ব্যক্তি ও তিন প্রতিষ্ঠানের ওপর এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা তেহরানের ওপর চাপ বাড়াবে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ইরানি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কোন ধরনের লেনদেন করতে পারবেন না মার্কিন নাগরিকরা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকেও নিষেধাজ্ঞায় থাকা ব্যক্তি ও কোম্পানির সঙ্গে বাণিজ্যে বাধা দেয়া হবে। আঞ্চলিক বিভিন্ন গোষ্ঠীকে অর্থ ও অস্ত্র দেয়াসহ আইআরজিসির নানা ধরনের ক্ষতিকর কার্যক্রমে সহায়তা করতে ইরানের শাসকগোষ্ঠী ও এর কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে মার্কিন ডলার সংগ্রহ করছিল। আইআরজিসির রাজস্বের উৎস ও গন্তব্যের প্রবাহ বন্ধ করাই আমাদের উদ্দেশ্য বিবৃতিতে বলেন- মনুচিন। ইরানের ইসলামী শাসনব্যবস্থার প্রতিরক্ষায় ১৯৭৯ সালে আইআরজিসি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি ইরানের অন্যতম বৃহৎ সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বাহিনী। বৃহস্পতিবার আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় সুনির্দিষ্টভাবে আইআরজিসির বিদেশী শাখা কুদস ফোর্সকেই লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে। ট্রাম্প এই কুদস ফোর্সকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত সন্ত্রাসী বাহিনী ও মিলিশিয়া’ অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন। গত বছরের অক্টোবরেও তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস থেকে দেয়া এক বক্তব্যে ট্রাম্প ২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে তেহরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসার ঘোষণা দেন। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার শর্তে তেহরানের পরমাণু কর্মসূচীর লাগাম টানতে ২০১৫ সালে নিরাপত্তা পরিষদের ৫ স্থায়ী সদস্য ও জার্মানির সঙ্গে দশ বছর মেয়াদি একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল ইরান। চুক্তি অনুযায়ী গত তিন বছর ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে ব্যবহৃত সেন্ট্রিফিউজের সংখ্যা কমিয়ে আনার পাশাপাশি তেহরান তাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো নিয়মিত পরিদর্শনের জন্য আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ ও পরিদর্শকদেরও নিয়মিত অনুমতি দিয়ে এসেছে। বারাক ওবামা আমলে স্বাক্ষর হওয়া ওই চুক্তি নিয়ে প্রথম থেকেই সমালোচনা মুখর ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
×