ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাড্ডায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সন্ত্রাসী নিহত

প্রকাশিত: ০৮:০৪, ১১ মে ২০১৮

বাড্ডায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সন্ত্রাসী  নিহত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর বাড্ডার ডিবি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে সাফায়েত হোসেন তামরিন ওরফে রানা (২৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। ডিবি পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মোঃ মশিউর রহমান জানান, তার বিরুদ্ধে চারটি হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ডজনখানেক মামলা রয়েছে। তিনি জানান, বুধবার রাতে বাড্ডায় কেবল অপারেটর আব্দুর রাজ্জাক (৩০) খুন হওয়ার পর জনতা দুর্বৃত্তদের ধাওয়া করে। পরে ধাওয়ার মুখে মধ্য বাড্ডার একটি ভবনে ঢুকে পড়ে দুর্বৃত্তরা। এরপর পুলিশ তাদের ঘিরে ফেলে ও ঘণ্টাব্যাপী অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে আটক করে। ধরা পড়ার পর প্রাথমিকভাবে তারা জানায়, তাদের সঙ্গে আরও কয়েকজন সহযোগী ছিল। ডিসি মোঃ মশিউর রহমান জানান, জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রানাকে নিয়ে তার অন্য সহযোগীদের গ্রেফতারের জন্য ভোরের দিকে আফতাব নগরের এল ব্লকে যায় গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। ভোর ৪টা ২০ মিনিটের দিকে ওই এলাকায় ওঁৎ পেতে থাকা রানার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি শুরু করে। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে রানা গাড়ি থেকে নেমে পালানোর চেষ্টা করে। গোলাগুলি থামার পর তাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। ভোর ৫টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রানাকে মৃত ঘোষণা করেন। মশিউর রহমান জানান, রানার বাসা সাভারে হলেও সে দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বাড্ডা-রামপুরা এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। তার বিরুদ্ধে রমনা, বাড্ডা ও গুলশান থানায় অন্তত চারটি হত্যা মামলা রয়েছে। এছাড়া অস্ত্র, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে আরও অন্তত আটটি মামলা রয়েছে। এদিকে নিহত কেবল অপারেটর আব্দুর রাজ্জাক বাড্ডা এলাকায় ‘ম্যাক্স’ নামের একটি দোকান দিয়ে ব্যবসা করতেন। বাড্ডার আলাতুননেসা স্কুল রোডের এক বাসায় থাকতেন তিনি। বাড্ডা থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী জানান, দক্ষিণ বাড্ডার জাগরণী ক্লাবের সামনে বুধবার রাতে রাজ্জাকের ওপর গুলি চালানো হয়। রাত ১০টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই থানার এসআই আব্দুল মান্নাফ জানান, রাজ্জাক খুন হওয়ার পর স্থানীয় জনতার ধাওয়ায় তিন সন্দেহভাজন যুবক স্থানীয় একটি ইন্টারনেটের দোকানে ঢুকে যায়। তখন স্থানীয়রা বাইরে থেকে ওই ঘরে তালা লাগিয়ে দেয়। পরে থানা পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ ও সোয়াতের সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন। পরে অস্ত্রসহ তিনজনকে আটক করা হয়। ডিশ-নেট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে খুন হয় বাবু ॥ রাজধানীর বাড্ডায় ডিশ ও ইন্টারনেটের ব্যবসার নিয়ন্ত্রণের দ্বন্দ্বের জের ধরে ডিশ ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক বাবুকে (৩০) হত্যা করা হয়। পুলিশ জানায়, তিন দিন আগে বিদেশ থেকে রবিন গ্রুপের প্রধানের নির্দেশে বাবুকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়। এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বাবু হত্যার ঘটনায় থানায় কোন মামলা হয়নি। এদিন বিকেলে বাড্ডা থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান,মালয়েশিয়া অবস্থানরত রবিন গ্রুপের প্রধানের নির্দেশ আব্দুর রাজ্জাককে হত্যা করা হয়। তিন দিন আগেও সেখান থেকে নির্দেশ পাওয়ার পর তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয় বলে তদন্তে বেরিয়ে আসে। বাড্ডা থানা পুলিশ জানায়, নিহতের স্বজনরা থানায় আসলেই মামলা নেয়া হবে। সেক্ষেত্রে হত্যা ও অস্ত্র আইনে পৃথক মামলা হবে। এলাকাবাসীরা জানান, এলাকায় কোটি কোটি টাকার ডিশ ও ইন্টারনেট ব্যবসা হয়। এ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের জন্য বাবু, রবিন গ্রুপসহ কয়েকটি গ্রুপ সক্রিয় ছিল। অনেক সময় তাদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
×