ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অনুর্ধ-১৮ ফুটবল টুর্নামেন্ট

ব্রাদার্সকে হারিয়ে ফাইনালে ফরাশগঞ্জ

প্রকাশিত: ০৬:৫৩, ১১ মে ২০১৮

ব্রাদার্সকে হারিয়ে ফাইনালে ফরাশগঞ্জ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলে সিনিয়র দলটি অবনমনের লজ্জায় পড়ে, অথচ তাদের যুব দলটিই কিনা ওয়ালটন অনুর্ধ-১৮ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওঠে। এমন বিস্ময়কর-কৃতিত্বপূর্ণ ঘটনারই জন্ম দিয়েছে ‘লালকুঠি’ খ্যাত ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব। বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রথম সেমিফাইনালে তারা তীব্র উত্তেজনাপূর্ণ এবং প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলায় টাইব্রেকারে (সাডেন ডেথে) ৫-৪ গোলে হারায় আগের আসরের রানার্সআপ গোপীবাগের ‘দ্য অরেঞ্জ ব্রিগেড’ খ্যাত ব্রাদার্স ইউনিয়ন লিমিটেডকে। নির্ধারিত এবং অতিরিক্ত সময়ের খেলা গোলশূন্য ড্র ছিল। টাইব্রেকার শুরু হলে উভয় দলই প্রথম পাঁচটি শটে ৪টি করে গোল করে। ফলে শুরু হয় টাইব্রেকারের দ্বিতীয় পর্বÑ সাডেন ডেথ। প্রথম শটে ব্রাদার্সের ইমরান বল জালে পাঠাতে ব্যর্থ হলেও ফরাশগঞ্জের মোঃ আসলাম গোল করে ফাইনালে পৌঁছে দেন নিজেদের দলকে। পুরো ম্যাচে দু’দলই সমানতালে খেলে। আক্রমণও করে। কিন্তু ফরোয়ার্ডদের ফিনিশিং এবং গোলরক্ষকদের নিপুণতায় কেউই গোল পায়নি। উভয়দলই গতিশীল ফুটবল খেলার চেষ্টা করে। কিন্তু তাতে বাদ সাধে বৃষ্টিভেজা পিচ্ছিল মাঠ। মাঝে মাঝেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফুটবলাররা মাঠে চিৎপটাং হয়ে যাচ্ছিলেন। ম্যাচের ৩১ মিনিটে বক্সে ঢুকে ব্রাদার্স ফরোয়ার্ড আরমান রহমান জোরালো শট নেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ব্রাদার্সের বল ডান পোস্টে লেগে ঢোকেনি জালে। ৩৬ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে ফরাশগঞ্জের মিডফিল্ডার জীবন মিয়ার ক্রস বক্সে পেয়ে শট নেন রফিকুল ইসলাম। কিন্তু অল্পের জন্য বল চলে যায় বারের ওপর দিয়ে। ৬১ মিনিটে বক্সের ভেতরে ঢুকে বাঁ প্রান্ত থেকে ব্রাদার্সের নাইম হোসেনের গড়ানো ক্রস হাবিবুর রহমান অপু প্লেসিং করার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেই শট কিন্তু ঠিকমতো লাগাতে না পারায় বল পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। আক্ষেপে পোড়ে ব্রাদার্স। ৭৩ মিনিটে ফরাশগঞ্জের বদলি ফরোয়ার্ড মাসুম মিয়া বল নিয়ে বক্সে ঢুকে গড়ানো শট নেন। কিন্তু দারুণ দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে বল গ্রিপে নেন ব্রাদার্স গোলরক্ষক। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ম্যাচের ফল ছিল গোলশূন্য। ইনজুরি টাইম চলছে। এমন সময়ই হঠাৎ লোডশেডিংয়ের কারণে স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইট নিভে যায়। পুরো স্টেডিয়াম অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। তখনও অবশ্য মোটামুটি দিনের আলো ছিল। তাই কোনরকমে ইনজুরি টাইমের ম্যাচ শেষ করেন রেফারি। এরপর বিরতিতে চলে যায় দু’দল। তারা অপেক্ষা করতে থাকে কখন বিদ্যুত আসবে। কারণ নির্ধারিত সময় ম্যাচ গোলশূন্য থাকায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিট ম্যাচ খেলতে হবে। বাইলজ অনুযায়ী ৪০ মিনিট অপেক্ষা করার পর যদি বিদ্যুত না আসে তবে ম্যাচের অবশিষ্ট অংশের খেলা অনুষ্ঠিত হবে পরদিন সকালে। এ অবস্থায় সবাই ধারণা করছিল হয়তো অতিরিক্ত সময়ের ম্যাচ পরদিনই খেলতে হবে। কিন্তু ২২ মিনিটের মাথায় হঠাৎই আগমন ঘটে বিদ্যুত ‘মহাশয়ের’। হাঁফ ছেড়ে বাঁচে সবাই। আবারও আলোকিত হয় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম। মাঠে গড়ায় অতিরিক্ত সময়ের ম্যাচ। ১০১ মিনিটে ব্রাদার্সের আলমাস ফাঁকা পোস্টে বল পেয়ে একেবারে কাছে গিয়েও সুযোগ হাতছাড়া করেন। তার শট লাগে ডান পোস্টে। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের প্রথমও দ্বিতীয় ১৫ মিনিটেও ম্যাচের ফল ছিল গোলশূন্য (০-০)। ফলে টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচ। সেখানেও ৪-৪ গোলে ড্র হলে সাডেন ডেথে নির্ধারিত হয় ম্যাচের ভাগ্য। সাডেন ডেথে ব্রাদার্সের ইমরানের শট পোস্টে লেগে ফেরত আসে। কিন্তু সুযোগ হাতছাড়া করেননি ফরাশগঞ্জের আসলাম। তার গোলেই ফাইনাল নিশ্চিত হয় পুরানো ঢাকার দলটির। একই ভেন্যুতে আজ বিকেল সাড়ে চারটায় দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ঢাকা আবাহনীর মুখোমুখি হবে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ।
×