ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অধ্যাপক মুস্তাফা নূরউল ইসলামের আজ দাফন

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ১১ মে ২০১৮

অধ্যাপক মুস্তাফা নূরউল ইসলামের আজ দাফন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজ শুক্রবার মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হবে জাতীয় অধ্যাপক মুস্তাফা নূরউল ইসলামকে। এর আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাঁর প্রতি শ্র্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করবে সর্বস্তরের মানুষ। অনুষ্ঠিত হবে দুই দফা জানাজা। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার নিজ বাসভবনে ৯২ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মুস্তাফা নূরউল ইসলাম। বর্তমানে তার শবদেহ রাখা হয়েছে এ্যাপোলো হাসপাতালের হিমাগারে। মুস্তাফা নূরউল ইসলামের পরিবারের পক্ষ থেকে ভ্রাতুষ্পুত্রী সামিয়া মহসীন বৃহস্পতিবার জনকণ্ঠকে জানান, এ্যাপোলো হাসপাতালের হিমাগার থেকে প্রথমে তার মরদেহ গোসল করানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হবে গুলশানের আজাদ মসজিদে। সেখান থেকে নিয়ে আসা হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের তত্ত্বাবধানে সেখানে শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সর্বসাধারণ শ্রদ্ধা নিবেদন করবে জাতির এই বাতিঘরকে। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাদ জুমা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আরেক দফা জানাজা শেষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে বিশেষভাবে সংরক্ষিত স্থানে তাকে দাফন করা হবে। তিনি জানান, মুস্তাফা নূরউল ইসলামের বড় ছেলে মোস্তাফা ইমরুল কায়েস বর্তমানে দেশে রয়েছেন। ছোট ছেলে রাজন ফিরবেন শুক্রবার সকালে। কানাডা প্রবাসী দুই মেয়ে আতিয়া ইয়াসমিন ও নন্দিতা ইয়াসমিন ফিরবেন শনিবার। তাদের সবার সম্মিলিত সিদ্ধান্তেই শুক্রবার তার দাফন করা হবে। এদিকে, মুস্তাফা নূরউল ইসলামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আখতারুজ্জামান। শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, তার মৃত্যুতে দেশের সাহিত্য অঙ্গনে অপূরণীয় ক্ষতি হলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভাষা আন্দোলন থেকে মহান মুক্তিযুদ্ধ প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামের সঙ্গে তিনি সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। ষাটের দশকের আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, একষট্টি’র প্রবল প্রতিকূলতার মধ্যে রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনসহ সকল প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক-সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলেন মুস্তাফা নূর-উল ইসলাম। বঙ্গবন্ধুর ডাকে ‘সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তান রুখিয়া দাঁড়াও’ আন্দোলনেও তিনি অনন্য অবদান রাখেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, অধ্যাপক মুস্তাফা নূরউল ইসলাম ছিলেন একজন নিবেদিত প্রাণ ভাষা সৈনিক, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের প্রবাদ পুরুষ। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ একজন বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প-িত ব্যক্তিকে হারাল। এ দেশের জন্য তার অবদান জাতি চিরকাল শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। শোকসভা ॥ বাংলা একাডেমির প্রথম মহাপরিচালক মুস্তাফা নূরউল ইসলাম স্মরণে আগামী ১৪ মে বিকেল সাড়ে ৪টায় একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে শোকসভার আয়োজন করেছে। এতে সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
×