ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

গণগ্রন্থাগারে তিন দিনের রবীন্দ্র সঙ্গীত উৎসব শুরু

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১১ মে ২০১৮

গণগ্রন্থাগারে তিন দিনের রবীন্দ্র সঙ্গীত উৎসব শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাঙালীর জীবনে যেন প্রতিদিনই বিরাজমান রবীন্দ্রনাথ। গান-কবিতায় কিংবা শিল্প-সাহিত্যে হয়ে আছেন মননের সঙ্গী। সেই নিত্যদিনের মতো বৃহস্পতিবারও শ্রোতা-দর্শক আলোড়িত হলো বিশ্বকবির সৃষ্টিসম্ভারে। বৈশাখী সন্ধ্যায় কবিগুরুর গানে গানে কেটেছে মধুর সময়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত উৎসবের সূচনা হয় এ দিন। ত্রিশতম বারের মতো এ উৎসবের আয়োজন করেছে জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা। এবারের প্রতিপাদ্য ‘...সবার মাঝে আমার সঙ্গে থাক,/আমায় সদা তোমার মাঝে ঢাক,/নিয়ত মোর চেতনাÑ’পরে রাখ/ আলোকে-ভরা উদার ত্রিভূবন।’ সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে চলমান উৎসবের শেষ দিন শনিবার বিকেলে সম্মাননা জানানো হবে প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী মিতা হককে। বৃষ্টিস্নাত মেঘলা দিনের সন্ধ্যায় গণগ্রন্থাগারের মুক্তাঙ্গনে ‘ভুবনেশ্বর হে, মোচন কর’ বন্ধন সব মোচন কর হে’ পূজা-প্রার্থনা পর্যায়ে এই গানের সুরে বর্ণিল বেলুন উঁড়িয়ে উৎসব উদ্বোধন করেন কথাশিল্পী অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। এ সময় উদ্বোধকের সঙ্গী হয়েছিলেন সংগঠনের সভাপতি তপন মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজেদ আকবর। এবারের উৎসব সজ্জিত হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উৎসব-পার্বণ, প্রেম-পূজা-প্রকৃতি ও স্বদেশ পর্যায়ের গানে গানে। প্রথম দিনের অধিবেশনে পরিবেশিত হয় পূজা, প্রেম, প্রকৃতি ও স্বদেশ পর্যায়ের গান । দলীয় ও একক পরিবেশনায় অংশ নেয় ১২০ জন কণ্ঠশিল্পী। একক কণ্ঠে গান শোনান ৩০ জন শিল্পী। গানের মূল পর্ব শুরু হয় মিলনায়তনে পর পর তিনটি সমবেত গানের আশ্রয়ে। শুরুতে শিল্পীরা পরিবেশন করেন আনুষ্ঠানিক পর্যায়ের গান ‘ হে নূতন দেখা দিক আর-বার জন্মের প্রথম শুভক্ষণ’। এরপর গীত হয় আনুষ্ঠানিক পর্যায়ে গান ‘সবারে করি আহ্বান/এসো উৎসুকচিত্ত, এসো আনন্দিত প্রাণ’ ও পূজা পর্যায়ের গান ‘তোমার সুরের ধারা ঝরে যেথায় তারি পারে’। গান শেষে আলোচনায় অংশ নেন অতিথিরা। উৎসবে সারা দেশের ১২০জন শিল্পী তিন দিনে চারটি অধিবেশনে একক গানের পরিবেশনা ছাড়াও দলীয় সঙ্গীত, আবৃত্তি পরিবেশন করবেন। উৎসবের দ্বিতীয় দিন আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯ টায় গণগ্রন্থাগার প্রাঙ্গণ থেকে বের হবে আনন্দ শোভাযাত্রা। এর পর মূল মঞ্চে অনুষ্ঠানের সূচনা হবে ‘ধ্বনিল আহ্বান মধুর গম্ভীর/প্রভাত-অম্বর-মাঝে’ ও ‘হে নূতন দেখা দিক আর-বার জন্মের প্রথম শুভক্ষণ’ পরিবেশনের মাধ্যমে। এই পর্বে পরিবেশন করা হবে আবৃত্তি ও গান। বিকেলে একই ভেন্যুতে বিকেলে আবৃত্তি ও গান পরিবেশন করবেন শিল্পীরা। উৎসবের সমাপনী দিন শনিবার বিকেল ৫ টায় সম্মাননা দেয়া হবে রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী মিতা হককে। তেজেন্দ্র নারায়ণের ‘সরোদে রবীন্দ্রসঙ্গীত’ ॥ এ দেশের সঙ্গীতানুরাগীদের কাছে এখন পরিচিত মুখ প-িত তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদার। বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসঙ্গীত উৎসবের কল্যাণের তার সরোদের সুরে মুগ্ধ হয়েছে অজস্র সুররসিক। এই সরোদিয়া এবারে সরোদে মেলে ধরলেন রবীন্দ্রনাথের গানের সুর। সেই সুরের মূর্ছনা ঠাঁই পেয়েছে সঙ্গীত সঙ্কলনে। ‘সরোদে রবীন্দ্রসঙ্গীত’ শীর্ষক এ্যালবামটি প্রকাশ করেছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ছায়ানট মিলনায়তনে সঙ্কলনের প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বরেণ্য চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার সিডির মোড়ক উন্মোচনের পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথের গানের নন্দনবিশ্ব সম্পর্কে আলোকপাত করেন। উন্মোটন পর্বের পর প-িত তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদার সরোদে রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন। তার সঙ্গে তবলায় সঙ্গত করেন তবলিয়া স্বরূপ হোসেন। শিক্ষার্থীদের চোখে সরদার ফজলুল করিম ॥ বিগত পহেলা মে ছিল সরদার ফজলুল করিমের জন্মদিন। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিকেলে লাল মাটিয়ার বেঙ্গল বই মিলনায়তনে আয়োজন করা হয় তার ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উদ্্যাপনের অনুষ্ঠান। সরদার ফজলুল করিমের রচনা বিশ্লেষণ, তার কর্ম নিয়ে আলোচনা, সঙ্গীত, আবৃত্তি ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে স্মরণ করা হয় এই দার্শনিককে। এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল সরদার ফজলুল করিম স্মৃতি পরিষদ। আয়োজকেরা জানান, এ বছর থেকে নিয়মিত সরদার মেলা করতে চান তারা। এ বছর নবেম্বরে বরিশালে এ মেলা করা হবে। অনুষ্ঠানে সরদারের জীবন ও রচনার ওপর ভিত্তি করে নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও স্টেট ইউনিভার্সিটির তিনটি দল। যা উপস্থাপনের জন্য গেল এক সপ্তাহ পড়াশোনা করেছেন তারা। জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা ॥ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন রূপরেখা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি প্রতিবছরের মতো এবছরও শিশুদের অধিকার এবং শারীরিক-মানসিক ও সৃজনশীল প্রতিভা বিকাশের লক্ষ্যে আয়োজন করেছে জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা ২০১৮। চিত্রাঙ্কন, নৃত্য, আবৃত্তি, অভিনয়, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, কুটিরশিল্প/সৃজন এবং সঙ্গীত পরিবেশনায় সাজানো হয়েছে প্রতিযোগিতা। দেশের ৬৪টি জেলাকে ৮টি অঞ্চলে ভাগ সারাদেশের প্রতিযোগীরা অংশগ্রহণ করছে প্রতিযোগিতায়। জেলা ও অঞ্চলভিত্তিক প্রতিযোগিতা শেষে প্রথম স্থান অধিকারী শিশুরা জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করবে। শিশু একাডেমির ঢাকা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিজয়ী শিশুদের পুরস্কার প্রদানের মধ্য দিয়ে প্রতিযোগিতার সমাপ্তি হবে। চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় জয়ী ২৩৭ জন শিশুকে পুরস্কৃত করা হবে আগামী ১৫ মে। এ দিন বিকেল সাড়ে ৩ টায় বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সমাপনী আয়োজনে প্রধান অতিথি থাকবেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এবং সচিব নাছিমা বেগম বিশেষ অতিথি থাকবেন। সভাপতিত্ব করবেন একাডেমির চেয়ারম্যান কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। মোহাম্মদ নাসির আলী পদক পাচ্ছেন দশজন ॥ বরেণ্য শিশুসাহিত্যিক ও প্রকাশক মোহাম্মদ নাসির আলী আজীবন সৃজনশীল-সাহিত্যের চর্চা করে গেছেন। তার স্মরণে গঠিত মোহাম্মদ নাসির আলী ফাউন্ডেশন প্রদান করতে যাচ্ছে শিশু সাহিত্যিক মোহাম্মদ নাসির আলী সম্মাননা ও পদক। আজ শুক্রবার বিকেল চারটায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইস্ফেন্দিয়ার জাহেদ হাসান মিলনায়তনে এ সম্মাননা ও পদক প্রদান করা হবে।
×