স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥বৈশাখের শেষ বৃহস্পতিবার মহাস্থানগড়ে এবারও অনেক সাধু-সন্ন্যাসী জড়ো হয়েছিলেন। মারফতি, জারি সারি গান হয়েছিল। কাঁসা ও ঢাকঢোলও বেজেছিল। তবে মাজার প্রাঙ্গণে ও আশপাশে ‘সিদ্ধি ধোঁয়া’ উড়তে দেয়া হয়নি। মেলার পূর্ণ আবহ ছিল। শেষ বৈশাখের এই মেলায় এসেছিল দূর-দূরান্তের অনেক মানুষ। আশপাশের দশ গাঁয়ের লোকজন তো ছিলই।
বগুড়া নগরী থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার উত্তরে মহাস্থানগড়ে সকাল থেকেই মেলার ঢেউ নামে। যা ছড়িয়ে পড়ে মহাস্থান মাহি সওয়ার ডিগ্রী কলেজের মাঠ পর্যন্ত। গ্রামীণ মেলা বলতে যা বোঝায় তার সকল অনুষঙ্গই ছিল। মিষ্টি মিষ্টান্ন তো ছিলই, বিশেষভাবে ছিল মহাস্থানগড়ের সুস্বাদু মিঠাই ‘কটকটি’। এই মেলার একটি ঐতিহাসিক পটভূমি আছে। ইংরেজ হটাতে এই অঞ্চলে কিছুদিনের জন্য এসেছিলেন ফকির বিদ্রোহের সেনাপতি ফকির মজনু শাহ। এক পর্যায়ে তিনি বিজয়ী হন। বিজয়ের এই আনন্দ প্রকাশ করেন উৎসবে। আয়োজন করা হয় মেলার। ওই সময় ছিল বৈশাখের শেষ বৃহস্পতিবার। মেলায় আগমন ঘটে ফকির-সন্ন্যাসীদের। সেই থেকে প্রতি বছর ফকির-সন্ন্যাসীদের মেলা বসতে থাকে।
গেল শতকের ৯০’র দশকের প্রথমার্ধে প্রভাবশালী একটি শ্রেণী মেলাকে কলুষিত করে। মেলায় প্রকাশ্যে গঞ্জিকা সেবন শুরু করে। বিকেল থেকে রাতভর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে থাকে ওই এলাকা। ৯০’র দশকের শেষভাগে সুধীজন গঞ্জিকা সেবনের বিরুদ্ধে মাঠে নামে। এগিয়ে আসে প্রশাসন। তারপর বন্ধ হয় এই কলুষতা।