ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ভারি বর্ষণ ॥ বাঁধ ভেঙ্গে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

প্রকাশিত: ০৪:৪১, ১১ মে ২০১৮

ভারি বর্ষণ ॥ বাঁধ ভেঙ্গে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

নিজস্ব সংবাদদাতা, মৌলভীবাজার, ৮ মে ॥ টানা ভারি বর্ষণে ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে মৌলভীবাজারের মনু ও ধলাই নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বাড়ার কারণে কমলগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৪২ হেক্টর ফসল ডুবে গেছে। ধলাই নদীর বাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে প্রবেশ করছে পানি। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রামেন্দ্র চক্রবর্তী জানান, মনু নদীর পানি কুলাউড়া মনু রেল ব্রিজ ও চাঁদনীঘাট পয়েন্টে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুলাউড়ার মনু ব্রিজ এলাকায় বিপদসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার এবং মৌলভীবাজার শহরের চাঁদনীঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১৬০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলাই নদীর পানি কমলগঞ্জের বিভিন্ন পয়েন্টে বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে তিনি জানান, মনু ও ধলাই নদীতে পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও আজ ভারতে বৃষ্টি না হওয়ায় পানি শুক্রবার থেকে কমতে শুরু করবে। এদিকে দুইদিনের বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানি ৯ মে বুধবার সকাল থেকে কমলগঞ্জ ধলাই সেতু এলাকায় বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এ অবস্থায় ধলাই নদের প্রতিরক্ষা বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ ১৫টি স্থান নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন একাবাসী। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের কমলগঞ্জে রহিমপুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের কৃপেশ ধরের বাড়ির দক্ষিণে ধলাই নদের প্রতিরক্ষা বাঁধের ৩৫ ফুট ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়। এ ভাঙ্গন দিয়ে ঢলের পানি প্রবেশ করে লক্ষীপুর গ্রামে বন্যার সৃষ্টি হয়। এ দিকে দ্রুত পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে জেলার প্রতিটি হাওড়ে তবে বোরো ফসলের ভা-ার হাওড়গুলোতে শতভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে জেলা কৃষি অধিদফতর। মৌলভীবাজার জেলা কৃষি অধিদফতরের উপ পরিচালক মোঃ শাহাজান জানান, ৪০ হেক্টর জমি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। বৃষ্টি থেমে গেলে দ্রুত পানি নেমে যাবে এতে পানিতে তলিয়ে যাওয়া ফসলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। মোহনগঞ্জ নিজস্ব সংবাদদাতা মোহনগঞ্জ, নেত্রকোনা থেকে জানান, গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তলিয়ে গেছে উপজেলার রৌহাসহ কয়েকটি হাওড়ের বোরো আবাদ। একদিকে ভারি বর্ষণ অন্যদিকে শ্রমিক সঙ্কট দুইয়ে মিলে কৃষককুল রয়েছেন মহাসঙ্কটে। বুধবার হাওড় ঘুরে দেখা গেছে রৌহা, চাতল, হইসা, পাকুয়াসহ কয়েকটি হাওড়ে ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের পানি ঢুকে তলিয়ে গেছে বোরো পাকা আধপাকা ধান। শ্রমিক সঙ্কটের কারণে নিজেরা যেটুকু পারছেন কাটছেন, কিন্তু বৃষ্টি না থামার কারণে ওই ধানও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দিন দিন বৃষ্টি বেড়েই চলেছে, সঙ্গে দুর্ভোগ যেন পিছু ছাড়ছেন না। রয়েছে বজ্রপাতের আশঙ্কা, আর তাই ভয়ে কৃষক ঘর থেকে বেরও হচ্ছেন না সহসা। কলুংকা গ্রামের কৃষক এনামুল হক জানান, নিচু জমির বোরো ধান কেটেও বৃষ্টির কারণে ধান শুকাতে পারিনি। কিন্তু এবার উঁচু জমির বোরো ধান কাটার আগেই ক্ষেতে পানি চলে এসেছে। রয়েছে শ্রমিক সঙ্কট। তাই যেটুকু পারছি নিজেরাই কাটছি, কিন্তু অতি বৃষ্টির কারণে কেটেও কোন কাজের কাজ হচ্ছে না। বড়তলির হাসিম উদ্দিন জানান, এবার ফলন ভাল হলেও অতি বৃষ্টির কারণে ধান কেটে ঘরে তোলার আশা নেই।
×