ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে ১১ জুন

প্রকাশিত: ০৮:৪২, ১০ মে ২০১৮

গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে ১১ জুন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির ধাক্কায় নির্বাচনের বছরেই বাড়ছে দেশের প্রধান জ¦ালানি গ্যাসের দর। গৃহস্থালি এবং বাণিজ্যিক ছাড়া সকল প্রকার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে বিতরণ কোম্পানিগুলো। বুধবার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) আগামী ১১ জুন থেকে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির জন্য গণশুনানির দিন নির্ধারণ করেছে। দাম বাড়বে গ্রিড সংযুক্ত বিদ্যুত, নিজস্ব উদ্যোগে স্থাপিত বিদ্যুত বা ক্যাপটিভ পাওয়ার, শিল্প, সার কারখানা, চা বাগান আর সিএনজির। গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঞ্চালন মাসুলও বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এজন্য গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি- জিটিসিএল এর মাসুল বৃদ্ধির প্রস্তাবটিও বিবেচনা করা হচ্ছে। আর গণশুনানির প্রথম দিন ১১ জুন জিটিসিএল-এর সঞ্চালন মাসুল বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। শুনানি চলবে ২১ জুন পর্যন্ত। পর্যায়ক্রমে ১৩ জুন তিতাস, ১৪ জুন বাখরাবাদ, ১৪ জুন জালালাবাদ, ১৮ জুন পশ্চিমাঞ্চল, ১৯ জুন কর্ণফুলী, ২১ জুন সুন্দরবন গ্যাস কোম্পনির গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ওপর শুনানি হবে। এর আগে বিতরণ কোম্পানিগুলো প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম গ্রিড বিদ্যুত উৎপাদনে ২০৬ ভাগ বাড়িয়ে ৩ দশমিক ১৬ টাকা থেকে ১০ দশমিক ৪৮ টাকা। ক্যাপটিভ বিদ্যুত উৎপাদনে ৬৬ ভাগ বাড়িয়ে ৯ দশমিক ৬২ টাকা থেকে ১৬ টাকা এবং সার উৎপাদনে ৩৭২ ভাগ বাড়িয়ে ২ দশমিক ৭১ টাকা থেকে ১২ দশমিক ৮০ টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। শিল্পে ৯৩ ভাগ বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৭৬ টাকা থেকে ১৪ দশমিক ৯০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আর সিএনজিতে ৪০ টাকার গ্যাসের দাম বাড়িয়ে ৪৮ টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে। বৃদ্ধির হার ১২০ ভাগ। সরকার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির যুক্তি হিসেবে এলএনজি আমদানির উচ্চব্যয় বহনের কথা বলছে। সরকারের পক্ষে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দেয়া সম্ভব নয় বলে জানানো হয়েছে। তবে শিল্পে জ¦ালানির দর বৃদ্ধিতে মূল্যস্ফীতির বৃদ্ধি বিবেচনায় নির্বাচনের বছরে এ ধরনের সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকবে বলে মনে করা হচ্ছিল। যদিও এখন বিইআরসির প্রক্রিয়া বলছে গ্যাসের দাম বাড়ছেই। আগামী ২৫ বা ২৬ মে থেকে দেশে এলএনজি আমদানি সরবরাহ শুরু হচ্ছে। ইতোমধ্যে কাতারের রাস গ্যাস থেকে এলএনজি ভর্তি মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির জাহাজ বাংলাদেশ উপকূলে এসে পৌঁছেছে। এক্সিলারেট এনার্জির ভাসমান টার্মিনাল এফএসআরইউটি দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি গ্যাসে রূপান্তর করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করার ক্ষমতা রয়েছে। তবে শুরুতে দৈনিক পূর্ণমাত্রার সরবরাহ করা হবে না। বিশে^র এলএনজি সরবরাহকারী এফএসআরইউগুলো গড়ে ক্ষমতার অর্ধেক ৫০ ভাগ হারে এলএনজি সরবরাহ করে থাকে। প্রসঙ্গত সবশেষ গত বছর ফেব্রুয়ারিতে গ্যাসের দাম গড়ে ২২ দশমিক ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়। একই বছরের মার্চ ও জুলাই থেকে দুই ধাপে তা কার্যকর হয়। বর্তমানে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের গড় মূল্য সাত টাকা ৩৫ পয়সা। আবাসিক সংযোগে এক চুলার জন্য মাসে ৭৫০ টাকা এবং দুই চুলার জন্য ৮০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে গ্রাহককে। অন্যদিকে বাণিজ্যিকে প্রতি ঘনমিটার ১৭ টাকা ৪০ পয়সা দরে বিক্রি হচ্ছে। এবার গৃহস্থালির পাশাপাশি বাণিজ্যিক গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে না।
×