ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মালয়েশিয়ায় নির্বাচনে মাহাথিরের জোট জয়ী

প্রকাশিত: ০৮:৩৯, ১০ মে ২০১৮

মালয়েশিয়ায় নির্বাচনে মাহাথিরের জোট জয়ী

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ মালয়েশিয়ার সাধারণ নির্বাচনে দোর্দণ্ড প্রতাপে ফিরে এসেছেন ৯২ বছর বয়সী মাহাথির মোহাম্মদ। বুধবার দেশটিতে সাধারণ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়েছে। এতে দ্য স্ট্রেইটস টাইমসে প্রকাশিত অনানুষ্ঠানিক ফলাফলে বলা হয়েছে, নাজিবের জোট পেয়েছে ৭৭টি আসন। আর মাহাথিরের জোট পেয়েছে ১১২টি। আর মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম দ্য স্টার অনলাইনের খবরে প্রকাশ, মাহাথিরের পাকাতান হারাপান ১১২টি আসন পাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে। বারিসান ন্যাশনাল পেয়েছে ৭৯টি। অন্যান্য দল পেয়েছে ২৮আসন। অন্যদিকে মালয়েশিয়ার নির্বাচন কমিশনের দেয়া সর্বশেষ ফলাফল অনুযায়ী, পাকাতান হারাপান ৫০টি পার্লামেন্টারি আসন পেয়েছে। বারিসান ন্যাশনাল পেয়েছে ৪০টি। এরই মধ্যে নিজের জোটের বিজয় দাবি করেছেন মাহাথির মোহাম্মদ। নিজের আসনে জয়ী হয়েছেন তিনি। গত নির্বাচনের চেয়ে দেশটিতে ভোট এবার কম পড়েছে। ২০১৩ সালের নির্বাচনে প্রায় ৮৫ শতাংশ ভোটার তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছিলেন। সিঙ্গাপুরভিত্তিক দ্য স্ট্রেইটস টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, এবার ভোট দিয়েছে ৭৬ শতাংশ ভোটার। অনুমিত এই সংখ্যা কিছুটা কমবেশি হতে পারে। তবে তা গতবারের সংখ্যাকে ছাপিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। মালয়েশিয়ার পার্লামেন্টে মোট ২২২টি আসন আছে। বিরোধীদলীয় জোট পাকাতান হারাপান বলছে, সরকার গঠন করতে তাদের দরকার ১১২টি আসন। এর আগে ২০১৩ সালের সাধারণ নির্বাচনে পপুলার ভোট বেশি পেয়েছিল এই জোট। এবার মাহাথিরের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন জিততে চায় তারা। ২০১৩ সালের নির্বাচনে প্রায় ৮৫ শতাংশ ভোটার তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, এবার ভোট দিয়েছেন ৭৬ শতাংশ ভোটার। ভোটের পর প্রকাশিত অনানুষ্ঠানিক প্রাথমিক ফলাফলে এগিয়ে আছে মাহাথিরের বিরোধীদলীয় জোট। ক্ষমতা ছাড়ার ১৫ বছর পর ফের পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্ব করবেন মালয়েশিয়ার এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী। দেশটির বিভিন্ন স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ভোটগ্রহণের দিন অনেক রাজনৈতিক নেতার মোবাইল ফোন নাকি হ্যাক করা হয়েছিল। বিরোধীদের অভিযোগ, অনেক ভোটার ভোটকেন্দ্রে গেলেও ভোট দিতে পারেননি। অন্যদিকে এবিসি নিউজের খবরে বলা হয়েছে, সিঙ্গাপুরে কর্মরত মালয়েশিয়ার অনেক নাগরিকও ভোট দিতে পারেননি। এই সংখ্যাটি প্রায় ৫ লাখ। মালয়েশিয়ায় দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় ছিলেন মাহাথির মোহাম্মদ। ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তির পর প্রথমবারের মতো দেশটিকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের শীর্ষে পৌঁছে দেন তিনি। এই একটি কারণেই দক্ষিণ এশিয়ার অনুকরণীয় রাজনৈতিক নেতায় পরিণত হয়েছিলেন মাহাথির। যদিও নিজ দেশে বিরোধীদের ওপর দমন-পীড়ন চালানোর অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। রাজনীতিতে মাহাথির মোহাম্মদের হাতেখড়ি ১৯৪৬ সালে। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ২১ বছর। ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে তখন উত্তাল মালয়েশিয়া। ওই সময়ে সদ্য প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড মালয়স ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনে (ইউএমএনও) যোগ দেন তিনি। ওই দলের মূল আদর্শ ছিল জাতীয়তাবাদ। এটি এখনও মালয়েশিয়ার অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল। টানা ২২ বছর ক্ষমতায় ছিলেন মাহাথির মোহাম্মদ। এই দীর্ঘ সময়ে মালয়েশিয়াকে এশিয়ার অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত করেন তিনি। ২০০৩ সালে ক্ষমতা ছাড়েন মাহাথির। অন্যদিকে নিজের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছেন নাজিব রাজাক।
×