ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অহিংসা জাগ্রত হোক

প্রকাশিত: ০৭:১৭, ১০ মে ২০১৮

অহিংসা জাগ্রত হোক

‘পরশ্রীকাতরতা’- এটা কতিপয় লোক করেন, এটাই তাদের স্বভাব। বদনাম রটিয়ে দেয়াই এদের কাজ। আপন ভাইয়ের ভাল দেখতে পারে না, বন্ধুর সাফল্য দেখে কেউ আবার হিংসায় জ্বলে। আর তখন বন্ধুর নামে বদনামটা তুলে ধরে নিকটস্থ কারও কারও কাছে। আবার এরাও কুৎসা শুনে মজা পায়। বাঙালীরা এদিক থেকে অনেক অনেক যে এগিয়ে এটা শ্রী সুকুমার রায় হাড়ে হাড়ে টের পেয়েই লিখেছিলেন ‘বাঙালীর চরিত্র’ নামে একটি বই। ওই বইয়ে তিনি প্রমাণ করে ছেড়েছেন- ‘বাঙালী যে কতটা পরশ্রীকাতর।’ কেউ ভাল কাজ করেছেন বা করছেন- এটা কতিপয়ের চোখে পড়ে না। আসলে এরা ভালটা দেখেও না দেখার ভান করে। কথায় আছে- আসলে যারে দেখতে না পারি- তার চলন বাঁকা। নিন্দুকদের বা পরশ্রীকাতরদের মনে এই ভাবনা সব সময় কাজ করে। বলা যাক, বর্তমান সরকার দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। যার অনেক কিছুই আমরা চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি, যেমন- পদ্মা সেতুর কাজ, মেট্রোরেলের কাজ, রাস্তাঘাটের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। কত ফ্লাইওভার হয়েছে, যে জন্য যানজটও কমেছে রাজধানীর অনেক পথে। বিদ্যুত এখন আর যায় না। এই যে উন্নয়ন হয়েছে বা হচ্ছে- এ কথা কতিপয় বাঙালীর চোখেই পড়ছে না। আসলে এরা এখন আর নিজেদের বাঙালী ভাবে না। ছিলাম বাঙালী, তা না বলে, বলে- ‘বাংলাদেশি’। এটাও কিন্তু আরেক ধরনের পরশ্রীকাতরতা। কেউ বা পরশ্রীকাতর এতটা যে, হিংসায় জ্বলেপুড়ে বলে- ‘পদ্মা সেতু হলেও কেউ যাবেন না পদ্মা সেতুতে। ভেঙ্গে পড়বে....।’ ভাল দিকটা বলি না, খারাপ কিছু বলেই কতিপয় লোক বেশ মজা পান। বদনাম একটু পেলেই হলো- তা নিয়ে নিন্দুকরা মিডিয়ায় নানাভাবে অতিরঞ্জিত করে যেন নিন্দার ঝড় বইয়ে দেন। আর সামাজিক মাধ্যমে কতিপয় হিংসুটে এমন সব লিখে মিথ্যাটাকে সত্য বানাতে চান- যারা এটা করেন তারা তো কোন মানুষের পর্যায়ে পড়ে না। পরশ্রীকাতর হতে হতে কেউ বা এক সময়ে নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়। হবেই না কেন, অন্যের প্রতি বা নিকটতম বন্ধুর সাফল্য দেখে যারা ঈর্ষান্বিত হয়- উপরওয়ালা তাদের কখনও ভাল চোখে দেখেন না। আজকের এই আধুনিকতার যুগে পৃথিবীতে পরিবর্তন হয়েছে অনেক কিছুর। পরিবর্তন এল না কেন কতিপয়ের মধ্যে- এরা পরনিন্দা, বন্ধুর সম্পর্কে নিন্দা করা, বন্ধুর ভালটা দেখেও ঈর্ষা করা, অপবাদ রটানোতে মগ্ন থাকা, নিকটস্থ কারও সম্পর্কে কিছু খারাপটা শুনলেই ইনিয়েবিনিয়ে বাড়িয়ে বলা- এ থেকে কেউ কেউ বেরিয়ে আসতে পারছেন না। ভাই-ভাই শত্রুতা, বোনে- বোনে ঈর্ষা, বন্ধুর সাফল্য দেখে বন্ধুকে হত্যা- এ যেন থামছে না। আমরা আশা করবা যে যার যেটুকু সম্বল আছে তা নিয়ে এগিয়ে যাবেন। যে কোন হিংসা, ঈর্ষা, নিন্দা ছড়ানোর মধ্য থেকে বাঙালীকে বেরিয়ে এসে শুধুই ভাবতে হবে- ‘আর নয় পরশ্রীকাতরতা। বাঙালীর জীবনের আদর্শ হোক- প্রেমভক্তি, অহিংসা আর সত্যাগ্রহের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়া। ‘এই বোধোদয় বাঙালীর মধ্যে জাগ্রত হলেই আমরা প্রমাণিত করতে পারব, আমরা পরশ্রীকাতর নই, আমরা সবাই আপন- কেউ কারও পর নই। বাঙালীর মধ্যে সেই মোহাব্বত ও ভালবাসার দিনটি দেখার অপেক্ষায় এখন শুধুই যে দিন গুনছি। রায় বাহাদুর রোড, পিরোজপুর থেকে
×