ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের জন্য দ্বিতীয় দফায় ভারতের ৩৭৩ টন ত্রাণসামগ্রী হস্তান্তর

প্রকাশিত: ০৬:৫০, ১০ মে ২০১৮

রোহিঙ্গাদের জন্য দ্বিতীয় দফায় ভারতের ৩৭৩ টন ত্রাণসামগ্রী হস্তান্তর

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ সহিংসতার মুখে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য দ্বিতীয় ধাপে ৩৭৩ মেট্রিক টন ত্রাণ নিয়ে এসেছে ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ ‘ঐরাবত’। বিশাখাপত্তম বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে আসা এ ত্রাণসামগ্রী বুধবার জেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। ত্রাণমন্ত্রী ভারতের এই মানবিক সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি বলেন, আমরা চাই রোহিঙ্গা সঙ্কটে একটি স্থায়ী সমাধান। ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ। আমরা পরস্পরের বন্ধু দেশ। একজন আরেকজনের সাহায্যে এগিয়ে যাবে সেই প্রতিশ্রুতি রয়েছে। তবে শুধু সাহায্য দেয়াটাই সমস্যা সমাধান নয়, আমরা চাই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে ভারতের বিশেষ ভূমিকা। তিনি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরাতে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করতে ভারতের ভূমিকা প্রত্যাশা করেন। ত্রাণমন্ত্রী মায়া জানান, মিয়ানমার থেকে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। এরমধ্যে আমরা ১১ লাখ ১২ হাজার ৩০৮ জনকে নিবন্ধন করতে সক্ষম হয়েছি। তাদের জন্য ৩০টি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। ৩৬ হাজার ৩৭৩ জন অনাথ শিশুর সন্ধান করতে পেরেছি। রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী বাসস্থান গড়তে সরকারের পদক্ষেপ প্রসঙ্গে মন্ত্রী জানান, টেকনাফ এবং উখিয়ায় ৯ কিলোমিটার বিদ্যুতায়ন, ১৩ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক এবং পানির জন্য ১০ কিলোমিটার খাল খনন করা হয়েছে। পাাহড়ের অবস্থা প্রসঙ্গে জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, প্রথমে আবাসন এবং পরে জ্বালানির জন্য গাছপালা কেটে ফেলায় ওই এলাকা বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়েছে। পাহাড়ে গাছপালা না থাকায় সেখানে এখন বেশ জ্বালানি সঙ্কট। ভারত ২৫ হাজার স্টোভ ও কেরোসিন তেল দিয়ে রান্নার ব্যবস্থা করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পরের ধাপে এগুলো এলে রোহিঙ্গাদের জ্বালানি সমস্যা অনেকটা দূর করা সম্ভব হবে। ভারতের কাছ থেকে ত্রাণ সহযোগিতার চেয়েও বাংলাদেশ আরও বেশি কিছু প্রত্যাশা করে জানিয়ে তিনি রোহিঙ্গা ফেরাতে ভারত সরকারের জোরালো ভূমিকা কামনা করেন। ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রীংলা বলেন, বাংলাদেশে যে পরিমাণ রোহিঙ্গা এসেছে তা মানবিক বিপর্যয়। এত বেশিসংখ্যক বাস্তুচ্যুত মানুষের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবিক দায়িত্ব পালন করেছে। বাংলাদেশের এ প্রচেষ্টাকে আমরা সমর্থন জানাই। একইসঙ্গে রোহিঙ্গা সঙ্কটের স্থায়ী সমাধানে নিজ দেশের আন্তরিকতার বিষয় উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের সঙ্গে আমাদেরও প্রচেষ্টা রয়েছে, যেন বাস্তুচ্যুত এই মানুষগুলো নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে। এ রোহিঙ্গাদের জন্য রাখাইন প্রদেশে কম খরচে বাসস্থানসহ আর্থসামাজিক সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ করছে ভারত। এদের নিরাপদ ও স্থায়ী প্রত্যাবাসন সহজতর করার জন্যই রাখাইনে বসতি স্থাপনে সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। এত বিপুলসংখ্যক বাস্তুচ্যুত মানুষকে আশ্রয় দেয়া বড় ধরনের একটি চ্যালেঞ্জ।
×