ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

নাচ গান আবৃত্তিতে আইজিসিসির অষ্টম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ১০ মে ২০১৮

নাচ গান আবৃত্তিতে আইজিসিসির অষ্টম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাইকে শোনা যাচ্ছে রবীন্দ্রনাথের গান ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে’। গানের সঙ্গে প্রদীপ হাতে ওয়ার্দা রিহাবের পরিচালনায় নৃত্য পরিবেশন করছে আইজিসিসির জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থীরা। নৃত্যশেষে মিলনায়তনভর্তি দর্শক করতালি দিয়ে শিল্পীদের অভিনন্দন জানাচ্ছে। ঢাকার ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের অষ্টম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনের শুরুটা ছিল এমনই। সংস্কৃতিপ্রেমীদের জন্য সন্ধ্যাটি ছিল মনোরম। নাচ, গান, আবৃত্তি আর যোগ ব্যয়ামের কলাকৌশল প্রদর্শনীতে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করল (আইজিসিসি)। বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। অনুষ্ঠানে এসেছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজনটি নিবেদন করেছে দুই কবির উদ্দেশ্যে। সাংস্কৃতিক আয়োজনে অংশ নেয় আইজিসিসির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। দলীয় নৃত্য পরিবেশনের পর কালচারাল সেন্টারের ইন্দি বিভাগের ছাত্রের একক কণ্ঠে পরিবেশিত হয় হিন্দীতে রবীন্দ্রনাথের গান ‘মেরা মাথা নত কর দো’। এরপর কাজী নজরুল ইসলামের ‘কামাল পাশা’ কবিতা বৃন্দ আবৃত্তি করে শিক্ষার্থীরা। গুরু যোগেশ বাশিস্তার নির্দেশনায় ‘আজি ধানের ক্ষেতে রৌদ্র ছায়ায়’ শিরোনামে নৃত্য প্রযোজনাটি মঞ্চস্থ করে নবীন শিক্ষার্থীরা। এরপর মঞ্চে আসে আইজিসির যোগ ব্যয়ামের দলটি। এই দলের নবীন ও জ্যেষ্ঠ সদস্যরা মাম্পি দের পরিচালনায় যোগব্যয়ামের দুটি আসনের কলাকৌশল দেখায়। আইজিসিকে কত্থক নৃত্যের শিক্ষক মুনমুন আহমেদের পরিচালনায় কত্থক পরিবেশনায় আসে কত্থক বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ পর্যায়ে দুটি দল কাজী নজরুল ইসলামের ‘হলুদ গাঁদার ফুল’, ও ‘শুকনো পাতার নূপুর পায়ে’ পরিবেশন করে, দুই শিক্ষার্থী রণবির ও রিয়া নৃত্য পরিবেশন করে ‘তোমার খোলা হাওয়া’। অনুষ্ঠানের শেষে আইজিসিসির বিভিন্ন কোর্সের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সনদ তুলে দেন অতিথিরা। শিল্পকলায় স্বপ্নদলের নাটক ‘ত্রিংশ শতাব্দী’ মঞ্চস্থ ॥ নাট্য সংগঠন স্বপ্নদলের দর্শক নন্দিত নাটক ‘ত্রিংশ শতাব্দী’। বাদল সরকারের মূলরচনা অবলম্বনে যুদ্ধবিরোধী গবেষণাগার প্রযোজনা ‘ত্রিংশ শতাব্দী’ নাটকের রূপান্তরসহ নির্দেশনা দিয়েছেন জাহিদ রিপন। নাটকটি ইতোমধ্যে দেশে ও বিদেশে ব্যাপক প্রশংসিত। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ইউরোপের স্বনামখ্যাত নাট্যোৎসব ‘এ সিজন অব বাংলা ড্রামা-২০১৫’, নয়াদিল্লীর ন্যাশনাল স্বুল অব ড্রামা (এনএসডি), এশিয়ার বৃহত্তম ও মর্যাদাপূর্ণ ভারতের রাষ্ট্রীয় নাট্যোৎসব ‘ভারত রঙ মহোৎসব-২০১৫’, কলকাতার দমদমে ‘শম্ভু মিত্র ও বিজন ভট্টাচার্য স্মৃতি আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসব-২০১৬’সহ নানা স্থানে মঞ্চায়ন হয়েছে এবং প্রশংসা অর্জন করেছে। ঢাকার শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে বুধবার সন্ধ্যায় নাটকটির ৯২তম মঞ্চায়ন হয়। পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে কলঙ্কজনক অধ্যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে জাপানের হিরোশিমা-নাগাসাকির আণবিক বোমা বিস্ফোরণের অপ্রত্যাশিত পরিণতি এ নাটকের উপজীব্য। যুদ্ধোন্মাদনার বিরুদ্ধে এ যেন এক শৈল্পিক প্রতিবাদ। এতে সমান্তরালে গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপিত হয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, বসনিয়া, ফিলিস্তিন, আফগানিস্থান, পাকিস্তান, ভারত, ইরাকে আগ্রাসন, কুয়েত, তিউনিশিয়া, ইয়ামেন, সিরিয়া, তুরস্ক, মিয়ানমার, গুলশানে বর্বর হামলা প্রভৃতি প্রসঙ্গ। নাটকটিতে নানাবিধ দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণের মাধ্যমে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে যুদ্ধবাজ-যুদ্ধাপরাধী-অশান্তিকামীদের স্বরূপ এবং তাদের কাজের তাৎক্ষণিক ও সুদূরপ্রসারী বীভৎসতার চিত্র উদঘাটিত হয়েছে। প্রযোজনাটির উপস্থাপনায় প্রয়োগ হয়েছে হাজার বছরের নাট্য-ঐতিহ্যের ধারায় আধুনিক বাংলা নাট্যরীতি। এতে যারা অভিনয় করেছেন তারা হলেন-জুয়েনা শবনম, ফজলে রাব্বি সুকর্ন, সামাদ ভূঞা, শিশির সিকদার, জেবুন নেসা, শাখাওয়াত শ্যামল, মেহেদী রানা, সোনালী রহমান, অর্ক অপু ও জাহিদ রিপন। উল্লেখ্য, জানা যায়, অফিস খোলার দিন কিংবা সন্ধ্যায় দেশে দর্শক নাট্যপ্রযোজনা দেখতে পারেন না, তাদের কথা বিবেচনায় রেখে এবার আগামীকাল শুক্রবার সকালের প্রদর্শনীটি আয়োজন করা হয়েছে। এদিন বেলা ১১টায় একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে নাটকটির ৯৩তম মঞ্চায়ন হবে।
×