ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আপীলের রায় পক্ষে গেলেও ১৫ মে গাজীপুরে নির্বাচন সম্ভব নয়

প্রকাশিত: ০৬:১০, ১০ মে ২০১৮

আপীলের রায় পক্ষে গেলেও ১৫ মে গাজীপুরে নির্বাচন সম্ভব নয়

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা বলেছেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল হয়েছে। আপীলের রায় যদি নির্বাচন কমিশনের পক্ষেও যায়, তারপরও তফসিল অনুযায়ী ১৫ মে গাজীপুর সিটির ভোট নেয়া সম্ভব নয়। নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে আজকেও যদি আদালতের সিদ্ধান্ত হতো তাহলেও নির্ধারিত সময়ে (১৫ মে) নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সম্ভব হতো। আর যদি এ বিষয়ে আদালতের আদেশ আগামীকালও হয় তবে ভোটের তারিখ পরিবর্তন করতে হবে। তারপরও দেখি কোর্ট কী নির্দেশ দেয়। তিনি আরও বলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের বিষয়ে কোর্ট যদি বলেন যে ১৫ মে ভোট নিতে হবে তখন যেভাবেই হোক কোর্টের আদেশ আমাদের পালন করতে হবে। কিন্তু এখন ক্রিটিক্যাল সময় হয়ে গেছে। আমরা উকিল নিয়োগ করেছি, আজকে আপীল করার কথা। হয়তো আগামীকাল শুনানি হবে। আদালত সময় বেঁধে না দিয়ে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করলে নির্বাচনের তারিখ পিছিয়ে দেয়া হবে। তবে এর জন্য পুনঃতফসিল ঘোষণার প্রয়োজন হবে না, শুধু নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করলেই হবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা বুধবার দুপুরে গাজীপুরে জেলা প্রশাসন ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভাশেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে ওইসব কথা বলেন। এর আগে সিইসি জেলা নির্বাচন অফিস পরিদর্শন করেন এবং জেলা প্রশাসকের ভাওয়াল সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় যোগ দেন। গাজীপুরের জেলা প্রশাসক দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে ওই মতবিনিময় সভায় গাজীপুরের নির্বাচন কমিশনের আঞ্চলিক কর্মকর্তা রকিব উদ্দন ম-ল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাহমুদ হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) খন্দকার ইয়াসির আরেফিন, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ তারিফুজ্জামানসহ জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, আমি নির্বাচন কমিশনের আঞ্চলিক কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি তারা প্রত্যেকেই মনে করেন এ সময়ে নির্বাচন নেয়া সম্ভব নয়। কারণ পুলিশ সুপার জানান, নির্বাচন উপলক্ষে প্রায় ১০-১১ হাজার পুলিশ ফোর্স বিভিন্ন জায়গা থেকে ডিপ্লয়েড করতে হবে, ৫-৬ শ’ গাড়ি রিকুজিশন করতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করতে হবে, যারা বিভিন্ন জেলা থেকে আসবেন। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা সাড়ে আট হাজার, তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এতগুলো কাজ এ সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা আমি অসম্ভব মনে করি। নির্বাচন স্থগিতের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কোন গাফিলতি আছে কী না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সময় আমরা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছি যে সীমানা নিয়ে কোন জটিলতা আছে কী না, কোর্টে কোন বিষয়ে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে কী না। তখন তারা পরিষ্কার চিঠি দিয়েছে কোথাও কোন বিভেদ নেই, সীমানা নির্ধারণের কোন সমস্যা নেই। তখনই আমরা এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করি। এ বিষয়ে আমাদের কোন গাফিলতি নেই। স্থানীয় সরকার বিভাগও যে ভাবে চিঠি দিয়েছে তাতেও আমি কোন ভুল দেখি না। তারা তো জেনে শুনে কোর্টের আদেশ বিচার-বিশ্লেষণ করে আমাদের বলেছে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণায় কোন সমস্যা নেই। তখনই আমরা এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করি, আর এটাই নিয়ম। আবার আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোন আইনী জটিলতায় পড়বে কী না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটি নির্ধারিত ৯০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে, তাই সে নির্বাচন নিয়ে কোন জটিলতা হবে না। এর আগে মঙ্গলবার রাতে তিনি গাজীপুরে আসেন। সার্কিট হাউসে রাত্রীযাপন করে বুধবার সকালে জেলা নির্বাচন অফিস পরিদর্শন, সার্ভার স্টেশন, স্মার্টকার্ড নিয়ে জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করার কর্মসূচীতে অংশ নেন।
×