ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শিল্পকলার চিত্রশালায় নেপালী শিল্পীদের প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ৮ মে ২০১৮

শিল্পকলার চিত্রশালায় নেপালী শিল্পীদের প্রদর্শনী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নেপাল থেকে ঢাকায় এসেছেন এক ঝাঁক চিত্রশিল্পী। নিজেদের চিত্রপটে মেলে ধরেছেন নেপালের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। সেসব চিত্রকর্ম এখন শোভা বাড়াচ্ছে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার গ্যালারিতে। সোমবার থেকে শুরু হলো নেপাল আর্ট ফেয়ার বাংলাদেশ। নেপাল একাডেমি অব ফাইন আর্টসের সপ্তাহব্যাপী এ আয়োজনে সহযোগিতা করছে শিল্পকলা একাডেমি। সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে নেপাল ও বাংলাদেশের মধ্যকার সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে এ আয়োজন বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ এবং নেপাল একাডেমি অব ফাইন আর্টসের উপাচার্য রাগিনী উপাধ্যায়। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকির সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চারুকলা বিভাগের পরিচালক আশরাফুল আলম। প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছেন নেপালের ৪৭ জন শিল্পী। নেপালের প্রচলিত ও সমসাময়িক চিত্রশিল্প এবং লোক ও কারুশিল্পের ৫৩টি শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে প্রদর্শনীতে। প্রদর্শনী ছাড়াও দুই দেশের শিল্পীদের অংশগ্রহণে একটি আর্টক্যাম্পও অনুষ্ঠিত হবে[জঞঋ নড়ড়শসধৎশ ংঃধৎঃ: }থএড়ইধপশ[জঞঋ নড়ড়শসধৎশ বহফ: }থএড়ইধপশ। আগামী ১৩ মে পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা এবং শুক্রবার বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে প্রদর্শনী। ‘শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন’ গ্রন্থের প্রকাশনা ॥ রাজনীতির ময়দানে কঠিন পথ পাড়ি দেয়া এক নির্ভীক সৈনিক শেখ হাসিনা। গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার কিংবা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাস্নাত বাংলাদেশ বিনির্মাণে রেখে চলেছেন অনন্য ভূমিকা। জীবনবাজি রাখা রাজনীতির সেই শঙ্কাবহুল সড়কে তাঁর পথচলার শুরুটা সেই ১৯৮১ সালে। পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে রাজনীতির হাল ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেনাসমর্থিত ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময়ও তাঁকে নির্বাসনে রাখার চক্রান্ত করে তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী। যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফেরার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শাসকগোষ্ঠীর চোখ রাঙানিকে উপেক্ষা করে ২০০৭ সালের ৭ মে তিনি পুনরায় দেশে ফিরে আসেন। এই দুই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ‘শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন’ শীর্ষক গ্রন্থ রচনা করেছেন সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক সুভাষ সিংহ রায়। বইটি প্রকাশ করেছে প্রকাশনা সংস্থা অনন্যা। সোমবার সকালে রাজধানীর শাহবাগস্থ পাঠক সমাবেশ কেন্দ্রে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। বইটি নিয়ে আলোচনা করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক হারুন অর রশিদ, ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, চিত্রশিল্পী হাশেম খান ও কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এইচ টি ইমাম বলেন, অনেক গবেষণা ও তথ্যের ভিত্তিতে গ্রন্থটি লিখেছেন সুভাষ সিংহ রায়। ৭ ও ১৭ মে শেখ হাসিনার এই দুই স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিষয়ে গ্রন্থটিতে তিনি চমৎকার কিছু প্রবন্ধ লিখেছেন। এই গ্রন্থের ‘শেখ হাসিনা জরুরী ছিলেন, জরুরী থাকবেন’ লেখাটি পড়ে আমার খুব ভাল লেগেছে। কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা দেশে না ফিরতে পারলে বাংলাদেশ হতো পাকিস্তান। তাঁর নেতৃত্বেই আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন করব। ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসার পর বঙ্গবন্ধুর মতোই সারাদেশ চষে বেড়িয়েছেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করতে তিনি প্রচ- পরিশ্রম করেছেন। আজ আমরা সেই সুফল ভোগ করছি। শামসুজ্জামান খান বলেন, বইটি পড়ে আমি অভিভূত হয়েছি। এ বইয়ের ভাষা খুবই গোছানো। লেখক তার লেখনী দক্ষতার মাধ্যমে শেখ হাসিনার জীবনদর্শনকে চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। গ্রন্থটির মাধ্যমে গবেষক ও রাজনীতিবিদের দৃষ্টিভঙ্গিতে শেখ হাসিনাকে জানা যায়। জাতির জনকের অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কোন বাঙালী তো নয়ই, উপমহাদেশের কোন রাজনৈতিক নেতারই এমন অর্জন নেই। হারুন অর রশিদ বলেন, শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বিষয়ে এর আগে কোন গ্রন্থ তেমনভাবে আমার চোখে পড়েনি। সেই বিবেচনায় এ বইটি খুবই মূল্যবান। এদেশের রাজনীতি, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের সম্পর্কে জানার জন্যও বইটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। শেখ হাসিনার দেশে ফিরে আসা শুধুই স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নয়, এটি মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশেরও প্রত্যাবর্তন। সেই সাঁইত্রিশ বছর ধরে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের পথ ধরে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু না হলে যেমন দেশ স্বাধীন হতো না, তেমনিভাবে শেখ হাসিনা না থাকলে স্বপ্নের বাংলাদেশেরও বিনির্মাণ হতো না। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর কাজটি তিনি করে যাচ্ছেন নিরলসভাবে। অনুভূতি ব্যক্ত করে বইটির লেখক সুভাষ সিংহ রায় বলেন, ১৯৮১ সালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেশে ফিরেছিলেন শেখ হাসিনা। তখন বিদেশের একটি পত্রিকার এক সাংবাদিক তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলÑ এতো ঝুঁকি নিয়ে কেন আপনি দেশে ফিরে যাচ্ছেন? উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধু কন্যা’। ওয়ান-ইলেভেন আমলে মাইনাস টু আসলে ছিল মাইনাস শেখ হাসিনা ফর্মুলা। কারণ শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের ৪৭ দিন পর খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এতেই শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার বিষয়টি অনেকখানি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ২১৫ পৃষ্ঠার বইটির প্রচ্ছদ বিন্যাস করেছেন মানিক সরকার। বইটির মূল্য রাখা হয়েছে ৩৫০ টাকা। মুক্তিযুদ্ধে নারীর ভূমিকা বিষয়ক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে নারীর ভূমিকা নিয়ে অধ্যাপক সেলিমা চৌধুরী রচনা করেছেন গবেষণা গ্রন্থ ‘উইমেন ইন বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়ার রিডিসকভারিং ইন ম্যাডোনা সিরিজ’। সোমবার জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে গ্রন্থটির প্রকাশনা অনুষ্ঠান হয় । এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। চিত্রশিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প-সমালোচক মোস্তফা জামান। আরও বক্তব্য রাখেন বইটির লেখক অধ্যাপক সেলিমা চৌধুরী ও জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী।
×