স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ এসএসসি পরীক্ষায় গত সাত বছরের মধ্যে এবার তুলনামূলক খারাপ ফল করেও সবকটি বোর্ডের চেয়ে এগিয়ে থেকে দেশ সেরার গৌরব অক্ষুণœœ রেখেছে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড। এ বোর্ডে এবার পাসের হার ৮৬ দশমিক ০৭ শতাংশ। পাসের এই হার ২০১২ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে সর্বনিম্ন। তবে এবার টানা দ্বিতীয়বারের মতো সর্বোচ্চ পাসের হারে দেশসেরা হলো রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড।
গতবছর এই শিক্ষা বোর্ডর পাসের হার ছিল ৯০ দশমিক ৭০ শতাংশ। ফলে পাসের হার কমেছে ৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ। তবে পাসের হার কমলেও এবার বেড়েছে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা। এ বছর রাজশাহী বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৯ হাজার ৪৯৮ জন। গতবছর জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১৭ হাজার ৩৪৯ শিক্ষার্থী। গতবারের চেয়ে এবার ২ হাজার ১৪৯ জন বেশি শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
এবার জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১০ হাজার ১৮ ছাত্র ও ৯ হাজার ৪৮০ ছাত্রী রয়েছে। রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সচিব প্রফেসর তরুণ কুমার সরকার রবিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য প্রকাশ করেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এক বছরের ব্যবধানে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার্থী বেড়েছে ২৭ হাজার ২১১ জন। এ বছর রাজশাহী বোর্ডের অধীনে বিভাগের আট জেলা থেকে অংশ নেয় এক লাখ ৯৪ হাজার ৫৪৩ পরীক্ষার্থী। গতবছর ছিল এক লাখ ৬৭ হাজার ৩৩২ পরীক্ষার্থী। রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে এবার এসএসসি পরীক্ষার্থীর মধ্যে এক লাখ ৯৮৫ ছেলে ও ৯৩ হাজার ৫৫৮ মেয়ে পরীক্ষার্থী ছিল। এ বছর বোর্ডে প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী ছিল ২৯ জন। দু’জন ছাড়া পাস করেছে সবাই। কারাভ্যন্তরে থেকেও পরীক্ষা দিয়েছিল চারজন। তবে এদের মধ্যে তিনজনই ফেল করেছে। পাস করেছে শুধু নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার মাধবাড়ীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী রিপন আলী।
এবার রাজশাহী বোর্ডে মোট ২৪৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। বহিষ্কৃত হয় ৪১ পরীক্ষার্থী। গতবছর এর সংখ্যা ছিল ১৩ জন। এবার মোট স্কুলের সংখ্যা ছিল দুই হাজার ৬৪৩টি। বোর্ডের একটি স্কুলে কোন পরীক্ষার্থীই পাস করেনি। বগুড়া সদরে অবস্থিত দারুল ইসলাম নৈশ উচ্চ বিদ্যালয় নামের এই স্কুলটিতে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১০ জন।
রাজশাহী বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আনারুল হক প্রামাণিক বলেন, এবার ফেল করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৭ হাজার ৯১০ জন। ছাত্র এবং ছাত্রী- উভয়েরই পাসের হার কমেছে। গত বছরের তুলনায় কমেছে শতভাগ পাস করা স্কুলের সংখ্যাও। এবার এমন স্কুলের সংখ্যা ২০৬টি। অভিন্ন প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা গ্রহণ এবং মূল্যায়ন পদ্ধতিতে কড়াকড়ির কারণে বোর্ডের ফলাফলে প্রভাব পড়েছে। তিনি বলেন, ‘ফল নির্ভর করে পরীক্ষার্থীদের ওপর। তারা যেমন পরীক্ষা দিয়েছে, ফলাফল তেমনই হয়েছে। সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক খাতা মূল্যায়নে এবার একটা আদর্শ মান ধরে রাখা হয়েছিল। এই ফলাফল নিয়ে আমরা খুশি নই, দুঃখিত। ভবিষ্যতে আমরা সচেতন থাকব।’
শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায় অকৃতকার্য হয়েছে তুলনামূলক অনেকাংশে কম শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অকৃতকার্য হয়েছে গণিতে। এছাড়া বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়েও অকৃতকার্য হয়েছে শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: