ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সামিহা রহমান

নিজের সঙ্গী নিজেই...

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ৭ মে ২০১৮

 নিজের সঙ্গী নিজেই...

সম্পর্কে জড়ালে মাঝে মধ্যে একটু-আধটু ঝুট-ঝামেলা পোহাতে হয়। এ কারণেই হয়ত অনেকেই সিঙ্গেল তথা একাকী থাকতে পছন্দ করেন। কিন্তু এমন অনেকেই আছেন যাদের কাছে একাকী থাকা আমেজহীন বা বিরক্তিকর লাগে। তবে একাকী থাকার কিন্তু বেশকিছু সুবিধাও রয়েছে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, একাকী থাকার প্রভাব সব থেকে বেশি পড়ে শরীরের ওপরেই। একজন সুস্থ ব্যক্তি সর্বাপেক্ষা সুখী থাকেন একাকী অবস্থায়। চলুন জেনে নিই একাকী থাকার সুবিধাগুলো। অগণিত সমর্থক একাকী ব্যক্তিরা নিজেদের বন্ধুদের খুব সন্নিকটে রাখতে ভালবাসেন। এতে তাদের সমর্থন করার জন্য মানুষের অভাবও পড়ে না। যদিও যুগলদের জন্যও একজন সমর্থকের প্রয়োজন। যিনি সর্বদা অনুপ্রাণিত করবে সব কাজে। ২০১৫ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, একাকী ব্যক্তিদের কেবল ঘনিষ্ঠ বন্ধুই থাকে না। বরং পরিবারের সঙ্গেও অধিকতর ঘনিষ্ঠতায় আবদ্ধ থাকেন। অর্থের সঞ্চয় একাকী ব্যক্তি বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে অর্থ ব্যয় করে থাকেন। অর্থাৎ একা থাকার কারণে একজন সামাজিক ও আর্থিক উভয় দিক দিয়েই স্বাধীন। একাকী ব্যক্তিদের ঋণের মাত্রা যেখানে ২১%, সেখানে বিবাহিতদের ঋণ করার মাত্রা ২৭%। আর অধিক ঋণগ্রস্ত হওয়া মানেই মানসিক ও শারীরিক চাপ। যা হৃদরোগের মূল কারণ। পর্যাপ্ত ঘুম সম্প্রতি এক গবেষণার জন্য কয়েকজন বিবাহিত ও অবিবাহিতদের নিয়ে একটি পর্যবেক্ষণ করা হয়। সেখানে যেখা যায়, যুগলদের অপেক্ষা পর্যাপ্ত ঘুমোতে পারেন অবিবাহিতরা। এতে তারা গুরুত্বের সঙ্গে কাজে মনোযোগ দিতে পারেন। এমনকি তাদের মন-মানসিকতার ওপর এর প্রভাব পড়ছে বেশ ভাল। ফলাফল সুস্বাস্থ্য। কাজের প্রতি ঝোঁক গবেষণায় দেখা যায়, স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন ব্যক্তিদের মধ্যে একাকীরা সবচেয়ে এগিয়ে। জিমে তাদের সংখ্যা যুগলদের তুলনায় অপেক্ষাকৃত বেশি। যেখানে অবিবাহিত পুরুষেরা দিনে শারীরিক ব্যায়াম করে দিনে দুবার। সেখানে বিবাহিতরা শারীরিক কসরত করেন দিনে একবার। নিজের মতো করে রুটিন তৈরি যুগলদের ক্ষেত্রে নিজের পাশাপাশি অন্যদের জন্যও সময়সূচী তৈরি করতে হয়। কোথাও অনুষ্ঠানে যাওয়া কিংবা পরিবারে কলহ থেকে দূরে থাকতে হলেও পরস্পরকে সময় দিতে হয়। তবে একাকী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ভিন্ন। তারা নিজেদের মতো করে সময়সূচী তৈরি করে নিতে পারেন। নিজের সমস্যার সমাধান একাকী থাকা ব্যক্তির পক্ষে নিজের সমস্যা নিজেই সমাধান করা সম্ভব। এতে আপনাকে আর অন্যের ওপর নির্ভরশীল হতে হবে না। ফলে খুব সহজেই নিজের সমস্যা সমাধান করতে পারবেন। আকস্মিক কোন বিপদের মুখোমুখি হলে একাকী ব্যক্তিরা খুব সহজেই তা সমাধান করার একটা উপায় বের করেন ফেলেন। তারা জানেন কীভাবে শান্ত থেকে পরিস্থিতি নাগালে রাখা সম্ভব। কাজে সময় কম লাগে গবেষণায় দেখা গেছে, যুগলদের তুলনায় একাকী থাকা ব্যক্তি অধিক কাজ করতে পারেন। এমনকি একা হওয়ার কারণে অল্প সময়ে যে কোন কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব। এতে অবসর সময়ে বন্ধুদের সঙ্গে ঘোরাফেরার পাশাপাশি নিজেকেও সময় দেয়া সম্ভব। এতে মানসিক বিপর্যয় অনেকটাই কমে যায়। অনেক বেশি সুখী বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, বিয়ের আগে নারীরা যে পরিমাণ হাসিখুশি জীবনযাপন করতে পারে, বিয়ের পর তা অনেক কমে যায়। এ ক্ষেত্রে পুরুষেরা পিছিয়ে নয়। অন্য এক গবেষণায় দেখা যায়, বিয়ের পর পুরুষদের সুখের মাত্রা নারীদের তুলনায় অনেক বেশি। তবে একাকী থাকা অবস্থায় তারা আরও বেশি স্বাচ্ছন্দ্যে থাকেন।
×