ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

বাস্তুহারা জীবনের আখ্যান ‘দ্য লোয়ার ডেপথস’

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ৭ মে ২০১৮

বাস্তুহারা জীবনের আখ্যান ‘দ্য লোয়ার ডেপথস’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশের মাঝে ঘিঞ্জি এক কক্ষ। সূর্যের আলো পৌঁছতে না পারা সেই রুমে একদল যাযাবরের বসবাস। ছন্নছাড়া ওই মানুষগুলোর মাঝে আছে চোর, জুয়াড়ি, ব্যর্থ অভিনেতা ও শ্রমিক থেকে বারবণিতা। কঠিন পৃথিবীর নির্মমতা তাদের পরিণত করেছে ব্যর্থ মানুষে। ধাবিত করেছে অন্ধকারের জীবনে। সেই সব বাস্তুহারা ও রাষ্ট্রহারা শ্রমজীবী মানুষের মুক্তির বার্তাবহ নাটক দ্য লোয়ার ডেপথস। মহান মে দিবস উপলক্ষে প্রযোজনাটি মঞ্চে এনেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এ্যান্ড পারফর্মেন্স স্টাডিজ বিভাগ। রুশ লেখক ম্যাক্সিম গোর্কি রচিত নাটকটির অনুবাদ করেছেন তানভীর মোকাম্মেল। নির্দেশনা দিয়েছেন তানভীর নাহিদ খান। রবিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটম-লে নাটকটির প্রেস শো অনুষ্ঠিত। আজ সোমবার থেকে আগামী ১১ মে পর্যন্ত প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় একই ভেন্যুতে দর্শনার্থীদের জন্য মঞ্চস্থ হবে নাটকটি। নাটকের মঞ্চসজ্জা থেকে আলোকসজ্জা-সব কিছুতেই রয়েছে পরিমিতিবোধ। সেই সঙ্গে অভিনয়শিল্পীদের অনবদ্য অভিনয়ে প্রযোজনাটি হয়ে উঠেছে দারুণ উপভোগ্য। নাটকটির কাহিনীতে উঠে আসা ছোট্ট কক্ষটিতে পৌঁছে না স্বাভাবিক সূর্যলোক ও নির্মল বাতাস। মাটির তলার ওই ঘরটি যেন একটি এক কুয়ার তলা। সেখানে আশ্রয় নিয়েছে কিছু ছন্নছাড়া মানুষ। যার মধ্যে কেউ চোর, কেউবা জুয়ারি, একজন ব্যর্থ অভিনেতা তো অন্যজন অভিজাত বংশোদ্ভূত যে কিনা হারিয়েছে তার গৌরব, কিংবা অন্যজন বারবণিতা। আছে তালার মিস্ত্রি, শ্রমিক, পশম ব্যবসায়ী থেকে মুচি। এদের সকলেরই এক সময় বেঁচে থাকার আশা ছিল, স্বপ্ন ছিল এবং ছিল জীবনের লক্ষ্য। কিন্তু সদিচ্ছার অভাব, কঠিন পৃথিবীতে জীবনযাপনের নির্মম কষাঘাত ওদেরকে বারবার ঠেলে দিয়েছে অন্ধকারে। ওরা যেন মানুষ হিসেবে হারিয়েছে পরিচয়, যেন অচ্ছুত অন্ধকারের প্রাণী। সে অন্ধকার জীবনেও আছে প্রেম আছে মানব-মানবীর চিরাচরিত সম্পর্কের প্রকাশ। তাই নাতাশার মতো এক তরুণীকে স্বপ্ন দেখতে শেখাতে চায় পেপেল নামের এক যুবক। এই অন্ধকার কুঠুরির বাসিন্দা পেপেল পেশায় একজন চোর। তালার মিস্ত্রির স্ত্রী আন্নার অসুস্থতা এই অন্ধকার কুঠুরির কাউকে বিচলিত না করে বরং বিরক্তির কারণ ঘটায়। এখানে জীবন ও মৃত্যুও ব্যবধান এতই ক্ষীণ যে একদিন আন্নার মৃত্যুও কাউকে তেমনভাবে স্পর্শ করে না। একদিন ওই কুঠুরিতে লুকা নামের এক ভবঘুরে বৃদ্ধের আগমন ঘটে। যার কাছে এই দুনিয়াটা একটা সরাইখানা। ভবঘুরে বৃদ্ধটির পরিচয় শেষ অবধি অনুন্মোচিত থাকলেও সে ওই কুঠুরিতে মানুষের ভেতরের থাকা মেধার কথা এবং মানুষের প্রতি মানুষের ভালবাসা ও মর্যাদার কথা বলে ক্ষণিকের জন্য হলেও আলো জ্বালিয়ে দেয়। শেষ পর্যন্ত এই কুঠুরির মালিক কস্তিলভের খুন হয়ে যাওয়া ক্ষণিকের জন্মানো আশাকে পরিণত করে দুরাশায়। লুকাও আলেয়ার মতো হারিয়ে যায়। অভিনেতার আত্মহত্যা এদের সামান্য দুঃখ ভুলে থাকার চেষ্টাকেও লুপ্ত করে দেয়। এভাবেই ওই অন্ধকার কুঠুরিতে জীবনই হয়ে ওঠে জীবনের প্রতিপক্ষ । রবীন্দ্রজয়ন্তীতে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে রবীন্দ্রমেলা ॥ বিগত এক যুগের ধারাবাহিকতায় এবারও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীতে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে রবীন্দ্রমেলা। পঁচিশে বৈশাখের ওই মেলায় রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী অথবা রবীন্দ্র গবেষণায় বিশেষ অবদানের জন্য একজনকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হবে। মেলা শুরু হবে কাল মঙ্গলবার বিকেল ৩টায়। উদ্বোধন করবেন রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ, শিল্পী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাহিত্যিকরা। এবারের মেলার প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে হয়েছে ইগলু। রবিবার চ্যানেল আই ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। মেলার বিস্তারিত তুলে ধরেন চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ। রবীন্দ্রনাথের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান ও রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী তপন মাহমুদ। আরও উপস্থিত ছিলেন ইগলু’র প্রধান নির্বাহী জি এম কামরুল হাসান। শামসুজ্জামান খান বলেন, রবীন্দ্রনাথ এক বিস্ময়কর পৃথিবী। তাকে এখনও পুরো আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। রবীন্দ্রসঙ্গীত চর্চায় বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও রবীন্দ্র গবেষণায় বাংলাদেশ মানের দিক দিয়ে পিছিয়ে আছে। কেনিয়ার সাহিত্যিক এনগুগি ওয়াথিয়োংয়ের জন্মদিনের আলোচনা ॥ বিশ^সাহিত্য ও সংস্কৃতির পুরোধা ব্যক্তিত্ব কেনিয়ার সাহিত্যিক এনগুগি ওয়াথিয়োং। রবিবার এই কথাশিল্পীর ৮০তম জন্মবার্ষিকী স্মরণে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন আফ্রিকী সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকটার থিয়েটার ভবনের সিরাজুল ইসলাম লেখচার হলে এনগুগির জীবন ও কর্ম নিয়ে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বক্তারা বলেন পরাধীন দেশে স্বাধীনতার জন্য যারা লড়াই করে তাদের যেমন সন্ত্রাসবাদ বলে আখ্যায়িত করা হয় তেমনি স্বাধীন দেশেও যারা অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই করে তাদেরও সন্ত্রাসবাদী হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়। ঔপনিবেশিকতার হাত থেকে মুক্তি মিললেও মানুষের মুক্তি মেলেনি, দেশগুলোও এখনও স্বাধীনতা লাভ করেনি। ঔপনিবেশিকতা না থাকলেও বৈশি^ক রাজনীতির দ্বারা উপনিবেশমুক্ত দেশগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এমনকি স্বাধীন দেশের শাসকরাও ঔপনিবেশক শাসকদের মতো আচরণ করে। পূর্ব আফ্রিকার সাহিত্যিক এনগুগি ওয়াথিয়োং এই সত্য উচ্চারণ করেছিলেন।
×