ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

৩ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্প অনুমোদনের জন্য চূড়ান্ত হয়েছে ভারতের দ্বিতীয় এলওসি থেকে পাওয়া যাবে ;###;২ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা

খুলনা-দর্শনা রেলপথ ॥ ডাবল লাইন হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:১৪, ৭ মে ২০১৮

খুলনা-দর্শনা রেলপথ ॥ ডাবল লাইন হচ্ছে

আনোয়ার রোজেন ॥ খুলনা-ঢাকা রেল রুটের দর্শনা পর্যন্ত ডাবল লাইন নির্মাণের উদ্যোগ অবশেষে আলোর মুখ দেখছে। বর্তমান সিঙ্গেল লাইনের কারণে দুটি ট্রেন চলাচলে দীর্ঘসময় লাগে। তাই ডাবল লাইন নির্মাণ হলে কমবে সেই দুর্ভোগ, বাঁচবে সময়-এমনটাই আশা সংশ্লিষ্টদের। প্রকল্পের আওতায় খুলনা থেকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা পর্যন্ত ১২৬ কিলোমিটার রেলপথ ডাবল লাইনে উন্নীত করা হবে। ৩ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের এ বিষয়ে বছরখানেক আগে পাঠানো একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশন। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হতে পারে। একনেক সভার টেবিলে উত্থাপনের জন্য যে কটি প্রকল্পের প্রাথমিক তালিকা করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে শুরুতেই এ প্রকল্পটি রয়েছে বলে পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে। সূত্র আরও জানায়, ভারত সরকারের প্রতিশ্রুত দ্বিতীয় লাইন অব ক্রেডিটের অর্থায়নে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। আগামী ৫ বছরে প্রকল্পের কাজ শেষ করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বর্তমানে ৩ হাজার ৮০১ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনা থেকে মংলাবন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প চলমান রয়েছে। খুলনা-ঢাকা রেলপথের দূরত্ব ৪১৩ কিলোমিটার। প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় খুলানা-দর্শনা ১২৬ দশমিক ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রডগেজ সেকশনে ডাবল লাইন রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ১৪ দশমিক ৪০ কিলোমিটার লুপ নতুন ব্রডগেজ রেললাইন নির্মাণ, একটি মেজর ও ৯টি মাইনর ব্রিজ, ১৩০টি আরসিসি বক্স কালভার্ট, সাতটি স্টেশন বিল্ডিং নির্মাণ, ৯টি স্টেশন বিল্ডিং পুনর্বাসন, ২৫টি প্লাটফর্র্ম নির্মাণ, বিদ্যমান ১২টি স্টেশনের প্লাটফর্ম পুনর্বাসন, ১৭টি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ এবং ১৮টি রেলওয়ে স্টেশনে সিবিআই ইন্টারলকিং সিগন্যালিং সিস্টেম স্থাপন করা হবে। পরিকল্পনা কমিশনের সূত্র জানায়, গত বছরের মার্চ মাসের শেষের দিকে এ বিষয়ে প্রকল্প যাচাই কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিব মোঃ ফিরোজ সালাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় খুলনা-দর্শনা জংশন সেকশনে ডাবল লাইন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পে ভারতের সহায়তা ধরা হয় ২ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। বাকি ৮২১ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সূত্র জানায়, ভারতীয় দ্বিতীয় এলওসির আওতায় খুলনা-দর্শনা জংশন সেকশনে ডাবল লাইন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পটি হাতে নেয় সরকার। ২০১৫ সালের জুন মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরকালে ২০০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার ঘোষণা দেন। এর আগেও ভারতের প্রথম লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) আওতায় রেলপথ মন্ত্রণালয় রেলওয়ের সংযোগ সড়কসহ দ্বিতীয় ভৈরব ও দ্বিতীয় তিতাস সেতু নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এ ঋণে কুলাউড়া থেকে শাহবাজপুর সেকশন পুনর্বাসন প্রকল্পও নেয় রেলপথ মন্ত্রণালয়। এছাড়া ভারতীয় ঋণে রেলওয়ের জন্য ২৬৪টি এমজি কোচ ও দুইটি বিজি ইন্সপেকশন কার সংগ্রহ প্রকল্পও হাতে নেয়া হয়। ৩ হাজার ৮০১ কোটি টাকা ব্যয়ে খুলনা থেকে মংলাবন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের কাজও চলমান। আশুগঞ্জ-আখাউড়া সেকশনের তিনটি স্টেশনের সিগন্যালিং ও ইন্টারলকিং ব্যবস্থার প্রতিস্থাপন ও আধুনিকীকরণ প্রকল্প রয়েছে। উল্লেখ্য, ভারতীয় ঋণে যে সব প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে বা বাস্তবায়নের পথে রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রেলওয়ের প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি সবচেয়ে মন্থর। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রেলের প্রকল্প সময়মতো বাস্তবায়ন করতে না পারলে দীর্ঘমেয়াদে সুফল পাওয়া যাবে না।
×