ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংকের গড় লভ্যাংশ কমেছে

প্রকাশিত: ০৫:১১, ৭ মে ২০১৮

ব্যাংকের গড় লভ্যাংশ কমেছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর মুনাফার সঙ্গে সঙ্গে আগের বছরের তুলনায় ২০১৭ সালে লভ্যাংশ ঘোষণার পরিমাণও কমেছে। এ বছরের ব্যবসায় তালিকাভুক্ত ৩০টি ব্যাংকের গড় লভ্যাংশ ঘোষণার পরিমাণ কমেছে ১.৮৪ শতাংশ। এছাড়া ব্যাংকগুলো আগের বছরের তুলনায় বোনাস শেয়ারে ঝ্ুেকছে। যেটাকে কোন লভ্যাংশ মনে করা হয় না। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। দেখা গেছে, ২০১৬ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩০ ব্যাংকের গড় লভ্যাংশ ঘোষণার পরিমাণ ছিল ১৬.৮৭ শতাংশ। তবে ২০১৭ সালের ব্যবসায় তা কমে এসেছে ১৫.০৩ শতাংশে। এক্ষেত্রে লভ্যাংশ ঘোষণার পরিমাণ কমেছে ১.৮৪ শতাংশ। ২০১৭ সালের ব্যবসায় সবচেয়ে বেশি লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের পর্ষদ। এ ব্যাংকটির পর্ষদ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ব্র্যাক ব্যাংকের পর্ষদ ২৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছে। এরপরে যৌথভাবে তৃতীয় স্থানে থাকা রূপালী ব্যাংক ও সিটি ব্যাংকের পর্ষদ ২৪ শতাংশ করে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। অধিকাংশ ব্যাংকের ইপিএসে পতন ॥ ব্যাংক খাতে এবার সবচেয়ে হতাশ করেছে এবি ব্যাংক। আগের বছর ১২.৫০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করা ব্যাংকটির পর্ষদ এবার শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মাধ্যমে এবি ব্যাংক আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের পরে দ্বিতীয় ব্যাংক হিসাবে সর্বনিম্ন ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে পতিত হয়েছে। ২০১৭ সালের লভ্যাংশ সঙ্গে আগের বছরের লভ্যাংশ তুলনায় এই তথ্য পাওয়া গেছে। জানা গেছে, চলতি বছরের প্রাইম ব্যাংক লভ্যাংশ দিয়েছে ৭% নগদ ও ১০% বোনাস লভ্যাংশ। যা গত ২০১৬ সালে ছিল ১৬% নগদ। প্রিমিয়ার ব্যাংক এই বছরে ১৫% বোনাস দিয়েছে। আগের বছরে ছিল ১০% নগদ ও ২% বোনাস, ব্যাংক এশিয়া দিয়েছে ১২.৫০% বোনাস, যা আগে ছিল ১২% বোনাস। ২০১৭ সালে রূপালী ব্যাংক দিয়েছে ২৪% বোনাস, আগে ছিল ১০% বোনাস, মার্কেন্টাইল ব্যাংক গতবছরে হিসাব পর্যালোচনা করে ১৭% নগদ ও ৫% বোনাস দিয়েছে ২০১৬ সালে যা ছিল ১৫% নগদ ও ৫% বোনাস। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ১২.৫০% বোনাস দিয়েছে ১৫% বোনাস দিয়েছিল আগের বছরে। ওয়ান ব্যাংকের লভ্যাংশ দিয়েছে ১৫% নগদ ও ৫% বোনাস, যা আগে ছিল ১৩% নগদ ও ১০% বোনাস। ব্র্যাক ব্যাংকের লভ্যাংশ দিয়েছে ২৫% বোনাস, ২০১৬ সালে এটি ছিল ১০% নগদ ও ২০% বোনাস। তালিকাভুক্ত যমুনা ব্যাংক ২২% বোনাস দিয়েছে, যা আগে ছিল ২০.৫০% নগদ। এছাড়া ন্যাশনাল ব্যাংকের লভ্যাংশ আগের তুলনায় কমেছে। এই ব্যাংকটি ২০১৭ সালে ১২% বোনাস দিয়েছে, আগে ছিল ২০% বোনাস। দি সিটি ব্যাংকের ১৯% নগদ ও ৫% বোনাস ঘোষণার কারণে আগের বছরের ২৪ শতাংশ বহাল রয়েছে। পূবালী ব্যাংক ১০% বোনাস দিয়েছে, আগে ছিল ৫% নগদ ও ৮% বোনাস, এনসিসি ব্যাংকের ১৩% নগদ আগে ছিল ১৬% নগদ, ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ৩০% নগদই বহাল রয়েছে। এক্সিম ব্যাংকের ১২.৫০% নগদ, আগে ছিল ১৫% নগদ, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ১০% বোনান দিয়েছে, যা আগে ছিল ১০% নগদ ও ৫% বোনাস এবং ইস্টার্ন ব্যাংক দিয়েছে ২০% নগদ, যা আগে ছিল ২০% নগদ ও ৫% বোনাস, ট্রাস্ট ব্যাংকের ২০% নগদ, যা আগে ছিল ১৫% নগদ ও ১০% বোনাস। স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ১০% বোনাস, যা আগে ছিল ৫% নগদ ও ৫% বোনাস এবং আইএফআইসি ব্যাংকের ১২% বোনাস, যা আগে ছিল ১২% বোনাস। ঢাকা ব্যাংকের ১২.৫০% বোনাস, যা আগে ছিল ১০% নগদ ও ৫% বোনাস। আল-আরাফাহ ব্যাংকের ১৫% নগদ ও ৫% বোনাস লভ্যাংশ প্রদান করা হয়েছে, যা আগে ছিল ২০% নগদ। সাউথইস্ট ব্যাংকের ১৫% বোনাস, যা আগে ছিল ২০% নগদ, উত্তরা ব্যাংকের ২০% নগদ লভ্যাংশ যা আগে ছিল ২০% নগদ। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের ১০% নগদের ফলে আগের তুলনায় ৫ শতাংশ লভ্যাংশ কমেছে। ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের ১০% বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে, যা আগে ছিল ৫% নগদ ও ৫% বোনাস, ইসলামী ব্যাংকের ১০% নগদের কারণে গত বছরেরর ১০% নগদই বহাল ছিল। স্যোশাল ইসলামী ব্যাংক ১০% বোনাস দিয়েছে। যা আগের বছরে ২০% নগদ দিয়েছিল ব্যাংকটি। এবি ব্যাংক এই বছরে কোন লভ্যাংশ প্রদান করেনি। আগের বছরে কোম্পানিটি ১২.৫০% বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল। এছাড়া আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক আগে মতোই নো ডিভিডেন্ট বহাল রেখেছে। সব কোম্পানির গড় লভ্যাংশ হিসেবে দেখা গেছে, গত বছরে ব্যাংকগুলো ১৫.০৩% লভ্যাংশ প্রদান করেছে, যা আগের বছরে ছিল ১৬.৮৭%। ২০১৬ সালে ৬টি ব্যাংকের পর্ষদ শুধু বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছিল। তবে ২০১৭ সালের ব্যবসায় ১৫টি ব্যাংক বোনাস শেয়ার ঘোষণা করেছে। আর আগের বছরে শুধু নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা ১২টি ব্যাংকের সংখ্যা এবার ৮টিতে নেমে এসেছে। দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড এ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) সভাপতি দেওয়ান নুরুল ইসলাম বলেন, প্রকৃতপক্ষে বোনাস শেয়ারে শেয়ারহোল্ডারদের কোন বেনিফিট নেই এবং এটি কোন লভ্যাংশ না। যে কারণে বিনিয়োগকারীরা সাধারণত নগদ লভ্যাংশ প্রত্যাশা করে। এদিকে ২০১৬ সালে ১১টি ব্যাংকের পর্ষদ উভয় (নগদ ও বোনাস) লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল। আর ২০১৭ সালের ব্যবসায় ৫টি ব্যাংক উভয় লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
×