ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

টেরেসা মের ওপর টোরি বিদ্রোহীদের চাপ বাড়ছে

একক বাজারে থাকতে চাই

প্রকাশিত: ০৪:৫৬, ৭ মে ২০১৮

একক বাজারে থাকতে চাই

ব্রিটেনে ক্ষমতাসীন টোরি (কনজারভেটিভ) দলের বিদ্রোহী সদস্যরা বলেছেন, ব্রেক্সিট ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে’কে একক বাজারে থাকতে চাপ দেয়ার মতো যথেষ্ট সংখ্যক এমপি তাদের সঙ্গে আছেন। তবে এক্ষেত্রে তাদের বিরোধী লেবার পার্টির সমর্থন লাগবে। লেবার পার্র্টিতেও অবশ্য বিষয়টি নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। ইন্ডিপেন্ডেন্ট। বিদ্রোহী টোরি এমপিরা মনে করেন, যুক্তরাজ্য যেন একক বাজারে থাকে সে লক্ষ্যে মে’কে চাপ দেয়ার মতো যথেষ্ট সামর্থ তাদের রয়েছে। দলটির পক্ষ থেকে ইন্ডিপেন্ডেন্টকে জানানো হয়েছে, লেবার পার্টির সমর্থন পেলে তারা ব্রেক্সিটের পরও একক ইউরোপীয় বাজারে ধরে রাখতে পারবে বলে আশাবাদী। এর জন্য লেবার পার্টির সঙ্গে তাদের যোগযোগ বাড়াতে হবে। লেবার নেতা জেরেমি করবিনসহ দলটির প্রথম সারির নেতারা অবশ্য এটি চান না। মঙ্গলবার হাউস অব লর্ডসে এ বিষয়ে আনা প্রস্তাব তারা প্রত্যাখ্যান করতে পারেন। এছাড়া কমন্স সভাতেও তারা এ নিয়ে ভোটাভুটির প্রস্তাব আটকে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী মে চান ইইউ থেকে বেরিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে একক বাজার থেকেও বেরিয়ে আসতে। তার এই পরিকল্পনা আটকে দেয়ার সুযোগ হাতে পেয়েও কেন সেটি কাজে লাগাননি সেজন্য করবিন এখন দলের মধ্যে সমালোচিত হচ্ছেন। টোরি বিদ্রোহী সদস্যরা যুক্তরাজ্যকে একক বাজারে রাখার যে পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে সেটি রুখে দেয়ার মতো কমন্স সভায় পর্যাপ্ত এমপি নেই, দলের চীফ হুইপ জুলিয়ান স্মিথ বিষয়টি মে’কে অবহিত করেছেন। টোরি বিদ্রোহী সদস্যরা এখন লেবার পার্টির সঙ্গে মিলে এমন পরিকল্পনা করছে যেন সরকার ইউরোপের সঙ্গে কাস্টম সম্পর্ক বজায় রাখে। তাদের লক্ষ্য ব্রেক্সিটের পরও যুক্তরাজ্য ইউরোপিয়ান ইকোনমিক এরিয়া (ইইএ) এবং ইউরোপিয়ান ফ্রি ট্রেড এ্যাসোসিয়েশনের (ইএফটিএ) মধ্যে থাকুক। এর ফলে একক বাজারের অংশ হিসেবে থাকার সুবিধা যুক্তরাজ্য পাবে। এখন পর্যন্ত এই ইস্যুতে টোরি দলের ১৫ সদস্য একসঙ্গে হয়েছেন। তারা মনে করেন যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক শক্তিমত্তা ধরে রাখতে এটি প্রয়োজন। গত বছর ডিসেম্বরে এ রকম একটি বিলের বিরোধিতা করলেও এখন পরিস্থিতি ভিন্ন বলে তারা বলছেন। একজন সিনিয়র টোরি নেতা বলছেন, বিলের ভাষা কি রকম হবে তার ওপর সবকিছু নির্ভর করছে। তিনি বলেন, ‘কাস্টোম ইউনিয়ন সংশোধনীর চেয়ে একক বাজার সংশোধনী বিল পাস করানো কঠিন হবে। কারণ পার্টির একক বাজার ত্যাগ করার কথা পরিষ্কারভাবে বলা আছে। তবে দলের মধ্যে বিদ্রোহী বা একক বাজার সমর্থনকারীর সংখ্যা এখন বাড়ছে। এ রকম একজন এমপি ইন্ডিপেন্ডেন্টকে বলেন, ডিসেম্বরে আমরা সংখ্যায় যতজন ছিলাম এখন তা বেড়েছে। সাবেক মন্ত্রী এবং বর্তমানে ফাদার অব দ্য হাউস অব কমন্স কেন ক্লার্ক একক বাজারে থাকার বিষয়টি সমর্থন করেছেন। তার সঙ্গে আরও আছেন আনা সব্রি, নিকি মর্গান, এ্যান্টোনিও স্যান্ডবাচ, জেরেমি লেফ্রোয়, পল মাস্টারটন এবং পল ম্যাস্টার্টনের কথা উল্লেখ করা যায়। তারা বলছেন, একক বাজারে থাকলে যুক্তরাজ্য তখন অভিবাসী আসার ওপর আরও নিয়ন্ত্রণ আরোপের সুযোগ পাবে। এর আগে লর্ডস সভায় সরকারের কস্টম ইউনিয়ন বিলটি পাস হতে পারেনি। টোরিরা এখন চাচ্ছে করবিন তাদের সঙ্গে হাত মিলাক। একক বাজারের বিষয়ে মঙ্গলবার লর্ডস সভায় যে বিলটি পাস হওয়ার কথা কোন কারণে তা ব্যর্থ হলে টোরি বিদ্রোহীরা তাদের নিজস্ব পরিকল্পনা নিয়ে এগোবেন বলে জানিয়েছেন। বর্তমানে নরওয়ে, আইসল্যান্ড এবং লিয়েখটেনস্টিয়েন ইইউর সদস্য না হলেও ইউরোপীয় একক বাজারের সদস্য। অন্যদিকে তুরস্ক ইইউর সদস্য না হলেও কাস্টম ইউনিয়নের সদস্য।
×