ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আমতলীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ ॥ মিলছে না স্যালাইন

প্রকাশিত: ০৭:৩৯, ৬ মে ২০১৮

আমতলীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ ॥ মিলছে না স্যালাইন

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা, ৫ মে ॥ আমতলী উপজেলায় ডায়রিয়া দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। গত এক সপ্তাহে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫০ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে বিভিন্ন গ্রামে তিন শতাধিকের বেশি আক্রান্ত হয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। হাসপাতালে কলেরা, খাবার স্যালাইন ও এ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশনের সঙ্কট থাকায় রোগীদের দেয়া হচ্ছে না। রোগীর স্বজনদের বাইরে থেকে উচ্চমূল্যে ওষুধ কিনতে হচ্ছে। জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৫০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। উপজেলার সদর ইউনিয়ন, চাওড়া, হলদিয়া, কুকুয়া, তালতলীর পচাকোড়ালিয়া, ছোটবগী, বড়বগী ইউনিয়নে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি। হাসপাতালের জরুরী বিভাগ ও পরিসংখ্যান বিভাগের আক্রান্তের সংখ্যায় গড়মিল রয়েছে। সরকারীভাবে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ জন হলেও বেসরকারীভাবে আক্রান্তের সংখ্যা তিন শতাধিকের বেশি বলে স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ রোগী স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎককের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালে কলেরা, খাবার স্যালাইন ও এ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশনের সঙ্কট থাকায় রোগীদের দেয়া হচ্ছে না। রোগীর স্বজনদের বাইরে থেকে উচ্চমূল্যে ওষুধ কিনতে হচ্ছে। এদিকে হাসপাতালে একজন চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসাসেবা দেয়ায় ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা কার্যক্রম। শনিবার আমতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা গেছে, শিশু ও বয়স্করা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেডে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ডায়রিয়ার ওয়ার্ডে বেডের সঙ্কট থাকায় রোগীদের হাসপাতালের বারান্দায় থাকতে হচ্ছে। রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতাল থেকে কোন ওষুধ সরবরাহ করছে না। বাইরে থেকে ওষুধ কিনে আনতে হচ্ছে। আমতলী পৌর শহরের ছুরিকাটা গ্রামের দৌলত খান জানান, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তিন দিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি, কিন্তু হাসপাতাল থেকে কোন ওষুধ দিচ্ছে না। সকল ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। পচাকোড়ালিয় গ্রামের রহিমন ও তহমিনা জানান, চার দিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি। কোন ওষুধ পাইনি।শিশু জান্নাতির মা নিলুফা বলেন, বাচ্চা তিন দিন ধরে ডায়রিয়ায় ভুগছে। হাসপাতাল থেকে কিছুই দিচ্ছে না। খাবার স্যালাইনও বাইরে থেকে কিনতে হয়। একই কথা জানান, বেতমোড় গ্রামের ইমাম হোসেন ও আফরোজার স্বজনরা। নাচনাপাড়া গ্রামের মোশাররফ গাজী জানান, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এসেছি। দুটি খাবার স্যালাইন ছাড়া আর কিছুই দেয়নি।আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ শাহাদাত হোসেন স্যালাইন ও এ্যান্টিবায়োটিক সঙ্কটের কথা স্বীকার করে বলেন, আবহাওয়া জনিত, অপরিষ্কার,অপরিছন্ন খাবার ও পুষ্টিহীনতার কারণে এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।
×